
ইরানের পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলের ভূগর্ভস্থ বাংকারগুলো ভেঙে পড়তে শুরু করেছে। যেসব বাংকারকে ইসরায়েলিরা সবচেয়ে নিরাপদ আশ্রয় মনে করতেন, সেগুলোই এখন আতঙ্কের ফাঁদে পরিণত হচ্ছে। মাথার ওপর ছাদ ধসে পড়ছে, দেয়াল চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে যাচ্ছে—ভূগর্ভেও আর নিরাপদ নন সাধারণ মানুষ।
গত শুক্রবার (১৩ জুন) রাত থেকে ইসরায়েল ইরানে সামরিক হামলা চালানোর পর থেকে শুরু হয় তেহরানের প্রতিশোধ। এরপর থেকে টানা পাঁচ দিন ধরে ইরান ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ছে তেল আবিব, হাইফা, নাতানিয়া এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায়। প্রতিটি হামলার সময় সাইরেন বেজে উঠছে, এবং লোকজন বাংকারে আশ্রয় নিচ্ছেন। কিন্তু এবার সেই বাংকারও দিচ্ছে না রক্ষা।
ইসরায়েলিরা নিজেরাই মোবাইলে ধারণ করে ছড়িয়ে দিয়েছেন সেই ভয়ঙ্কর দৃশ্য, ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর একাধিক বাংকারে দেখা গেছে ধসে পড়া ছাদ, আতঙ্কে চিৎকাররত নারী-শিশু আর ধোঁয়ার মধ্যে হাঁসফাঁস করতে থাকা সাধারণ মানুষ। কারও হাতে পানি নেই, কারও মুখে ধুলো-মাটি; একে অপরকে টানতে গিয়ে পড়ে যাচ্ছেন নিচে।
ইরান আগেই সতর্ক করেছিল, “বাংকার আপনাদের রক্ষা করবে না।” ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর মুখপাত্র কর্নেল রেজা সাইয়াদ এক বিবৃতিতে বলেন, “দখলীকৃত অঞ্চল ছেড়ে চলে যান। বাংকারে আশ্রয় নিলেই প্রাণ রক্ষা হবে—এই ভ্রান্ত ধারণা ত্যাগ করুন।” ইসরায়েল সরকারকে উদ্দেশ করে তাঁর মন্তব্য, “মানবঢাল তৈরি করে সাধারণ মানুষকে ব্যবহার করা বন্ধ করুন।”
ইসরায়েলের হোম ফ্রন্ট কমান্ড জানিয়েছে, ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় এখন পর্যন্ত ২৪ জন নিহত হয়েছেন, যাঁদের বেশির ভাগই আশ্রয়কেন্দ্রে ছিলেন না। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, যারা বাংকারেও ছিলেন, তারাও অনিরাপদ। হাইফা, তেল আবিব ও আশপাশের শহরগুলোতে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে।
হাইফার তেল পরিশোধনাগার বন্ধ, তেল আবিবের বহু পরিবার শহর ছাড়তে শুরু করেছে। ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী আবারও হুঁশিয়ার করেছে—‘এখনও সময় আছে, শহর ছেড়ে যান।’