৭ কারণে খামেনীকে খ.তম করতে চায় ইস.রাইল

ই.হু.দীদের টার্গেট এখন ইরা.নের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়া.তুল্লা আলী খা.মেনী। তাঁকে হ.ত্যা করে ইরা.নে ইসলামী বি.প্লবের আদর্শে প্রতিষ্ঠিত রেজিম পরিবর্তন করতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন নেতা.নিয়াহু।
খামে.নীকে খ.তমের মাধ্যমে ইসলামী বিপ্লবে ক্ষমতাচ্যুত রেজা শাহ পাহলভীর পুত্র প্রিন্স রেজা পাহলাভিকে ক্ষমতায় বসানোর ছক কষছে জায়.নবাদীরা।
ইস.রায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনি.য়ামিন নেতা.নিয়াহু কোন রাখঢাক ছাড়াই সরাসরি বলেছেন, আয়া.তুল্লাহ আলি খামে.নিকে ‘সরিয়ে দেওয়াই চলমান যুদ্ধের সবচেয়ে সহজ উপায়’ ।
গতকাল রাতে ইস.রায়েলের হামলায় ইরা.নের নবনিযুক্ত সেনাপ্রধান খামে.নির ঘনিষ্ঠজন আলী সাদ.মানিও শহীদ হয়েছেন। কমান্ডার হো.সেন সা.লামি এবং স.শস্ত্র বাহিনীর প্রধান মহম্মদ হোসেন বাগে.রির শাহাদতের পর আলী সাদ.মানিকে সেনাপ্রধান হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিল ইরান।
এভাবে একের পর এক সেনাপ্রধানকে হ.ত্যা এবং সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়া.তুল্লা আলী খামেনী হত্যার মাধ্যমে ইসলামী বিপ্লবে প্রতিষ্ঠিত শাসনব্যবস্থা খতম করে পলাতক রেজা.শাহ পাহ.লভীর বংশধরদের ক্ষমতায় বসাতে চায় ইস.রায়েল।
এর আগে ইরা.নের সেনাপ্রধান রেভ্যু.লেশনারী গার্ডর কমা.ন্ডার হোসেন সা.লামি এবং সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান মহ.ম্মদ হোসেন বাগে.রির মৃত্যুর পর শনিবারই শাদ.মানিকে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল থেকে মেজর জেনারেল পদে উন্নীত করা হয়েছিল। দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল সেনার ‘খ.তম আল-আম্বিয়া’ কেন্দ্রীয় সদর দফতরের নতুন প্রধান হিসাবে।
মধ্যপ্রাচ্যের ভূরাজনৈতিক অঙ্গনে ই.রান ও ইস.রায়েলের সংঘাত আজ আর শুধু সীমান্ত বা ধর্মীয় প্রশ্নে সীমাবদ্ধ নেই। এটি রূপ নিয়েছে গভীর আদর্শিক, কৌশলগত এবং অস্তিত্ব রক্ষার লড়াইয়ে।
ইস.রায়েলের দীর্ঘদিনের অবস্থান,ইরা.নের ইসলামিক রেজিম,বিশেষ করে সর্বোচ্চ নেতা আয়া.তুল্লাহ খামে.নির নেতৃত্বাধীন শাসনব্যবস্থা ইস.রায়েলের অস্তিত্বের জন্য একটি বিপর্যয়কর হুমকি।
ইস.রায়েল কেন ইরানে রেজিম চেইঞ্জ বা শাসনপদ্ধতির আমূল পরিবর্তন করতে চায় এবং তা কিভাবে আদর্শিক সং.ঘর্ষ, পারমাণবিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা এবং ভূরাজনীতির সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত; এসব বিশ্লেষণ করা হয়েছে এই প্রবন্ধে ।
প্রথমত: আদর্শিক সংঘাত: ইসলামিক বিপ্লব বনাম জায়.নবাদ
১৯৭৯ সালের ইসলামিক বি.প্লব ইরা.নকে একটি ধর্মভিত্তিক রাষ্ট্রে রূপান্তর করে দেয়, যার কেন্দ্রে রয়েছে “ইসলামি উম্মাহ” প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ইসরায়েলের অস্তিত্ব অস্বীকার করা হয়। খো.মেনি বলেন,ইস.রায়েল একটি কৃত্রিম রাষ্ট্র। এটি ইসলাম এবং মানবতার শত্রু। এই মতবাদকে আজো বহন করছেন আয়াতুল্লাহ খামেনি। তিনি প্রকাশ্যে বলেন, ফি.লি.স্তিন সম্পূর্ণ মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত ইস.রায়েলকে কোনোভাবেই বৈধতা দেওয়া যাবে না।
অন্যদিকে, ইস.রায়েল রাষ্ট্রটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ই.হুদি জাতীয়তাবাদ ও আত্মরক্ষার ভিত্তিতে। এই দুই মতবাদে কখনোই মিল সম্ভব নয়। এই আদর্শিক সংঘর্ষ রাজনৈতিক মতভেদের চেয়েও অনেক গভীর। কারণ এটি ধর্ম, জাতি, ইতিহাস ও অস্তিত্বের প্রশ্নে স্নায়ুযুদ্ধ থেকে সর্বাত্মক যু.দ্ধে গড়িয়েছে।
দ্বিতীয়ত : ইরানের ‘প্রক্সি-প্রতিরক্ষা বেষ্টনী’
ইস.রায়েল মনে করে, খামে.নির নেতৃত্বাধীন ইরা.ন সরাসরি আক্র.মণের বদলে একধরনের “প্রক্সি যু.দ্ধ” চালিয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে সবচেয়ে সুসংগঠিত বাহিনী হলো,লেবা.নের হিজ.বুল্লাহ, ফি.লিস্তীনের হা.মাস ও ইস.লামিক জি.হাদ,শিয়া মিলিশিয়া,হু.থি বিদ্রো.হী এই বাহিনীগুলোকে অর্থ, অস্ত্র ও প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে ইরা.নের ইসলামি রেভল্যুশ.নারি গার্ড কোর আই.আর.জি.সি।
এরা সকলেই ইস.রায়েল-বিরোধী ‘অক্ষ’ (Axis of Resistance)-এর অন্তর্ভুক্ত।
ইরা.নের এই পরোক্ষ কৌশলের পেছনের মাস্টারমাইন্ড খামে.নি নিজে। তাই ইস.রায়েলের ধারণা, খামে.নির রেজিম না সরালে এই ” ইরা.নের নিরাপত্তা বেষ্টনী” ভাঙা সম্ভব নয়।
তৃতীয়ত : পারমাণবিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা
ইরা.ন ২০০৩ সাল থেকে পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে আন্তর্জাতিক সন্দেহের কেন্দ্রবিন্দুতে। যদিও তারা দাবি করে এটি শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে, কিন্তু: ২০১৮ সালে ইস.রায়েল গোপনে ইরা.ন থেকে একটি পরমাণু নথিপত্রের বিশাল ভাণ্ডার চুরি করে, যাতে ইঙ্গিত ছিল গোপনে পারমাণবিক অস্ত্র উন্নয়নের। IAEA জানিয়েছে, ইরান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করছে ৬০% পর্যন্ত, যা বোমা তৈরির একধাপ আগের স্তর।
ইরা.নের পররাষ্ট্রনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে ইস.রায়েলের অস্তিত্ব অস্বীকার। পরমাণু বোমা এলে সে হুমকি বাস্তবায়নের মতো মারাত্মক হয়ে উঠবে। ইস.রায়েল বিশ্বাস করে,”A nuclear Iran under Khameini = Existential threat.”
এই বিশ্বাসের ভিত্তিতে ইস.রায়েল বহুবার বলেছে,যেকোনো মূল্যে ইরা.নকে পারমাণবিক শক্তিধর রাষ্ট্র হতে দেওয়া হবে না। এই “যেকোনো মূল্যে” বলতে খামে.নী রেজিম চেইঞ্জ অন্যতম বিকল্প।
চতুর্থ : সাইবার যুদ্ধ, গুপ্তচর ও সন্ত্রাসবিরোধী কৌশলে ইরানকে দমিয়ে রাখা
ইস.রায়েল এতোদিন সরাসরি যুদ্ধ ঘোষণা না করেই বহু বছর ধরে ইরানের বিরুদ্ধে গোপন ও সাইবার যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে। যেমন স্টাক্সনেট ভাইরাস (২০১০) দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ইস.রায়েলের যৌথ উদ্যোগে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় ভয়াবহ সাইবার আক্রমণ চালিয়েছিল। এতে ইরানের হাজারের বেশি সেন্ট্রিফিউজ নষ্ট হয়েছিল।
ইরা.নের পরমানু কর্মসূচিকে নস্যাত করে দেওয়ার এছাড়াও পরমাণু বিজ্ঞানীদের হত্যার মাধ্যমে ইরানকে দুর্বল করে রাখা। এজন্য এবারে শুরেুতেই ৬ জন পরমানু বিজ্ঞানীকে হত্যা করেছে ইস.রাইল।
সিরিয়ার ভেতরে ইরানি অস্ত্রগুদাম ও সাম.রিক সর.ঞ্জামে শতাধিক বিমান হামলা চালিয়েছে ইস.রা.য়েল সিরিয়ায় ইরানি ঘাঁটি ধ্বংস করে দিয়েছিল।
পঞ্চম : মধ্যপ্রাচ্যের ভূরাজনীতিতে ইরানের আধিপত্য খতম করা
খামেনির রেজিম শুধু ইসলামিক মতাদর্শ নয়, বরং মধ্যপ্রাচ্যের ভূরাজনীতিতে একচ্ছত্র আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করতে চায়।
এজন্য ইরানের লক্ষ্য হচ্ছে, শিয়া সরকার ও মিলিশিয়া দ্বারা ইরাককে নিয়ন্ত্রন করা। সিরিয়ায় আসাদ সরকারের মিত্রবাহিনী মিলিশিয়া ও আইআরজিসির ঘাঁটি স্থাপন করা। হিজবুল্লাহর মাধ্যমে কার্যত লেবাননের নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ এবং ইয়েমেনে হুথি বিদ্রোহীদের সমর্থনের মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে শিয়া ক্রিসেন্ট গড়ে তোলা।
এই “শিয়া ক্রিসেন্ট” যদি পূর্ণতা পায়, তাহলে ইস.রায়েল এক গভীর কৌশলগত বলয়ের মাঝে পড়ে যাবে।
তাই ইস.রাইল মনে করে, খামেনির পতন মানে শুধু ইরান নয়, বরং এই ‘শিয়া বলয়েরও ভাঙন সৃষ্টি হবে।
ষষ্ট : পশ্চিমা স্বার্থ
ইস.রায়েল একাই ইরা.নের রেজিম চেইঞ্জ করতে পারবে না। যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ এবং আরব দেশগুলোর সমর্থন থাকলে সেই প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত হয়। নেতা.নিয়াহু এখন এসই চেষ্টিাই চালাচ্ছেন।
যুক্তরাষ্ট্র ২০০৩ সালে ইরাকে রেজিম চেইঞ্জ করেছে। ইরানের রেজিম চেইঞ্জের ক্ষেত্রেও মার্কনীদের নীতিগত সমর্থন আছে।
সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমীরাত তাদের দেশে শিয়া আধিপত্য ঠেকাতে ইস.রায়েলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়িয়েছে।
ইউরোপও মানবাধিকার লঙ্ঘন ও পরমাণু কর্মসূচির কারণে ইরানের ওপর অবরোধ চাপিয়ে রেখেছে।
এই ভূ-রাজনৈতিক জটিল সমীকরণ মেলানোর জন্যই ইস.রায়েল আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিসহ খামেনি-বিরোধী বিকল্প প্রশাসন প্রতিষ্ঠার সম্ভাবনা খুঁজছে।
সপ্তম : বিকল্প নেতৃত্ব, গণবিদ্রোহ ও অভ্যন্তরীণ দুর্বলতা
খা.মেনির সরকার সম্প্রতি অভ্যন্তরীণভাবে নানা সংকটে পড়ছে। যেমন-বহু অবরোধ ও দুর্নীতির কারণে অর্থনৈতিক অবস্থা দুর্বল হয়ে গেছে। পশ্চিমা প্ররোচণায় যুবসমাজ ও নারীদের মধ্যে গভীর অসন্তোষ দানা বেঁধেছে। মিডিয়া ক্যুর মাধ্যমে বিক্ষোভ দমনে নির্যাতনের অভিযোগ তোলা হয়েছে।
ইস.রায়েল চাইছে, ইরানের এইসব অভ্যন্তরীণ দুর্বলতা এবং অসন্তোষকে কাজে লাগিয়ে একটি বিকল্প প্রো-ওয়েস্টার্ন রেজিমের উত্থান ঘটানো।
এজন্য তাদের কৌশলে রয়েছে, ইরানি ডিসিডেন্টদের মিডিয়া সমর্থনে সামাজিক আন্দোলনের প্ররোচনা দান করা। মানবাধিকার ইস্যুতে বিশ্বজনমত গঠন করা এবং ‘গ্রীন রেভল্যুশন’ বা ‘ওম্যান-লাইফ-ফ্রিডম’-এর মতো আন্দোলনকে উৎসাহ দেওয়া।
ইস.রায়েলের এতোদিন এইসব “soft power tactics” এর মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদী রেজিম চেইঞ্জ নীতির বাস্তবায়ন ঘটচ্ছিল। কিন্তু এখন তারা দীর্ঘমেয়াদী রেজিম চেইঞ্জ নীতির পরিবর্তে শর্টটার্ম নীতিতে চলছে। যার কারণে আয়াতুল্লাহ খামেনীকে হ.ত্যার কোন বিকল্প খুঁজে পাচ্ছে না।
ইস.রায়েল চায় আয়া.তুল্লাহ খা.মেনির রেজিমের পতন, কারণ এই রেজিম ইস.রায়েলের অস্তিত্বকে আদর্শিকভাবে অস্বীকার করে। এই রেজিম পরমাণু অস্ত্র উন্নয়নের মাধ্যমে ইস.রায়েলের অস্তিত্বের জন্য ভয়ংকর হুমকি তৈরি করছে।
খা.মেনী রেজিম মধ্যপ্রাচ্যে প্রক্সি বাহিনীর মাধ্যমে কৌশলগত চক্র তৈরি করেছে। ইসরায়েলকে ঘিরে রেখেছে একটি শত্রুতাপূর্ণ বলয়ে। আন্তর্জাতিক শান্তি ও জ্বালানি নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকি সৃষ্টি করছে।
ইস.রায়ের মনে করে, আয়া.তুল্লা আলী খা.মেনীর রেজিম শুধু ইস.রায়েলের একার শত্রু নয়; বরং এটি একটি বিশ্বায়িত নিরাপত্তা সংকট, যেখানে আদর্শ, পারমাণবিক অস্ত্র এবং কৌশলগত ক্ষমতা একে অপরকে বিপর্যস্ত করছে।
ইস.রায়েল বিশ্বাস করতে বাধ্য হয়, খামেনির রেজিম যতদিন টিকে থাকবে, ততদিন ইস.রায়েল নিরাপদ নয়। তাই রেজিম চেইঞ্জ করা ইস.রায়েলের নিরাপত্তার জন্য এখন অপরিহার্য শর্ত।