চট্টগ্রামে পুলিশ পরিচয়ে চাঁদা দাবির অভিযোগ

রাশেদুল ইসলামঃ চট্টগ্রামে পুলিশ পরিচয়ে খোরশেদ নামে এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে চাঁদা দাবির অভিযোগ উঠেছে ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশের এসআই ওয়াহিদুর রহমানের বিরুদ্ধে।
টাকা না দেয়ায় ব্যবসায়ীর মুঠোফোনে নিজের ব্যক্তিগত নাম্বার থেকে মুঠোফোনে ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়ে হুমকিও দেয়া হয়।
তিনি লেখেন, “চোরে শোনে না সঠিক কাহিনী, তোকে দেখ কি করি, লাগলাম তোর পিছনে, ভালো কথার কাজ নাই। মিট করলিনা তো দেখ কি হয় সা..র পো।”
এছাড়া মুঠোফোনে কল দিয়ে টাকা দাবির কথোপকথনের অডিও রেকর্ডও রয়েছে অপরাধ বিচিত্রার হাতে। অডিও রেকর্ডে ব্যবসায়ীকে বারবার বলতে শোনা যায়, “আমি কেন আপনাকে টাকা দিব, আমি তো কোন অপরাধ করি নি। আপনি চাইলে আমার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারেন, কিন্তু টাকা দিব না।” উত্তরে ওই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, টাকা কেন দিবা সেটা না, তুমি তো দেখা করবা বলছিলা, এখন কি আমার সাথে চ্যালেঞ্জ এ যাচ্ছো?দেখা করার জন্য কাউকে পাঠাও। ”
পুলিশ কর্মকর্তার এ ধরণের হুমকিতে ভয় আর আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন ওই ব্যবসায়ী।
ব্যবসায়ী খোরশেদ আলম বলেন, ওই পুলিশ কর্মকর্তা খুলশী থানার এসআই পরিচয়ে বেশকয়েকদিন ধরে আমাকে ফোন করে টাকা দাবি করছেন। আমি তার নাম্বার ব্ল্যাকলিস্টে দেয়ার পরও তিনি বিভিন্ন নাম্বার থেকে ফোন করে মামলার ভয় দেখিয়ে টাকা দাবি করে যাচ্ছেন। আমি একজন ভাঙারি ব্যবসায়ী।আমার দোকানে নাকি চুরির মাল রয়েছে। তাই আমি বলেছি, আপনি দোকানে এসে যাচাই করে দেখুন আমি কোন অপরাধ করেছি কিনা। যদি অপরাধী হই তবে আমার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবেন।”
অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তা ওয়াহিদুর রহমানের বাড়ি গোপালগঞ্জ। তিনি চট্টগ্রাম ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশে কর্মরত ছিলেন। গত ৪ মে তাকে প্রশাসনিক কারণে ময়মনসিংহ শিল্প পুলিশে বদলী করা হয়। তবে কর্মস্থলে যোগ না দিয়ে তিনি চট্টগ্রামেই আছেন। ব্যবসায়ীকে ফোনে হুমকি দেয়ার কথা স্বীকার করে ক্ষমা প্রার্থনা করেন এই পুলিশ কর্মকর্তা। চাঁদা দাবির বিষয়ে জানতে চাইলে সাংবাদিকদের ক্যামেরা ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেন তিনি ।
ওয়াহিদুর রহমান বলেন, “একজন পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে আমি একটি তথ্য পেয়েছি তাই ফোন করে সেটি যাচাই করেছি। উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সেটি জানে না। আপনারা সাংবাদিকরা চোরের পক্ষ থেকে এসেছেন, আপনারা চোর। না হলে আমার কাছে কেন এসেছেন? ”
এসআই ওয়াহিদুর রহমানের এমন কর্মকান্ডে বিব্রত চট্টগ্রাম ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশের পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ। তিনি বলেন, তার অপেশাদারিত্ব আচরণের কারণে তাকে এর আগেও শাস্তি দেয়া হয়েছে। এছাড়া প্রশাসনিক কারণে ময়মনসিংহে শাস্তিমূলক বদলি করা হয়েছে। বর্তমানে তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির যে অভিযোগ আনা হয়েছে সেটি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এদিকে পুলিশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার এমন ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত ও কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে কর্তৃপক্ষের কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানিয়েছেন সচেতন মহল।