স্বাস্থ্য

এমট্যাবের মাধ্যমে মেডিকেল খাতের বদলি-বাণিজ্য: শীর্ষ নেতারা জড়িত

মেডিকেল খাতের বদলি এবং পদায়নে তদবির আর আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে সিন্ডিকেট গড়ে তোলার অভিযোগ উঠেছে বিএনপি-সমর্থিত মেডিকেল টেকনোলজিস্ট অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (এমট্যাব)-এর শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে। খোদ ঢাকা মেডিকেলের ক্যান্সার হাসপাতালের রেডিওথেরাপি বিভাগের কম্পিউটার কক্ষই এই তদবিরের কেন্দ্র বলে জানা যায়।

জানা যায়, স্বাধীনতা মেডিকেল টেকনোলজিস্ট পরিষদের সেক্রেটারি শাহ আলম খান পারভেজকে ঢাকায় সন্মানিত করার পাশাপাশি বঙ্গবন্ধু মেডিটেক পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক নুরুল আনোয়ার ফারুকিকে ঢাকা মেডিকেলে পদায়ন করে এমট্যাব সিনিয়র সহ-সভাপতি খাজা মাইনুদ্দিন মুঞ্জু। আর স্বামেপ-এর অর্থ সম্পাদক কামরুজ্জামানকে ঢাকায় বদলি করে আনেন এমট্যাব সাংগঠনিক সম্পাদক হাফিজুর রহমান।

এ ছাড়া এমট্যাব মহাসচিব বিপ্লবুজ্জামান বিপ্লব, যুগ্ম মহাসচিব দবিরউদ্দিন তুষার এবং যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদক নিয়াজ আকুঞ্জিসহ অনেক শীর্ষ নেতা তাদের পদমর্যাদা আর তদবির খাটিয়ে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে আত্মীয়-স্বজন এবং পছন্দের ব্যক্তিদের বদলি বা পদায়নে ভূমিকা রেখেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্ম লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আনিসুর রহমান ফিজিওথেরাপিস্টকে ঢাকায় পদায়ন করা হয়েছে এবং ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি সানোয়ার হোসেনকে জামালপুর মেডিকেল কলেজে বদলি করে আনা হয়েছে। এছাড়া নিয়মবহির্ভূতভাবে পদোন্নতি পেয়েছেন এমট্যাব নেতা আইনুল হক, হাফিজুর রহমান, কাজী মাসুম এবং আব্দুল বাকি শিশির।

বদলি তদবির এবং আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা হাতবদল হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। শুধু এমট্যাব প্রচার সম্পাদক কাজী মাসুমই একমাসে খরচ করেছেন ২০ লাখ টাকা।

মেডিকেল খাতের এই তদবির-বাণিজ্যে যুক্ত ব্যক্তিদের মধ্যে আছেন ঢাকা মেডিকেলের সাঈদ সিদ্দিকী, রুহুল আমিন, ডেন্টাল কলেজের এ কে মুসা লিটন, আই ই ডি সিআর-এর স্যানিটারি ইনস্পেক্টর হাবিব, আইপিএইচ-এর নিয়াজ আকুঞ্জিসহ অনেকেই।

শীর্ষ পর্যায়ের তদবিরে রয়েছেন ডেপুটি ডিরেক্টর (ড্যাব নেতা) নাসির উদ্দিন, অতিরিক্ত মহাপরিচালক (ড্যাব নেতা) রিজওয়ান এবং এমআইএস পরিচালক (ড্যাব নেতা) আশরাফিসহ একাধিক কর্মকর্তা। এছাড়া সহকারী পরিচালক ডা. মেহেদী, পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) ডা. মাহবুব রেজানুর রঞ্জু এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক ডা. ফারুক হোসেন এই তদবিরের সঙ্গে যুক্ত বলে জানা যায়।

উর্ধ্বতন তদবিরে নাম এসেছে বিএনপির নির্বাহী সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার এবং ড্যাব নেতা অধ্যাপক ডা. রফিকুল ইসলাম শাকিল এবং ফরিদ উদ্দিনের।

সর্বমোট, এই চক্রটি ক্ষমতার অপব্যবহার করে আর্থিক লাভবান হচ্ছে এবং স্বাস্থ্য খাতের শৃঙ্খলা ধ্বংস করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এর ফলে ক্ষুব্ধ হয়েছে সাধারণ চিকিৎসা সেবা গ্রহণকারী এবং স্বাস্থ্য খাতের সৎ কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button