পাঁচ গোলের রোমাঞ্চে কোয়ালিফায়ারের পথে কিংস
টানা ছয় বছর ধরে শীর্ষ ফুটবলে রাজত্ব চলছে বসুন্ধরা কিংসের। টানা পাঁচবারের লীগ শিরোপার সঙ্গে তিনটি ফেডারেশন কাপ তিনটি স্বাধীনতা কাপের শিরোপা জেতা ক্লাবটিকে এই মৌসুমে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। তবে গতকাল ঘুরে দাঁড়িয়ে দারুণ এক জয় তুলে নিয়েছে বসুন্ধরা কিংস। বাংলাদেশ পুলিশ এফসির বিপক্ষে পাঁচ গোলের রোমাঞ্চ ছড়ানো ম্যাচ জিতে ফেডারেশন কাপের গ্রুপ পর্ব পেরুনোর সম্ভাবনা জোরালো করলো কিংস। বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় গতকাল ‘এ’ গ্রুপের ম্যাচে পুলিশকে ৩-২ গোলে হারায় বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। গ্রুপের অন্য ম্যাচে কুমিল্লার শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে ঢাকা ওয়ান্ডারার্সকে ৩-০ গোলে হারিয়েছে ফর্টিস এফসি। তিন ম্যাচে দুই জয় ও এক ড্রয়ে ৭ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলে শীর্ষে রয়েছে ফর্টিস। সমান ম্যাচে দ্বিতীয় জয়ে ৬ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসা কিংস জোরালো করেছে ফাইনালের কোয়ালিফিকেশন রাউন্ডে খেলা।
ফর্টিসের বিপক্ষে আগের ম্যাচে ২-০ গোলে হেরে আসা কিংস এদিন শুরু থেকে ছড়ি ঘোরাতে থাকে পুলিশের ওপর। ষষ্ঠ মিনিটে এগিয়েও যায় তারা। মিগেল ফিগেইরা কর্নারে তপু বর্মনের নিখুঁত ফ্রি-কিকে বল দূরের পোস্ট দিয়ে জড়ায় জালে। কিংসের এগিয়ে যাওয়ার আনন্দ অবশ্য উবে যায় পরের মিনিটেই। বাম দিক দিয়ে আক্রমণে ওঠা ইসা ফয়সাল আড়াআড়ি ক্রস বাড়ান গোলমুখে। দুই ডিফেন্ডারের ফাঁক গলে বেরিয়ে দারুণ টোকায় পুলিশকে সমতায় ফেরান আল-আমিন। একাদশ মিনিটে ফের এগিয়ে যায় কিংস। এক ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে মজিবুর রহমান জনি কাটব্যাক করেন, পুলিশের দুই ডিফেন্ডারের সামনে দিয়ে বল চলে যায় জোনাথন ফার্নান্দেসের কাছে। এই ব্রাজিলিয়ানের পা হয়ে বল যায় তারই স্বদেশি মিগেইলের কাছে। বাঁ পায়ের শটে লক্ষ্য ভেদ করেন এই ব্রাজিলিয়ান। বিরতির আগে পুলিশের পোস্টের নিচে অতন্দ্র প্রহরী ছিলেন রাকিবুল তুষার। ২৫তম মিনিটে ফাহিমের শট ফিস্ট করে তুষার আটকানোর পর রাকিবের ফিরতি শট গোললাইন থেকে ফেরান সাগর মিয়া। ৩৪তম মিনিটে সতীর্থের ছোট পাস প্রথম স্পর্শে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে জায়গা বানিয়ে ডান পায়ে শট নেন রাকিব হোসেন। বল বাঁক খেয়ে ঠিকানা খুঁজে নেয়ার আগেই ক্ষিপ্র গতিতে ঝাঁপিয়ে আটকান গোলরক্ষক। প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে ফার্নান্দেসের সঙ্গে বল দেয়া-নেয়া করে মিগেইলের দূরের পোস্টে শট নেন। পুলিশ গোলরক্ষক রাকিবুল আবারো ঝাঁপিয়ে হতাশ করেন কিংসকে। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুর দিকে ব্যবধান বাড়িয়ে নেয় কিংস। ছোট কর্নারে পাওয়া বল ফাহিম ফিরিয়ে দেন মিগেইলকে। ঠাণ্ডা মাথায় তিনি বল বাড়ান গোলমুখে, টোকায় স্কোরলাইন ৩-১ করেন ফার্নান্দেস। কিন্তু রোমাঞ্চের তখনো বাকি। ৫৪তম মিনিটে ম্যাচ জমিয়ে তোলে পুলিশ এফসি। কাজেম শাহ কিরমানির রক্ষণ চেরা পাস ধরে গোলরক্ষককে কাটাতে গিয়ে দুরূহ কোণে চলে যান আল-আমিন। সেখান থেকেই নিখুঁত শটে জাল খুঁজে নেন পুলিশের এই ফরোয়ার্ড। এটি মৌসুমে সপ্তম গোল আল আমিনের। যার পাঁচটি করেছেন লীগে, দু’টি ফেডারেশন কাপে। কিন্তু পরে আর পুলিশ খুঁজে পায়নি সমতাসূচক গোলের দেখা। দুই ম্যাচে ১টি করে হার ও ড্রয়ে ১ পয়েন্ট তাদের।