দাওয়াতের মাধ্যমেই মানুষ সৎপথে ফিরে আসে।

ইসলামে দাওয়াতের গুরুত্ব বেশি। কারণ দাওয়াতের মাধ্যমেই মানুষ সৎপথে ফিরে আসে। দাওয়াতের মাধ্যমে ইসলামের আদর্শ প্রসারিত হয়। দাওয়াতের মাধ্যমে সত্য প্রচার ও প্রতিষ্ঠা হয় আর মিথ্যা দূরীভূত হয়। তাই আল্লাহতায়ালা যুগে যুগে নবী-রাসুল পাঠিয়েছেন আল্লাহর হুকুম আহকামের দাওয়াত দেওয়ার জন্য। মানুষকে আল্লাহর পথে আহ্বান করার জন্য। শেষ নবী হজরত মোহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে পাঠিয়েছেন সেই একই কাজ আল্লাহর দিকে মানুষকে দাওয়াতের জন্য। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘রাসুলগণের দায়িত্ব তো কেবল সুস্পষ্টভাবে প্রচার করা।’ (সুরা নাহল, আয়াত-৩৫)
আল্লাহতায়ালা কোরআনুল কারীমে বিভিন্নভাবে এ দাওয়াতের কথা বলেছেন। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘যারা অনুসরণ করে বার্তাবাহক উম্মি নবীর, যাঁর উল্লেখ তারা তাদের নিকট রক্ষিত তাওরাত ও ইনজীলে লিপিবদ্ধ পায়, যিনি তাদেরকে সৎকাজের নির্দেশ দেন এবং অসৎকাজ থেকে নিষেধ করেন। (সুরা আরাফ, আয়াত-১৫৭) আল্লাহতায়ালা এখানে নবীর দাওয়াতকে সৎকাজের আদেশ ও অসৎকাজের নিষেধ প্রচার করার কথা হিসেবে উল্লেখ করেছেন। অন্যত্র আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘তোমাদের কি হলো যে, তোমরা আল্লাহর প্রতি ঈমান আন না, অথচ রাসুল তোমাদেরকে আহ্বান করেছেন যে, তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের প্রতি ঈমান আন। (সুরা হাদীদ, আয়াত-৮) এখানে আল্লাহতায়ালা আল্লাহর প্রতি ঈমান আনার প্রতি আহ্বান করেছেন রাসুলের মাধ্যমে।
আল্লাহতায়ালা রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নির্দেশই দিয়েছেন তাবলীগ করার জন্য। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘আপনি আপনার প্রতিপালকের দিকে আহ্বান করুন হিকমত ও প্রজ্ঞা দ্বারা এবং সুন্দর ওয়াজ-উপদেশ দ্বারা। আর তাদের সাথে উৎকৃষ্টতর পদ্ধতিতে আলোচনা-বিতর্ক করুন।’ (সুরা নাহল, আয়াত-১২৫) এখানে দাওয়াতের নির্দেশের সাথে সাথে কীভাবে দাওয়াত দেবে তাও উল্লেখ করেছেন। আল্লাহ বলেছেন, হিকমত ও প্রজ্ঞা দ্বারা, সুন্দর ওয়াজ-উপদেশ দ্বারা, উৎকৃষ্ট পদ্ধতিতে আলোচনা-বিতর্ক করার কথা বলেছেন। এতে আমরা দাওয়াতের মূলপদ্ধতি পাই। দাওয়াতের কাজ না করলে তার ওপর ধমকও এসেছে। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘হে রাসুল! আপনার প্রতিপালকের পক্ষ থেকে আপনার ওপর যা অবতীর্ণ হয়েছে তা আপনি প্রচার করুন। যদি আপনি তা না করেন তাহলে আপনি আল্লাহর বার্তা প্রচারই করলেন না।’ (সুরা মায়েদা, আয়াত-৬৭) এ আয়াতের মাধ্যমে স্পষ্ট হয় যে, দাওয়াতের গুরুত্ব কত বেশি!
দাওয়াতের ফজিলত : আল্লাহতায়ালা বলেন, তোমরা শ্রেষ্ঠ উম্মত, ‘যাদেরকে মানুষের কল্যাণের জন্য পাঠানো হয়েছে। তোমরা নেক কাজের আদেশ করো এবং মন্দকাজ হতে নিবৃত্ত রাখ এবং আল্লাহতায়ালার প্রতি ঈমান রাখ।’ (সুরা আলে ইমরান, আয়াত-১১০) আল্লাহ যেমন বড় আল্লাহর রাস্তাও তেমন বড়। আল্লাহর রাস্তায় সময় লাগানোও তেমনি বড়। আল্লাহর কথা যেমন দামি ও মূল্যবান আল্লাহর কথার দিকে আহ্বান করাও তেমন দামি ও মূল্যবান। আল্লাহতায়ালা নিজেই বলেন, ‘ওই ব্যক্তির কথার চেয়ে কার কথা বা কে উত্তম যে, আল্লাহর দিকে আহ্বান করে এবং সৎ আমল করে এবং বলে আমি মুসলিমদের অন্তর্ভুক্ত।’ (সুরা হামীম সাজদাহ, আয়াত- ৩৩) আল্লাহর দিকে আহ্বান করেছেন নবী ও রাসুলগণ। যারা নির্বাচিত, আল্লাহর মনোনীত সর্বযুগের শ্রেষ্ঠ মানুষ ছিলেন। এমন একটি কাজ, এমন কথা যার মুখ থেকে বের হবে তার কত মর্যাদা থাকতে পারে। তাইতো আল্লাহ বলেছেন, ‘তার কথার চেয়ে উত্তম আর কোনো কথাই হতে পারে না। যে আহ্বানের সাথে সাথে সৎ আমল করে এবং স্বীকার করে যে, আজ্ঞাবহ তবে সেই ব্যক্তিই উত্তম।’
প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কত বড় সাওয়াবের ঘোষণা দিয়েছেন। একজন ব্যক্তি দুনিয়াতে যত নেক আমল করবে তবে তাকে যে দীনের পথে আহ্বান করেছে সে ওই ব্যক্তির আমলের…….