আসামি নির্যাতনের ঘটনায় পুলিশ কর্মকর্তাকে ব্যাখ্যা দিতে নির্দেশ

স্কুলছাত্র আয়াজ হত্যা মামলার আসামি ইনজামামুন ইসলাম ওরফে জিসানকে অমানবিক নির্যাতনের ঘটনায় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সাহিদুল বিশ্বাসকে লিখিত ব্যাখ্যা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আগামী রবিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) তাকে এ ব্যাখ্যা দাখিল করতে বলা হয়েছে।
রবিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি নাসরিন আক্তারের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে জিসানের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বদিউজ্জামান তফাদার।
এর আগে আজ সকালে তলবে হাজির হন পুলিশ কর্মকর্তা সাহিদুল বিশ্বাস। গত ২ ফেব্রুয়ারি তাকে তলব করেছিলেন হাইকোর্ট।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ১০ ডিসেম্বর কলেজ ফুটবল প্রীতি টুর্নামেন্টের বিরোধের জের ধরে গভর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি স্কুলের ছাত্র আয়াজ হককে পিটিয়ে ও ছুরিকাঘাত করে হত্যার দায়ে একজনকে আমৃত্যু সশ্রম কারাদণ্ড ও পাঁচ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আদালত। আসামিরা সবাই সিটি কলেজের ছাত্র।
রায়ে আসামি ইনজামামুন ইসলাম ওরফে জিসানকে আমৃত্যু সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এছাড়া যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন— তৌহিদুল ইসলাম, মশিউর রহমান আরাফ, তৌহিদুল ইসলাম শুভ, আবু সালেহ মো. নাসিম ও আরিফ হোসেন রিগ্যান। রায় ঘোষণার সময় কারাগারে থাকা ইনজামামুন ইসলাম ও তৌহিদুল ইসলামকে আদালতে হাজির করা হয়। অন্যরা পলাতক।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২০১৪ সালের ৯ জুন সিটি কলেজের প্রীতি ফুটবল টুর্নামেন্টের প্রস্তুতি ও খরচ বাবদ টাকা তোলার বিষয় নিয়ে আয়াজের বড় ভাই সিটি কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আশদিন হকের সঙ্গে আসামিদের কথা-কাটাকাটি ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে ওই দিন বিকালে ধানমন্ডি থানাধীন জিগাতলায় যাত্রীছাউনির কাছে আয়াজকে একা পেয়ে আসামিরা পরস্পরের যোগসাজশে মারধর ও ছুরিকাঘাত করে গুরুতর জখম করেন। আয়াজকে চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
আয়াজ হত্যার ঘটনায় তার বাবা আইনজীবী শহীদুল হক ২০১৪ সালের ৯ জুন ধানমন্ডি থানায় সিটি কলেজের বাণিজ্য বিভাগের ছয় ছাত্র ইনজামামুন ইসলাম ওরফে জিসান, তৌহিদুল ইসলাম, মশিউর রহমান আরাফ, তৌহিদুল ইসলাম শুভ, আবু সালেহ মো. নাসিম ও আরিফ হোসেন রিগ্যানের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও ১০ থেকে ১২ জনকে আসামি করে মামলা করেন। এরপর ২০১৫ সালের ১৩ মে ধানমন্ডি থানার এসআই সহিদুল বিশ্বাস ৪৭ জনকে সাক্ষী করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
২০১৬ সালের ২৪ নভেম্বর আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচারের আদেশ দেন। বিচার চলাকালে আদালত ১৬ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন।