মিথ্যা বানোয়াট এবং ভিত্তিহীন সংবাদ প্রচারের দায়ে দৈনিক যুগান্তরের বিরুদ্ধে অতিসত্তর “Legal notice” এর মাধ্যমে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে

সম্প্রতি যুগান্তর পত্রিকা (১২ এপ্রিল ২০২৫) তার প্রথম পাতায় বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী এবং ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সফল কাণ্ডারি তাজউদ্দীন আহমদ সম্পর্কে যে ন্যাক্কারজনক শিরোনাম ও মিথ্যা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে তার তীব্র নিন্দা জানাই এবং অবিলম্বে এই বানোয়াট সংবাদ প্রত্যাহার এবং পত্রিকার তরফ থেকে ক্ষমা প্রার্থনা দাবী করছি।
“ভারতের কাছে তাজউদ্দীনের দেশবিক্রির দাসখতঃ সেই সাত গোপন চুক্তি” এই শিরোনামে যুগান্তরের দীর্ঘ প্রতিবেদনের প্রথম অংশে লেখা হয় “ মহান মুক্তিযুদ্ধের ৯ মাসে ভারত তাজউদ্দীন আহমদকে দিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে জনস্বার্থ বিরোধী সাতটি চুক্তি করিয়ে নিয়েছিল। দেশ বিক্রির ওই সাতটি চুক্তি বলবত থাকার পরেও ১৯৭২ সালে শেখ মুজিবুর রহমান ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীকে ঢাকায় নিয়ে আসেন, এমনকি ভারতের সঙ্গে ২৫ বছর মেয়াদি আরও একটি চুক্তি করা হয়। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা তখন বলেছিলেন, ভারত চিরস্থায়ীভাবে বাংলাদেশকে তার দাসত্বে রাখার জন্য এসব চুক্তি করে। তাজউদ্দীনের মাধ্যমে করা ভারতের সেই গোপন চুক্তির বিষয়গুলো ১৯৭২ সালের ২২ সেপ্টেম্বর মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর হক-কথা পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। এর জেরে মওলানা ভাসানীকে গ্রেফতারের উদ্যেগ নেয়া হয়। এমনকি তাকে হত্যার ষড়যন্ত্রও করা হয়। শেষ পর্যন্ত পত্রিকাটি বন্ধ করে দেয়া হয়। গ্রেফতার করা হয় হক-কথার সম্পাদক সৈয়দ ইরফানুল বারীকে। গুঁড়িয়ে দেয়া হয় হক কথার ছাপাখানা। যা নিয়ে তখন কেউ প্রতিবাদ করার সাহস পায়নি। “
কথিত সাত দফাকে কেন্দ্র করে প্রতিবেদনের বাকী অংশও এমনি মিথ্যাচারে ভরা।
কোন প্রকার নথি-প্রমান, ও বস্তুনিষ্ঠ অনুসন্ধান ব্যাতিরক এই সংবাদপ্ত্র শুধুমাত্র হক কথার বয়ানের উপর নির্ভর করে মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সংগঠক, যার নিবেদিত নেতৃত্বর কারনে বিশ্ব জনমত বাংলাদেশের পক্ষে সোচ্চার হয়, পাকিস্তান হানাদার সেনা কবলিত বাংলাদেশে ভয়াবহ গনহত্যার পথ রুদ্ধ হয়ে দেশ বিজয় লাভ করে তাঁর বিরুদ্ধে দেশ বিক্রির হীন অপবাদ শুধু এই সংবাদ পত্রের চরম দায়িত্বহীনতারই পরিচায়ক নয়, প্রশ্ন জাগে পত্রিকাটি আসলে কার পক্ষে কাজ করছে? তাজউদ্দীন আহমদের বিরুদ্ধে এমন জঘন্য মিথ্যাচার তো ১৯৭১ এর গনহত্যার পক্ষ সমর্থনকারী, বাংলাদেশের অস্তিত্ব অস্বীকারকারী, মুক্তিযুদ্ধ এবং মুক্তিযুদ্ধের সরকার বিরোধীদের পক্ষেই করা সম্ভব।
যুগান্তর পত্রিকার ভাষ্য অনুযায়ী ভারত তাজউদ্দীন আহমদকে দিয়ে ৭ দফা গোপন চুক্তি করেছিল কিন্তু সেই চুক্তির স্বাক্ষরকৃৎ কপি এই পত্রিকা দেখাতে পারেনি! যেহেতু দুই রাষ্ট্রের মধ্যে এই তথাকথিত চুক্তি হয়েছিল সুতরাং সেই দুই রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী ও তাজউদ্দীন আহমদের স্বাক্ষরযুক্ত চুক্তির কপি তো নিশ্চয় থাকার কথা ছিল যার ভিত্তিতেই এমন গুরুতর অভিযোগ করা সম্ভবপর হোতো। বাংলাদেশকে ভারত স্বীকৃতি দিল ৬ ডিসেম্বর, ১৯৭১। আর অপপ্রচারনাকারীরা বলে সাত দফা চুক্তি হয় অক্টোবরে। এটা কি ভাবে সম্ভব? একটা দেশকে স্বীকৃতি ছাড়াই কি ভাবে আন্তর্জাতিক, কুটনৈতিক ও দ্বিপাক্ষিক চুক্তি সম্ভব? স্বয়ং তাজউদ্দীন আহমদ জনসমক্ষে (১৬ ডিসেম্বর ১৯৭৩, ইতিহাসের পাতা থেকে, সম্পাদনা সিমিন হোসেন রিমি। প্রতিভাস ) এবং আওয়ামীলীগের দ্বিবার্ষিক কাউন্সিল অধিবেশনে ( ১৫ ও ২০ জানুয়ারী ১৯৭৪ ইতিহাসের পাতা থেকে) এই চুক্তিকে ভিত্তিহীন বলেন এবং কেউ প্রমান করতে পারলে ফাঁসী কাষ্ঠে ঝুলতে প্রস্তুত এই চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন | সেসময় এবং পরবর্তীতেও কেউ তাঁর চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেনি | আজ অবধি বাংলাদেশের কোন সরকার, ব্যাক্তি বা সংগঠন ও সেই চুক্তির কপি দেখাতে পারেনি। প্রশ্ন হোল তাদের স্বাক্ষরকৃত এই চুক্তি যদি থেকেই থাকে তাহলে বর্তমান হতে বিগত কোন সরকার বাংলাদেশের স্বার্থ বিরোধী এই চুক্তি স্বাধীনতার ৫৪ বছরেও প্রকাশ ও বাতিল করেনি কেন ! উল্লেখিত প্রতিবেদনে বিশেষজ্ঞদের অভিমতের সাথে আমরাও একমত যে ভারতের সাথে এমন কোন চুক্তি থাকলে তা সরকার যেন প্রকাশ করে।
১৯৭২ সালে শেখ মুজিবুর রহমান ও ইন্দিরা গান্ধী যে ২৫ বছর মেয়াদি মৈত্রী চুক্তি করেন তাকেও কথিত সাত দফা চুক্তির পরবর্তী অংশ বলা হয়। সেটি যদিও ছিল প্রকাশ্য ও ভারত- সোভিয়েত চুক্তির আদলে। পরবর্তীতে খন্দকার মোস্তাক আহমেদ , জিয়াউর রহমান , হুসেইন মহম্মদ এরশাদ এবং খালেদা জিয়ার সরকার তারা কেউই মুক্তিযুদ্ধ কালের সাত দফা চুক্তি নিয়ে কথা বলেননি এবং বাতিল করেননি | কারণ এই যে বাংলাদেশের স্বার্থবিরোধী এমন কোন ধরনের গোপন চুক্তিই হয়নি যা প্রকাশ ও বাতিল করা সম্ভব | বানোয়াট এই চুক্তির বিষয়টি ছিল তাজউদ্দীন আহমদের নেতৃত্বর প্রতি ঈর্ষা, মুক্তিযুদ্ধ ও তার গর্ভ থেকে জন্মানো বাংলাদেশকে হেয় ও অস্বীকার করার গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ | যা দুর্ভাগ্যক্রমে এখনও চলমান |
তবে হ্যাঁ প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ ও ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম ভারতের সাথে অন্যধরনের প্রকাশ্য চুক্তি করেছিলেন যাকে ব্যারিস্টার আমীর উল ইসলাম তাঁর সাক্ষাৎকারে পৃথিবীর
ইতিহাসের বিরল ” মহৎ এবং এত সুন্দর চুক্তি” আখ্যায়িত করেন। ( তাজউদ্দীন আহমদ আলোকের অনন্তধারা | সম্পাদনা সিমিন হোসেন রিমি | প্রতিভাস ) সেই চুক্তি কি ছিল এক নজরে দেখে নেয়া যাক |
তাঁরা ভারত সরকারকে তিনটি শর্ত আরোপ করেন যার ভিত্তিত্বে প্রকাশ্য চুক্তি হয় |
১। ভারত বাংলাদেশকে স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্ররুপে স্বীকৃতি দেবে |
২। স্বীকৃতি দেবার পরেই মিত্র বাহিনী হিসেবে ভারতীয় বাহিনী মুক্তি বাহিনীর সাথে যৌথ কমান্ডে বাংলাদেশে প্রবেশ করবে | এ সম্পর্কে মুক্তিযুদ্ধে সামরিক বাহিনীর উপ অধিনায়ক এ কে খন্দকার বলেন, “ এটা ছিল আমাদের যুদ্ধ। … যৌথ সামরিক নেতৃত্ব, যেটা তাজউদ্দীন আহমদ করলেন , যদি না করা হতো , তাহলে ভারতীয় বাহিনী একক ভাবেই সব কৃতিত্ব নিতে পারতো । আত্ম সমর্পণের যে দলিল, সেই দলিলে শুধু ভারতীয়দের কথাই থাকতো। এটা ভারতীয়দের বিজয় হিসেবেই ইতিহাসে চিহ্নিত হতো। …এ কাজটি সুষ্ঠু ভাবে করার জন্যে আমি প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদকে ধন্যবাদ জানাই।“ ( মুক্তিযুদ্ধের পূর্বাপর, প্রথমা প্রকাশন) ব্যারিস্টার আমীর উল্লেখিত চুক্তি প্রশঙ্গে বলেন, “ তাজউদ্দীন সাহেব শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধীকে বললেন যে, বাংলাদেশ ভারতীয় সৈন্য ঢুকবার আগে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিতে হবে এবং কি ভাবে সৈন্য ঢুকবে তার একটা ভিত্তি তৈরি করতে হবে। সেই ভিত্তি ছাড়া বাংলাদেশে ঢোকা যাবেনা।…। যখন অ্যালাইড ফোরস ফ্রান্সে ঢুকেছিল [১৯৪৪] তখন তো এইরকম চুক্তি করে তারা ঢোকেনি। … এখানে আমাদের বুঝতে হবে যে তাজঊদ্দীন সাহেব কত দূরদর্শী, কত সজাগ, কত সতর্ক ছিলেন।“ ( প্রাগুক্তঃ তাজউদ্দীন আহমদ আলোকের অনন্তধারা ) ।…
৩। বাংলাদেশ সরকার যখুনি বলবে তখুনি ভারতীয় বাহিনী বাংলাদেশ থেকে প্রত্যাহার করবে |
এই তিন মহৎ চুক্তির ভিত্তিত্বেই ভারতীয় সেনাবাহিনী ১৯৭২ সালের ১৫ মার্চ বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে বাংলাদেশ থেকে প্রত্যাহার হয় |
যুদ্ধের চরম প্রতিকূল অবস্থার মধ্যেও এধরনের শর্ত আরোপ করতে এবং নিজ দেশের পক্ষে দৃঢ় অবস্থান নিতে একমাত্র দেশ প্রেমিক নেতারাই পারেন |
যুগান্তরের প্রতিবেদন অনুসারে সাত দফা চুক্তি প্রকাশের কারনে মওলানা ভাসানীকে গ্রেফতারের উদ্যেগ নেয়া হয় এবং তাকে হত্যার ষড়যন্ত্র করা হয়। সম্পাদক সৈয়দ ইরাফানুল বারীকে গ্রেফতার করা হয়। গুড়িয়ে দেয়া হয় হক কথার ছাপাখানা। সত্য হোল যে ইরফানুল বারী তার দেয়া ভিডিও সাক্ষাৎকারে (১২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫, যা আমাদের চলমান গবেষনার অংশ হিসেবে যুগান্তরের উল্লেখিত প্রতিবেদনের আগেই ধারন করা হয়েছিল ) জানান যে সাত দফা বিষয়ে তাজউদ্দীন আহমদকে অভিযুক্ত করে ২২ সেপ্টেম্বর এর সম্পাদকীয় তিনি লেখেননি এবং এ সমন্ধে তিনি অবহিতও ছিলেন না। কারন তার তিনমাস আগেই তিনি গ্রেফতার হন। তিনি বলেন যে তাকে ১৯৭২ সালের জুন মাসে গ্রেফতার করা হয়েছিল অন্য কারনে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সরকারের সমালোচনা করার জন্যে; সাত দফা, যে সম্পাদকীয় তিনি লেখেন নি বা যা সম্পর্কে অবহিত ছিলেন না তা প্রকাশ করার জন্যে নয়। তিনি মুক্তি লাভ করেছিলেন ১৯৭৩ সালের অক্টোবর মাসে।
সম্পাদক বারী আরও বলেন যে ১৯৭৪ সালে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যখন টাংগাইলের সন্তোষে মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানীর সাথে দেখা করতে আসেন তখন ভাসানী সাহেব বঙ্গবন্ধুকে বলেছিলেন তাজউদ্দীন আহমদের কাছে দেশ পরিচালনার ভার দিয়ে বঙ্গবন্ধু যেন অভিভাবক রুপে থাকেন। মওলানা ভাসানীর অত্যন্ত ঘনিষ্ট এবং সন্তানসম সম্পাদক ইরফানুল বারীকে নিজমুখে একথা মওলানা ভাসানী বলেছিলেন।
ভাসানী সাহেব তাজউদ্দীন আহমদকে একজন ত্যাগী এবং অভিজাত নেতা হিসেবে মূল্যায়ন করতেন একথাও সম্পাদক বারী জানান। ৭২ সালে যে হক কথায় তাজউদ্দীন আহমদকে ভারতের কাছে দেশ বিক্রির অপবাদ দেয়া হয় সেই একই হক কথার প্রকাশক মওলানা ভাসানী ১৯৭৪ সালে বঙ্গবন্ধুকে তাজউদ্দীন আহমদের কাছে রাষ্ট্র পরিচালনার ভার অর্পণ করতে বললেন! বাস্তবে, সম্পাদকের গ্রেফতারের পর, ওই বানোয়াট প্রতিবেদন হক কথার নাম দিয়ে ছাপিয়েছিল দেশের স্বার্থ বিপন্নকারী এমন কিছু ব্যাক্তিবর্গ যাদের কুটিল ষড়যন্ত্র মুক্তিযুদ্ধর সময়েও বিদ্যমান ছিল। এমনকি তারা তাজঊদ্দীন আহমদকে হত্যারও প্রচেষ্টা চালিয়েছিল। ( মঈদুল হাসান। মূলধারা ৭১)
টাঙ্গাইলের যে ছাপাখানা থেকে হক কথা প্রকাশিত হতো তার নাম ছিল কল্লোল মুদ্রায়ন। তার মালিক, মুক্তিযোদ্ধা ও কবি বুলবুল খান মাহবুব বলেন ( ২১ ও ২৩ এপ্রিল, ২০২৫) তার ছাপাখানাকে গুড়িয়ে দেয়া হয়েছিল একথা সত্য নয়। ইরফানুল বারী গ্রেফতার হবার পর তিনি জুন মাস থেকে আত্ম গোপনে চলে যান। এরপর থেকে হক কথা প্রকাশিত হোত পুরাতন ঢাকার অন্য কোন মালিকানাধীন ছাপাখানা থেকে । ১৯৭২ সালের ২২ সেপ্টেম্বর হক কথার সর্বশেষ সংখ্যা প্রকাশিত হয়। ঐ শেষ সংখ্যাতেই তাজউদ্দীন আহমদের উপর দেশ বিক্রির ভয়ংকর রকমের মিথ্যা অপবাদ চাপিয়ে লেখা হয় যে “ সরকারের অভ্যন্তরে অন্তর দ্বন্দ্ব ও গুতোগুতি হওয়ায় গোপন চুক্তির কিছু তথ্য প্রকাশ হয়ে পড়েছে।“ বুলবুল খান বলেন ( ১১ মার্চ, ২০২৫) সম্পাদক ইরফানুল বারী অন্তরীন হবার পর তাজউদ্দীন আহমদের বিরুদ্ধে এই হীন এবং বানানো তথ্য গুলি সরবরাহ করেছিল আওয়ামীলীগের ভেতরের ই কিছু নেতৃবৃন্দ যারা তাজউদ্দীন আহমদ এবং বাংলাদেশের স্বার্থের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের সময় থেকেই ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিল। বুলবুল খান তাজঊদ্দীন আহমদের প্রতি মওলানা ভাসানীর গভীর আস্থা ও স্নেহের কথা স্মরন করেন এবং তাজউদ্দীন আহমদকে একজন খাঁটি দেশপ্রেমিক এবং মুক্তিযুদ্ধের সফল নায়ক রুপে অভিহিত করেন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের উত্তাল সময়ে তাজউদ্দীন আহমদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন ভাসানী সাহেব। মাইলফলক সর্বদলীয় জাতীয় উপদেষ্টা কমিটির আহবায়ক ছিলেন তাজউদ্দীন আহমদ এবং সভাপতি মওলানা ভাসানী। বিজয়ের প্রাক্কালে মুক্তিযোদ্ধাদের সমন্বয়ে জাতীয় মিলিশিয়া প্রকল্পের আহবায়ক ছিলেন তাজউদ্দীন এবং এক নম্বর সদস্য মওলানা ভাসানী।
বলা বাহুল্য যে কথিত সাত দফা চুক্তি প্রকাশের জন্যে মওলানা ভাসানিকে হত্যার চেষ্টা তথ্যটিও ভুয়া। হক কথার সম্পাদক কারারুদ্ধ হবার পর ভাসানী সাহেবের পত্রিকাকে ব্যবহার করে তার সর্বশেষ সংখ্যায় তাজউদ্দীন সাহেবের বিরুদ্ধে এই বানোয়াট সংবাদ পরিবেশন যারা করেছিল তাদের চিন্তা-কর্মের উত্তর সূরীরা আবারো তৎপর হয়েছে।
তাদের এই অনৈতিক উদ্দেশ্য সত্য অনুসন্ধিৎসু বস্তুনিষ্ঠ গবেষনা দ্বারাই স্তিমিত হবে বলে আমাদের বিশ্বাস। মুক্তমন নিয়ে সত্যকে অনুসন্ধানের কাজটি নতুন প্রজন্মকেই করতে হবে। সত্যর আলোয় যে ইতিহাসকে তারা খুঁজে পাবে তা হবে তাদের সমুখে চলার বাতিঘর।
যারা আজ রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের জন্যে ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট নিয়ে ষড়যন্ত্র ও মিথ্যাচার করছে, তারা পরাজিত হবে তাদের রচিত মিথ্যার গোলক ধাঁধায়, নিজ সম্মান ও সত্ত্বাকে হারিয়ে। তাজঊদ্দীন আহমদ ও তার মত মানুষেরা আজীবন বেঁচে থাকবেন সত্যর জ্যোতিতে; অগুনিত মানুষের হৃদয়ে ও তাদের ভালবাসার শক্তিতে।
তাজউদ্দীন আহমদের পরিবারের পক্ষ থেকে
শারমিন আহমদ ও তানজিম আহমদ সোহেল তাজ