লোকাল বাসের হেলপার থেকে সাংবাদিক বনে যাওয়া আবুল খায়ের এর কোটি কোটি টাকার সম্পদের আয়ের উৎস কি?

এম শাহীন আলমঃ ছিলেন জনতা লোকাল বাসের হেলপার চলে যান প্রবাসে। প্রবাস থেকে ফেরত এসে শুরু করেন রাজনৈতিক নেতাদের প্রকাশ্যে তোষামোদী আর দালালী। জড়িয়ে পড়েন মাদক চোরাকারবার সহ ডিবি ও থানার পুলিশের সোর্সের কাজে। পড়াশোনা কম থাকলেও স্থানীয় প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতাদের ছত্র-ছায়ায় এবং সুপারিশে হয়ে যান একটি দৈনিক পত্রিকার সাংবাদিক। আর এই সাংবাদিক নামক তকমাকে কাজে লাগিয়ে চালিয়ে যান একটার পর একটা অনিয়ম আর অপকর্ম। গোয়েন্দা শাখা এনএসআই এর তালিকায় দুর্নীতিবাজ সাংবাদিক হিসেবে রয়েছে তার নাম। বর্তমানে কুমিল্লা জেলার শীর্ষ দুর্নীতিবাজ,চাঁদাবাজ,দখলবাজ সাংবাদিক হিসেবে জেলা উপজেলার সকল সাংবাদিকদের কাছে পরিচিত নাম দৈনিক যুগান্তর পত্রিকা ও স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেল আরটিভি’র কুমিল্লা জেলা প্রতিনিধি মো. আবুল খায়ের। সৃজনশীল সম্মানীয় পেশা সাংবাদিকতাকে পুঁজি করে এই আবুল খায়ের অবৈধ উপার্জনের মাধ্যমে গড়েছেন তার নিজ উপজেলা মুরাদনগর,দেবিদ্বার সহ কুমিল্লা সিটিতে বিলাস বহুল ফ্ল্যাট বহুতল বাড়ি,গাড়ি,মার্কেট সহ বহু ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। যার বর্তমান মূল্য অনুসন্ধানী তথ্য অনুযায়ী আনুমানিক শত কোটির মালিক এই আবুল খায়ের। কুমিল্লার স্থানীয় সচেতন মহলের প্রশ্ন সাংবাদিক আবুল খায়ের এর পত্রিকা এবং টিভি চ্যানেলের মাসিক বেতন ভাতা কত? সে অনিয়ম আর দুর্নীতি ছাড়া কোন আলাদীনের চেরাগের শক্তিতে রাতারাতি কোটি কোটি টাকার সম্পদের আয়ের উৎস কি?
সরজমিন অনুসন্ধানে স্থানীয় এলাকাবাসীর তথ্য মতে জানা যায়,আবুল খায়ের এর অতীতে পারিবারিক অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো ছিলো না, তার শিক্ষাগত যোগ্যতা কম হওয়ায় কোন চাকুরীরও ব্যবস্থা ছিলোনা।কাজের সন্ধানে সে এক সময় প্রবাসে যাওয়ার আগে স্থানীয় আঞ্চলিক রোডে চলাচলকারী জনতা লোকাল বাসে জীবিকার টানে হেলপার হিসেবে কাজ করেন। এর পর এলাকার মানুষের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে সুদূর প্রবাসে চলে যান। প্রবাসে গিয়েও সুবিধা করতে না পেরে আবার দেশে ফিরে আসেন। স্থানীয়রা আরো জানান, এই আবুল খায়ের সাংবাদিকতার সুবাধে স্থানীয় আওয়ামীলীগের কুমিল্লা মুরাদনগর আসনের এমপি ইউসুফ আব্দুল্লাহ্ হারুন সাথে তার পরিচয় হয়। স্থানীয় এমপি’র সাথে পরিচয় এবং সখ্যতা হওয়ার পর থেকে আবুল খায়ের আওয়ামী রাজনৈতিক বলয়ে ফ্যাসিস্ট এমপি ইউসুফ আব্দুল্লাহ হারুন এর সেল্টারে আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেন। তার নিজ উপজেলা সহ কুমিল্লা জেলার সকল উপজেলার সরকারি অফিস সমূহ, থানা সমূহে তিনি আধিপত্য বিস্তার করা শুরু করে নিউজের হুঁমকি দিয়ে গোপনে চাঁদাবাজি শুরু করেন। গত ২০২৪ সালের জুলাই আগস্ট পর্যন্ত এই আবুল খায়ের আওয়ামীলীগের চিহৃিত দালাল সাংবাদিক হিসেবে কুমিল্লা সকল জায়গায় আধিপত্য বিস্তার করে চাঁদাবাজি,ট্রেন্ডারবাজী,ভুমি জবর দখল, মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা নিউজ করে ব্ল্যাকমেইল করে হুমকি দমকি দিয়ে টাকা আদায় সহ অসংখ্য অভিযোগে তার বিরুদ্ধে ডজন খানেক মামলা চলমান রয়েছে।
সরজমিন অনুসন্ধানে আরো জানা যায়, মুরাদনগরে এলাকার লোকজন আবুল খায়ের এর অপকর্মে অতিষ্ট হয়ে তাকে এলাকা থেকে অবাঞ্চিত ঘোষণা করে সমাবেশ সহ পুরুষ মহিলারা তার বিরুদ্ধে জুতা ও ঝাড়ু মিছিল করে তার বিচার চায়।
অনুসন্ধানে বিশ্বস্থ সূত্রে জানা যায়,আবুল খায়ের কুমিল্লা জেলার ১৭টি থানা,ডিবি পুলিশ,জেলা আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস,সকল উপজেলার সাব-রেজিস্ট্রি অফিস,জেলা বিআরটিএ সার্কেল অফিস, আবাসিক হোটেল সহ মাদককারবারিদের কাছ থেকে প্রতি মাসে লাখ লাখ টাকা মাসিক চাঁদা আদায় করেন।
গত ৫ ই আগস্টের পর আওয়ামীলীগের দালাল আবুল খায়ের নিজের পিঠ বাঁচাতে এবং বিগত দিনের অপকর্ম ঢাকতে জেলার মুরাদনগরের কোম্পানীগঞ্জ এলাকায় আবুল খায়ের ট্রেডিং নামের একটি ব্যবসা শুরু করেছেন বলে সরজমিনে দেখা যায়।
আরো জানা যায়,কুমিল্লা সিটির ফৌজদারি মোড়ে সম্প্রতি ফ্লাট কিনেছেন ২ কোটি টাকা দিয়ে। সেখানে তার দ্বিতীয় বউ থাকে। গোপন সূত্রে মতে জানা যায়, আবুল খায়ের তার সাংসারিক জীবনে একাধিক বিয়ে করেছেন।তার এক বউয়ের ৩ বোনও তার খুব ঘনিষ্ট হওয়ার সুবাধে তাদেরকেও একটি করে ফ্ল্যাট উপহার দিয়েছেন আবুল খায়ের।
সম্প্রতি কুমিল্লা মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ইন্সপেক্টর মো: শরীফুল ইসলামকে এক জিডির কপি দিয়ে ব্ল্যাকমেইল করে মোটা অংকের টাকা নিয়েছেন আবুল খায়ের এমনটাই কুমিল্লার মানুষের সকলের মুখে মুখে।
নিউজের স্বার্থে বক্তব্য চেয়ে আবুল খায়ের’কে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিলেও তার মোবাইল সংযোগটি পাওয়া যায়নি। অনুসন্ধান অব্যাহত রয়েছে আরো নতুন নতুন তথ্য নিয়ে ধারাবাহিকের ১ম পর্বের জন্য অপরাধ বিচিত্রা পোর্টালে ক্লিক করুন ২য় পর্বের জন্য অপেক্ষা করুন এবং হকারকে বলে পত্রিকা সংগ্রহ করুন।