ইসলাম ধর্ম

আন্-নিসা,আয়াত নং: ১০৩,নির্ধারিত সময়ে সলাত আদায় মুমিনদের ওপর ফরয করা হয়েছে

আন্-নিসা,আয়াত নং: 103

فَاِذَا قَضَیْتُمُ الصَّلٰوةَ فَاذْكُرُوا اللّٰهَ قِیٰمًا وَّ قُعُوْدًا وَّ عَلٰى جُنُوْبِكُمْ١ۚ فَاِذَا اطْمَاْنَنْتُمْ فَاَقِیْمُوا الصَّلٰوةَ١ۚ اِنَّ الصَّلٰوةَ كَانَتْ عَلَى الْمُؤْمِنِیْنَ كِتٰبًا مَّوْقُوْتًا

তারপর তোমরা নামায শেষ করার পর দাঁড়িয়ে, বসে ও শুয়ে সব অবস্থায় আল্লাহকে স্মরণ করতে থাকো। আর মানসিক প্রশান্তি লাভ করার পর পুরো নামায পড়ে নাও। আসলে নামায নির্ধারিত সময়ে পড়ার জন্য মুমিনদের ওপর ফরয করা হয়েছে।

আল্লাহ তাআলা এ আয়াতে নির্দেশ দিচ্ছেন-‘সলাতুল খাওফ’ বা ভয়ের সময়ের নামাযের পর তোমরা খুব বেশী করে আল্লাহ তা’আলা যিকির করবে, যদিও তাঁর যিকিরের নির্দেশ এবং ওর গুরুত্ব অন্য নামাযের পরেও এমন কি সব সময়ের জন্যেই রয়েছে। কিন্তু এখানে বিশেষভাবে এজন্যেই বর্ণনা করেছেন যে, এখানে তিনি বান্দাহকে খুব বড় অবকাশ দান করেছেন। তিনি নামায হালকা করে দিয়েছেন। তাছাড়া নামাযের অবস্থায় এদিক ওদিকে সরে যাওয়া এবং যাতায়াত করা উপযোগীতা অনুযায়ী বৈধ করেছেন।
যেমন তিনি মর্যাদাসম্পন্ন। মাসগুলো সম্পর্কে বলেছেন- (আরবী) অর্থাৎ ‘তোমরা ঐ গুলোর ব্যাপারে তোমাদের নাফসের উপর অত্যাচার করো না।’ (৯:৩৬) যদিও অন্যান্য মাসেও অত্যাচার নিষিদ্ধ তথাপি এ পবিত্র মাসগুলোর মধ্যে ওর থেকে বিরত থাকার প্রতি বিশেষভাবে গুরুত্ব দিয়েছেন। তাই এখানে ঘোষণা করা হচ্ছে যে, সব সময়ই আল্লাহ তাআলার যিকির করতে থাক এবং যখন শান্তি এসে যাবে, কোন ভয় ও সন্ত্রাস থাকবে না তখন। নিয়মিতভাবে বিনয়ের সাথে নামাযের রুকনগুলো শরীয়ত মুতাবিক আদায় কর। এ নামায তোমাদের উপর নির্ধারিত সময়েই ফরযে আইন করে দেয়া হয়েছে। হজ্বের সময় যেমন নির্ধারিত রয়েছে, তদ্রপ নামাযের সময়ও নির্ধারিত রয়েছে। প্রথম সময়ের পরে দ্বিতীয় সময় এবং দ্বিতীয় সময়ের পরে তৃতীয় সময়। (Tafsir Ibn Kathir)

আল্লাহ তা’আলা সালাতুল খাওফের পর বেশি বেশি যিকির করার নির্দেশ দিয়েছেন।

যদিও তাঁর যিকিরের নির্দেশ ও গুরুত্ব অন্য সালাতের পরেও রয়েছে। কিন্তু এখানে বিশেষভাবে এজন্য বলা হয়েছে যে, এ সালাতের রুকন আরকান হালকাভাবে আদায় করা হয়। এখানে সালাতরত অবস্থায় সামনে ও পিছনে আসা এবং অন্যান্য কাজ বৈধ ছিল যা সাধারণ অবস্থার সালাতে বৈধ নয়।

তারপর আল্লাহ তা‘আলা বলেন, যখন কোন ভয় থাকবে না তখন রুকন-আরকান ও অন্যান্য নিয়ম কানুন ঠিক রেখে সালাত আদায় করবে।

ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন: كتابا موقوتا অর্থাৎ مفروضا বা অর্থ ফরয। সালাত নির্ধারিত সময়ে ফরয। নির্ধারিত সময় ছাড়া অন্য সময় আদায় করলে হবে না। বাড়িতে অবস্থানকালে সালাতের যে সময় সে সময়েই আদায় করতে হবে।

আবার সফরে থাকলে সালাতের যে সময় সে সময়েই আদায় করতে হবে। অর্থাৎ যোহর ও আসর একত্রে যোহরের সময়ে অথবা আসরের সময়ে একত্রে আদায় করা এটাই সালাতের সময়। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে উভয়ভাবে পড়ার প্রমাণ রয়েছে।

আব্দুল্লাহ বিন উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন: আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে দেখেছি যখন সফরে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বাহন দ্রুত বহন করে নিয়ে যেত তখন তিনি মাগরিবকে বিলম্ব করতেন এবং মাগরিব ও ঈশার সালাতকে একত্রে আদায় করতেন। (সহীহ বুখারী হা:১১০৯)

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আ‘রাফার ময়দানে এক আজান ও দু’ ইকামতে জোহর ও আসরের সালাত আদায় করেছেন এবং এক আযান ও দু’ ইকামতে মাগরীব ও ঈশার সালাত আদায় করেছেন। (সহীহ ইবনু খুযাইমা হা:২৮১১)

সুতরাং বুঝা যাচ্ছে সফরে থাকাকালীন জোহরের ওয়াক্তে আসর সালাত, অথবা আসরের ওয়াক্তে জোহরের সালাত ও অনুরূপ মাগরিব ও ঈশার ক্ষেত্রেও একত্রে আদায় করা বৈধ এবং এটা উপযুক্ত সময়।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button