অব্যাবস্থাপনা

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নকলের ভিডিও করায় বিজয় টিভির সাংবাদিকসহ  ৫ সাংবাদিকের উপর হামলা ক্যামেরা ভাঙচুর

জাকির হোসেন সুজনঃ রংপুর কাউনিয়া মীরবাগ ডিগ্রি কলেজের অনার্স ৩য় বর্ষ পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে পরীক্ষার হলে শিক্ষক একেই সঙ্গে পরীক্ষার্থীদের কাছে মোবাইল ফোন, রুমে ব্যাগ নিয়ে প্রবেশ ও টয়লেটে নকলের মহোৎসবের ভিডিও করায় সাংবাদিকদের উপর অতর্কিত হামলা করেন প্রিন্সিপাল জয়নাল আবেদীন গং বাহিনী।

গতকাল দুপুর সাড়ে তিনটায় পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে এই ঘটনা ঘটে।
এই সময়ে পুলিশের সামনে  প্রায় কয়েক দফা হামলা চালান তারা। বিজয় টিভির রংপুর ব্যুরো প্রধান হামিদুর রহমান হামিদ, সহকর্মী ক্যামেরাম্যান শাহীন আলম সাবু এছাড়া প্লাস টিভির রিপোর্টার মেহেদী হাসান তার সহকর্মী মশিউর রহমান ও আলামিনের ওপর এলোপাতাড়ি ভাবে দফায় দফায় হামলা করেন ঐ এলাকার বিএনপির নেতাকর্মী, পরীক্ষার ডিউটি রত শিক্ষক তুহিনসহ কয়েকজন শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের উস্কিয়ে দেওয়া প্রিন্সিপালের গুন্ডাবাহিনী। এ সময় ভিডিও ক্যামেরা, মেমোরি কার্ড, ঘড়ি চশমা ছিনিয়ে নিয়ে ভাঙচুর করেন।

গোপন সূত্র অনুযায়ী, পরিক্ষার হলে পরীক্ষার্থীর দেওয়া তথ্য মতে জানতে পাওয়া যায় সাড়ে তিন লক্ষ টাকা ছাত্র শিক্ষকের কন্টাকের বিনিময়ে প্রতিটি পরিক্ষা হল রুমে ফোন মোবাইলের হোয়াটসঅ্যাপে প্রশ্নপত্র ও শিক্ষকদের সহযোগিতায় নকলের মাধ্যমে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছিল।

এর গত পরীক্ষায় ৪/৫/২৫ তারিখে পরিক্ষা সেন্টারের হলরুমে সরেজমিনে কয়েকজন সাংবাদিক ঢুকতে চাইলে প্রিন্সিপাল জয়নাল আবেদীন বাধা দেন । বলেন এখানে ঢুকতে দেওয়া হবে না।কিন্তু সাংবাদিকরা পরীক্ষা সেন্টারে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের দায়িত্ব থাকা  কাউকে দেখতে পাননি । এরপর প্রিন্সিপাল জয়নাল আবেদীন ফোন কলের মাধ্যমে ট্যাগ অফিসার জাহাঙ্গীর আলম আধা ঘন্টা পর কাউনিয়া থেকে এসে বিভিন্ন অজুহাত দেখান। পরে প্রিন্সিপাল দুই ঘন্টা উনার অফিসে বসে রেখে পরীক্ষা শেষ করে আমাদেরকে পাঠিয়ে দেন।

গতকাল পরীক্ষা চলাকলের সময় আবার আবার কয়েকজন সাংবাদিক পরীক্ষার মাঝামাঝি সময় গেলে সেই সময় তিনি ভিতরে ঢুকতে দেয়নি। গতকালেও ট্যাগ অফিসার পরীক্ষা সেন্টারে উপস্থিত ছিলেন না।পরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার অনুরোধে আধা ঘন্টা পর ট্যাগ অফিসার এসে নানা অজুহাতের কথা আবার জানান পরে উনার সহযোগিতায় আমরা পরীক্ষার হলরুমে গিয়ে পরিস্থিতি অস্বাভাবিক দেখতে পারি। সেখানে প্রতিটি ছাত্র ও শিক্ষকদের হাতে এন্ড্রয়েড ফোন সরেজমিনের দেখতে পাই। এছাড়াও প্রতিটি পরীক্ষার্থীর সঙ্গে ব্যাগ দেখতে পাওয়া যায়। এছাড়াও বাথরুমগুলোতে চলমান পরীক্ষার বই নোট দেখতে পান সাংবাদিকরা। সেখানেও ট্যাগ অফিসার বক্তব্যে নিজে দায় এড়ানোর জন্য হতাশ হয়ে বলেন এটা কিভাবে সম্ভব এভাবে পরীক্ষা হতে পারে না। এই সময় ২১৩ নাম্বার রুমে দায়িত্ব থাকা শিক্ষক তুহিন শিক্ষার্থীদের তার ফোন দিয়ে হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে প্রশ্ন উত্তর পর্ব দেখিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এই ঘটনায় ট্যাগ অফিসার শিক্ষক তুহিনের ফোন সহ শিক্ষার্থীসহ কয়েকজন শিক্ষকের ফোন নিজের কাছে রেখে দেন।

এরপর সব বিষয়ে দেখার পর প্রিন্সিপাল রুমে সাংবাদিকরা আসলে প্রিন্সিপাল বিভিন্ন ভয়-ভীতি দেখানো শুরু করেন। বলেন তোমরা যেভাবে এসেছো সেইভাবে আর যেতে পারবে না। তোমরা কত বড় হলুদ সাংবাদিক হয়েছো সেটা দেখে নেব।
তোমরা আর ফিরতে পাবে কিনা সন্দেহ আছে বলে হুমকি দেন প্রিন্সিপাল জয়নাল আবেদিন।

দায়িত্ব থাকা শিক্ষক তুহিন ডিউটি ছেড়ে সাংবাদিকদের উপর হামলা শুরু করেন এবং কয়েক দফা হামলা চালিয়ে যান সেখানেও তিনি ক্ষান্ত হননি পরে শিক্ষার্থীদের লেলিয়ে দিয়ে হামলা সংঘটিত করেন। এইভাবে কয়েক দফা হামলা চালান শিক্ষকসহ প্রিন্সিপাল বাহিনীরা।

অন্যদিকে কাউনিয়া থানার ওসিকে আসতে বললে পরে এসে তিনি আমাদেরকে উদ্ধার না করে ছাত্রদের কাছে তুলে দেয় এই সময় পুলিশের উপস্থিতিতে ছাত্ররা মারপিট করেন। ছাত্ররা বলেন থানার ওসি আগে নাকি মারতে বলেছিলেন তাই তারা কোন দিক না দেখে কিল ঘুষি মারা শুরু করেন। বলেন পরেরটা পরে দেখা যাবে।

পরে শিক্ষক ছাত্রদের হাতে আবার তুলিয়ে দেওয়ার ভয়-ভীতি দেখিয়ে প্রিন্সিপাল জয়নাল আবেদীন
পরিস্থিতিতে থেকে নিজে বাঁচানোর জন্য প্রিন্সিপাল জয়নাল আবেদীন জোর করে আপসনামা করে নেন।।

এ ব্যপারে একাধিকবার ট্যাগ অফিসার ও কলেজের প্রিন্সিপালের সাথে মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তারা ফোন রিসিভ করেননি।

রংপুর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রবিউল ফয়সাল বলেন, কেন্দ্রে নকল এবং সাংবাদিকের ওপর হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় আমরা তদন্ত কমিটি করে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। প্রিন্সিপাল, ট্যাগ অফিসার কেউই রেহাই পাবে না।

এ ব্যপারে রংপুর রেঞ্জ ডিআইজি আমিনুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় পুলিশের কোনো গাফিলতি থাকলে আমরা খতিয়ে দেখে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবো। সাংবাদিকরা মামলা করলে আমরা যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নিবো।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button