ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের দ্বারা ছাত্র নির্যাতন: উলঙ্গ করে ছবি তোলা ও প্রাণনাশের হুমকি

ডেস্ক রিপোর্টঃ ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে ভয়াবহ ছাত্র নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ফেসবুক পোস্টে, ভুক্তভোগী ছাত্র রাকিবুল ইসলাম তাঁর ওপর সংঘটিত পাশবিক হামলার বিবরণ তুলে ধরেন। ঘটনার বিবরণ অনুযায়ী, তাঁকে রাতের অন্ধকারে ঘর থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে উলঙ্গ করে ভিডিও ধারণ, শারীরিক নির্যাতন এবং প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়েছে।
🔹 ফেসবুক পোস্টে যা উঠে এসেছে:
রাকিবুল ইসলাম, ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ইলেকট্রিক্যাল বিভাগের ৩য় সেমিস্টারের ছাত্র, ১৮ মে তারিখে নিজের ফেসবুক পোস্টে লেখেন—
“ছাত্রদলের কিছু সিনিয়র আমার ফোন চেক করে এবং আমাকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেয়। এরপর রাত ৯টার দিকে ২৩-২৪ সেশনের ৮-১০ জন সিনিয়র ভাই এসে আমাকে জোর করে আমার রুম থেকে উঠিয়ে নিয়ে যায়। আমাকে একটি রুমে নিয়ে গিয়ে গালাগাল ও ভয়ভীতি দেখানো হয়, এরপর আমাকে সম্পূর্ণ উলঙ্গ করে ভিডিও করে। সেই ভিডিও ভাইরাল করে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়েছে।”
রাকিবুলের অভিযোগে যেসব অভিযুক্তের নাম উঠে এসেছে, তাদের মধ্যে রয়েছে:
- সৈকত (ইলেকট্রনিক্স)
- স্বাধীন (ইলেকট্রিক্যাল)
- ফয়েজ (সিভিল)
- নাফিউর রহমান (ইলেকট্রনিক্স)
- অনিক (ইলেকট্রনিক্স)
- সচিন (ইলেকট্রিক্যাল)
- মুন্না (কম্পিউটার)
- মেহেদী (মেকানিক্যাল)
- নিজুম (মেকানিক্যাল)
🔹 গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন
এই ঘটনাটি শুধু একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্র রাজনীতির চরম সহিংসতা ও দমননীতির উদাহরণ নয়, বরং এটি মানবাধিকার, ব্যক্তিগত স্বাধীনতা এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা লঙ্ঘনের একটি জঘন্য দৃষ্টান্ত। ভুক্তভোগী ছাত্র বর্তমানে চরম আতঙ্কে রয়েছেন এবং তাঁর মানসিক অবস্থাও বিপর্যস্ত বলে জানা গেছে।
🔹 প্রশাসনের নিরবতা ও নিরাপত্তাহীনতা
ঘটনার পর এখন পর্যন্ত প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো প্রকাশ্য পদক্ষেপ বা বিবৃতি পাওয়া যায়নি। ছাত্রদল সংশ্লিষ্ট অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও প্রশাসনের নিরবতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ছাত্র সমাজের বিভিন্ন অংশ।
🔹 নাগরিক সমাজ ও ছাত্রদের প্রতিক্রিয়া
সামাজিক মাধ্যমে ইতিমধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। অনেকে এই ঘটনার স্বচ্ছ তদন্ত ও বিচার দাবি করছেন। কেউ কেউ বলছেন, “যেখানে ছাত্ররা নিজের ক্যাম্পাসে নিরাপদ না, সেখানে কীভাবে শিক্ষা হবে?”