ছাত্র রাজনীতি ও সেনা হস্তক্ষেপ নিয়ে সতর্কতা, বিভাজন নয় ঐক্যের ডাক দিলেন হাসনাত আবদুল্লাহ

🗓️ ডেস্ক রিপোর্টঃ রাজনীতিতে বিভ্রান্তি ও ষড়যন্ত্রমূলক প্রচারণার বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও অধিকারকর্মী হাসনাত আবদুল্লাহ। নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক বিশ্লেষণধর্মী পোস্টে তিনি বলেন, জাতীয় ছাত্র পরিষদ (এনসিপি)-কে নির্বাচনবিরোধী প্রমাণ করার চেষ্টা একটি সচেতন কলঙ্ক প্রয়োগ। একই সঙ্গে ছাত্র উপদেষ্টাদের দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকার ইচ্ছা রয়েছে—এই ধরনের গুজব ছড়িয়ে নেতিবাচক ইমেজ তৈরির কার্যক্রমও পরিচালিত হচ্ছে।
হাসনাত আক্ষেপ করে বলেন, “এই চক্রান্ত একাধিক দিক থেকে পরিচালিত হচ্ছে—যা রাজনৈতিক ঐক্য এবং গণতন্ত্রের পথে বড় বাধা।” তিনি এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম এবং ছাত্র উপদেষ্টা মাহফুজ আলম-এর দেওয়া প্রকাশ্য বক্তব্যের উদাহরণ টেনে বলেন, “নাহিদ ইসলাম পরিষ্কারভাবে জানিয়েছেন, প্রধান উপদেষ্টা যে ডিসেম্বর থেকে জুন পর্যন্ত সময় দিয়েছেন, এনসপি সেটি সমর্থন করেছে—শুধু বিচার ও সংস্কার নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে।”
মাহফুজ আলমও এর আগেই (১০ মে) বলেছেন, “ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন হবেই।” অর্থাৎ এনসিপি ও ছাত্র উপদেষ্টাদের অবস্থান নির্বাচনমুখী ও স্পষ্ট।
✊ উপদেষ্টাদের পদত্যাগ চাওয়া অযৌক্তিক
পোস্টে হাসনাত বলেন, “এনসিপি ও ছাত্র উপদেষ্টারা অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দিয়ে গণআকাঙ্ক্ষার প্রতিনিধিত্ব করেছেন। এখন তাঁদের পদত্যাগের দাবি তুলে রাস্তা অবরোধ করা গণতান্ত্রিক শিষ্টাচার পরিপন্থী। এটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বিভ্রান্তির অংশ।”
🛡️ সেনাবাহিনীর রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ নয়
তিনি সতর্ক করে বলেন, “আমাদের অবচেতনে সেনাবাহিনীর হাতে রাজনৈতিক সালিশের ক্ষমতা তুলে দেওয়ার এক অদ্ভুত প্রবণতা গড়ে উঠছে।” অথচ বিএনপি নিজেই সেনা-রাজনীতির ভুক্তভোগী। তিনি বলেন, “আমরা এখনো ওয়ান-ইলেভেন ভুলিনি, এখনো তারেক রহমানের নির্যাতন আমাদের মনে আছে।”
হাসনাত বলেন, “সেনাবাহিনী দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের পাহারাদার। কিন্তু রাজনৈতিক সংকট সমাধানে তাদের হাতে সিদ্ধান্ত তুলে দেওয়া ঠিক হবে না। কেউ যেন আরেকটি ওয়ান-ইলেভেনের পথ প্রশস্ত করতে না পারে, সে বিষয়ে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে।”
🤝 আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের আন্দোলনে ঐক্য কাম্য
হাসনাত তার পোস্টে স্মরণ করিয়ে দেন, “আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার আন্দোলনে আমরা যাদের পাশে পেয়েছি, তাদের প্রতি আমাদের ঐতিহাসিক কৃতজ্ঞতা থাকবে। আওয়ামী লীগের বিচারের দাবিতে কেউ নির্লিপ্ত থাকলে, তা হতাশাজনক।”
তিনি আরও বলেন, “গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক চর্চা, আওয়ামী লীগের বিচার ও রাষ্ট্রীয় সংস্কার নিশ্চিত করে দ্রুত নির্বাচনের লক্ষ্যে সব রাজনৈতিক দলের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করা জরুরি।”
⚠️ বিভাজন নয়, ঐক্যই ভবিষ্যতের পথ
পোস্টের শেষদিকে তিনি হুঁশিয়ার করে বলেন, “ক্ষণস্থায়ী ফায়দা লুটতে গিয়ে ২০২৪-এর অভ্যুত্থানের পর উদ্ভূত গণআকাঙ্ক্ষাকে নষ্ট করা হলে, তা হবে একটি ঐতিহাসিক ব্যর্থতা।” তিনি আহ্বান জানান—“আমরা যেন বিভক্ত হয়ে বাইরের শক্তিকে রাজনৈতিক মাতব্বরি করার সুযোগ না দিই।”
হাসনাত আবদুল্লাহ তাঁর পোস্টে স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, “বৈদেশিক হস্তক্ষেপ ও দেশীয় ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে একটি স্থিতিশীল, গণতান্ত্রিক ও সমৃদ্ধ দেশ গড়তে আধিপত্যবাদবিরোধী এবং ফ্যাসিবাদবিরোধী সব শক্তিকে এক হতে হবে।”