এক্সক্লুসিভ

“রাষ্ট্রবিরোধী হুমকি? পুলিশের মনোবলে আঘাত করতে চায় নুর: অ্যাসোসিয়েশনের তীব্র প্রতিবাদ”

ডেস্ক রিপোর্ট | ইশতিয়াক আহমদ মাসুমঃ গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর-এর এক বক্তব্য ঘিরে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন। অভিযোগ, তিনি পুলিশের বিরুদ্ধে প্রকাশ্য মঞ্চে হুমকি প্রদান করেছেন—যা রাষ্ট্রীয় শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর প্রতি সরাসরি হুমকি এবং ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।

শনিবার (২৪ মে) বাংলাদেশ পুলিশ ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার মোঃ আনিসুজ্জামান, পিপিএম এবং বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ড. মোঃ নাজমুল করিম খান স্বাক্ষরিত এক যৌথ বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।


📹 বিতর্কিত বক্তব্য: কী বলেছেন ভিপি নুর?

২২ মে এক গণজমায়েতে দেওয়া বক্তব্যে নুরুল হক নুর বলেন:

“এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পুলিশ আমাদের গায়ে হাত দিলে ঐ হাত আর আস্ত রাখব না। পরিষ্কার কথা, যাত্রাবাড়ীতে যেমনভাবে জনতা পুলিশকে মেরে ব্রিজে ঝুলিয়ে রেখেছিল, এই গণঅধিকার পরিষদের কোনো নেতাকর্মীর গায়ে হাত তোলা হলে ঐভাবে ঝুলিয়ে দেওয়া হবে।”

এই বক্তব্যের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে তা বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের নজরে আসে।


⚖️ পুলিশের বিবৃতি: হুমকি ও রাষ্ট্রবিরোধী আচরণ

বিবৃতিতে পুলিশ পরিষ্কার করে জানায়—

  • এটি একটি প্রকাশ্য হুমকি, যা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মনোবলে আঘাত হানার চেষ্টা।
  • এ ধরনের বক্তব্য ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে গণ্য হয়।
  • গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থায় এ ধরনের বিদ্বেষমূলক ও শিষ্টাচারবহির্ভূত বক্তব্য কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
  • রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বাংলাদেশ পুলিশ অক্লান্ত পরিশ্রম করে চলেছে, এবং এই সময়ে এমন বক্তব্য মূলত বাহিনীকে দুর্বল করার সুপরিকল্পিত প্রয়াস।

🔍 বিশেষ অভিযোগ: উদ্দেশ্যপ্রণোদিত উসকানি

পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন মনে করে—

“এই বক্তব্য কোনো কাকতালীয় আবেগ নয় বরং এটি কোনো বিশেষ মহলের স্বার্থসিদ্ধির কৌশল। পুলিশ বাহিনীর মনোবল ভেঙে দেওয়ার জন্য পরিকল্পিতভাবে দেওয়া হয়েছে এমন মন্তব্য।”


🕊️ পুলিশের বার্তা: গঠনমূলক সমালোচনা চাই, হুমকি নয়

বিবৃতিতে আরও বলা হয়—

  • রাজনৈতিক নেতাদের থেকে গঠনমূলক সমালোচনা ও দায়িত্বশীল আচরণ প্রত্যাশিত।
  • সামাজিক শান্তি বিনষ্টকারী বক্তব্য দেশের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবে।

🧭 পর্যালোচনা: উত্তপ্ত রাজনীতিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নতুন চাপ

বাংলাদেশে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রেক্ষাপটে এই বক্তব্য এবং পুলিশের প্রতিক্রিয়া আরও একটি বড় উত্তেজনার ইঙ্গিত দিচ্ছে।
সরকারবিরোধী আন্দোলন ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কঠোর অবস্থানের মধ্যেই পুলিশের বিরুদ্ধে প্রকাশ্য হুমকি রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে আরও জটিল ও সংঘাতপূর্ণ করে তুলতে পারে।


📝শান্তি নাকি সংঘাত—নেতৃত্বের সামনে কঠিন প্রশ্ন

বর্তমান প্রেক্ষাপটে রাজনৈতিক ভাষার দায়িত্বশীলতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছে। পুলিশ বাহিনীর মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে এমন বক্তব্য শুধু উত্তেজনা নয়, সামাজিক ও আইনি পরিণতির দিক থেকেও গভীর প্রভাব ফেলতে পারে।

বাংলাদেশ এখন এক সংকটময় সন্ধিক্ষণে। দায়িত্বশীল নেতার উচিত হওয়া উচিত অবস্থান দৃঢ় রাখা, কিন্তু ভাষায় উস্কানি না দেওয়া—কারণ একটি বাক্য কখনো কখনো পুরো জাতিকে নাড়িয়ে দিতে পারে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button