নোয়াপাড়ায় সওজের জায়গা দখল হাত বদলালেও উদ্ধারে নেই গতি!

মুহাম্মদ জুবাইরঃ রাউজান সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের একাধিক জায়গা দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করার অভিযোগ উঠেছে।গত ষোল বছরে ফ্যাসিস সরকারের দখলবাজদের হাতে থাকা সওজের জায়গা পাঁচ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র–জনতার আন্দোলনে সরকার পতনের পর দখলদারিত্বের হাত বদলালেও পরিবর্তন হয়নি দখনের ধরণ উল্টৌ দৃশ্যমান স্থাপনা নির্মাণে ব্যস্ত নতুন দখলদাররা।
গতকাল রবিবার সরেজমিনে দেখা যায়, চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার নোয়াপাড়াস্থ কসমিক হাসপাতালের উল্টো পাশে সওজের জায়গা দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে। কেউ টিনের আবার কেউ পাকা স্থাপনা নির্মাণ করছে। ইতোমধ্যে অনেক স্থাপনার কাজ শেষ হয়েছে। আবার কিছু স্থাপনার কাজ চলমান রয়েছে।
জানাযায়, চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার নোয়াপাড়াস্থ কসমিক হাসপাতালের উল্টো পাশে সড়ক ও জনপথ (সওজ) এর বিশাল জায়গা একসময় দখলে ছিল ফ্যাসিস্ট সরকারের দোষর রাউজান দক্ষিণ যুবলীগের সহ-সভাপতি জাহাঙ্গীর আলমের দখলে। পাঁচ আগস্ট ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের পর চত্বুর জাহাঙ্গীর আলম সওজ এর দখলী সেই জায়গায় বিক্রি করে দেন সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান খায়ের আহম্মেদের পুত্র নাজিমের কাছে। নাজিম জাগয়া দখলে নিয়ে কর্তৃপক্ষের চোখ ফাঁকি দিয়ে স্থাপনা নির্মাণ করছেন। সওজের জায়গা দখল করে স্থাপনা নির্মাণকারী নাজিম প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের ব্যাপারে কেউ মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেন না। এতে বেদখল হয়ে যাচ্ছে সরকারি জমি। বাংলাদেশ সড়ক ও মহাসড়ক আইন অনুযায়ী–কোন সড়ক বা মহাসড়কের ৩০ ফুটের মধ্যে কোন স্থাপনা নির্মাণ করা যাবে না। কিন্তু তিনি আইনের তোয়াক্কা না করে অবৈধ স্থাপনা গড়ে তুলছেন।
নাজিমকে সওজ এর জায়গায় দখল করে স্থাপনা নির্মাণের বিষয় নিয়ে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি দখলের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন আমি আমাদের নিজস্ব জায়গাতে স্থাপনা নির্মাণ করছি। এটি দশ বছর পূর্বে আমাদের কেনা এখানে দখলের প্রশ্ন উঠে না।
তিনি জাহাঙ্গীর আলমের কাজ থেকে দখলে নেওয়ার বিষয়টিও সম্পূর্ণ অস্বীকার করে আরো বলেন আমি জাহাঙ্গীর আলমকে এলাকার ছেলে হিসেবে চিনি এতটুকু এরবাইরে জায়গাটি আমি তাঁর থেকে নেয়নি।
অবশ্যই প্রতিবেদকের পাল্টাপাল্টি প্রশ্নে নাজিম সওজ এর পাঁচ থেকে সাত ফিট জায়গা ভরাট ও স্থাপনা নির্মাণের কথা স্বীকার করেন।
সওজ এর জায়গা দখল ও বিক্রি সম্পর্কে রাউজান দক্ষিণ যুবলীগের সহ-সভাপতি জাহাঙ্গীর আলমের মুঠোফোনে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
এদিকে স্থানীয়রা জানান, রাউজান মহাসড়ক এমনিতেই সরু ও অত্যাধিক বাঁক থাকায় প্রতিনিয়ত সড়ক দুর্ঘটনা হচ্ছে। তার উপর মহাসড়কের পাশে কসমিক হাসপাতালের বিপরীতে সওজের জায়গা দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করা কোন ভাবেই কাম্য নই। প্রশাসনের উচিত অভিযান চালিয়ে মহাসড়ক উভয় পাশে সওজের জায়গা দখলমুক্ত করে নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করা। এছাড়া সড়ক ও জনপথ বিভাগের জায়গা দখল করে নতুন নতুন স্থাপনা নির্মাণের ফলে সড়ক সংকীর্ণ হয়ে যাওয়ায় যে কোন সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা।
চট্টগ্রাম উপ সহকারী প্রকৌশলী ভুট্টু সরকার জানান, সরকারি জায়গা দখল করে যেকোন স্থাপনা নির্মাণ করা অবৈধ। আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। রাউজান উপজেলার নোয়াপাড়াস্থ কসমিক হাসপাতালের উল্টো পাশে সড়ক ও জনপথ (সওজ) জায়গা দখলের বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। এখানে মূল সড়কের সেন্টার পয়েন্ট থেকে দেড়শত ফিড জায়গা সড়ক ও জনপথের। এই জায়গা কেউ নিজের বলে দাবী করলে তা ভিত্তিহীন। উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতা নিয়ে সওজের জায়গায় নির্মিত অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে।