জামায়াত নেতাদের ফাঁসির রায়: এসকে সিনহাকে পিস্তল ঠেকিয়ে লিখতে বাধ্য করা হয়েছিল

একজন বিচারকের নিজের বক্তব্য…
যে দিন আমার বন্ধু সুরেন্দ্র কুমার সিনহার মেয়ের মাথায় নাইন এমএম পিস্তল ঠেকিয়ে জামায়াতের নেতাদের রায় নেওয়া হয়। সেদিন রাত আনুমানিক ২ টা বাজে সিনহা আমাকে কল দিয়ে পুরো ঘটনাটা বলে এবং সে আফসোস করে আমাকে বলে “বন্ধু আজ তারা পুরো মুসলিম জাতির কাছে আমাকে ভিলেন বানিয়ে দিয়েছে।” তখন আমি উপলব্ধি করতে পেরেছি তাদের পরের টার্গেট আমি। আমার মেয়েটা ছোট, তখন সে ক্লাস নাইনে পড়ে; তাই এ নিয়ে আমি আমার মেয়েকে সাবধান করতে গিয়েছিলাম। তখন আমার এ-ই ছোট্ট মেয়েটি আমাকে বলে..
‘বাবা আমি জানি তুমি আমাকে নিয়ে খুব টেনশনে আছো। বাবা আমি এটাও জানি সিনহা আঙ্কেলের মেয়ের মতো কেউ হয়তো আমার মাথায়ও পিস্তল ঠেকিয়ে তোমাকে অন্যায় রায় লিখতে বাধ্য করতে পারে।
কিন্তু বাবা জানো.? আমার স্কুলের প্রিন্সিপ্যাল যখন সবার সামনে এসে তোমার প্রশংসা করতে থাকে তখন আমার এত ভালো লাগে যে বলে বোঝাতে পারব না।
বাবা কখনো যদি এমন হয় তুমি রায় লিখার সময় কেউ আমার মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে তোমাকে তাদের ইচ্ছে মতো রায় লিখতে বলে তুমি তাদের কথা শুনবে না।
বাবা তুমি তোমার রায়’ই লিখবে। যদি তখন ওই খারাপ লোকেরা আমাকে মেরে ফেলে তাহলে তখন তো আমি আল্লার কাছে চলে যাব। আর যখন আল্লাহর কাছে থাকব তখন আল্লাহকে আমি বলবো আল্লাহ যেন তোমার হায়াত বাড়িয়ে দেন এবং তুমি যেন তাদের বিচার করতে পারো।’
আমি খুব শক্ত মনের মানুষ আমার চোখের পানি কখনো আমার সহধর্মিণীও দেখেনি কিন্তু সেদিন আমার মেয়ের মুখে এ-ই কথা টা শুনে ভাবতে লাগলাম জীবনে কোন ভালো কাজের প্রতিফল হিসেবে আল্লাহ আমাকে এই মেয়ে দিলেন।..আর নিজের অজান্তেই চোখের পানি বেরিয়ে আসে অনবরত।
বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের বিচারক জনাব এম রহমান ফেসবুকে স্ট্যাটাস।
এসব ঘটনা জানার পরও বিচারকদের জবানবন্দী পাওয়ার পরও এস কে সিনহার লেখা বই পড়ার পরও যেসব ইন্ডিয়ান রাজাকাররা জামাতকে এখনো যুদ্ধাপরাধী মনে করে তারা আসলেই ইন্ডিয়ান রাজাকার।