ফজলে করিমসহ সাবেক তিন সংসদ সদস্যকে হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়েছেন আদালত

মোহাম্মদ জুবাইরঃ চট্টগ্রামে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গুলিতে দোকানকর্মী নিহতের ঘটনায় করা মামলায় কারাবন্দি চট্টগ্রামের সাবেক তিন এমপিসহ ১০ নেতাকে গ্রেপ্তার দেখানোর (শ্যোন অ্যারেস্ট) নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। পুলিশের করা আবেদনের ওপর শুনানি শেষে গতকাল বুধবার চট্টগ্রামের চতুর্থ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মোহাম্মদ মোস্তফা শুনানি শেষে এই আদেশ দেন।
তদন্তে ঘটনার সঙ্গে তাদের সম্পৃক্ততা ও আন্দোলন দমাতে অর্থায়নের তথ্য পাওয়ায় জিজ্ঞাসাবাদের স্বার্থে গ্রেপ্তার দেখানো প্রয়োজন বলে আবেদনে উল্লেখ করা হয়। ১০ জনের মধ্যে ফজলে করিম চৌধুরী ছাড়া বাকিদের শুনানির সময় আদালতে হাজির করা হয়। কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে থাকায় তাঁকে ভার্চুয়ালি শুনানিতে যুক্ত করা হয়।
অন্য আসামিরা হলেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক কাউন্সিলর সলিম উল্ল্যাহ, রেখা আলম চৌধুরী, আওয়ামী লীগ নেত্রী জিনাত সোহানা চৌধুরী, মো. আকবর আলী, রেজাউল হাসান সবুজ ও মো. আবুল বশর।
আদালত সূত্র জানায়, গত বছরের ৩ আগস্ট সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে বহদ্দারহাট এলাকার কাঁচাবাজার থেকে বাসায় ফেরার পথে সড়ক অবরোধ করে নাশকতা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের লোকজন এলোপাতাড়ি গুলি চালায়। ৭টা ২৫ মিনিটের দিকে গুলিবিদ্ধ হন শহিদুল ইসলাম। পরে একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। ১৯ আগস্ট মামলাটি চান্দগাঁও থানায় করেন নিহত ব্যক্তির ভাই। তিনি পেশায় একজন অটোরিকশাচালক ছিলেন।
মহানগর আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর রায়হানুল ওয়াজেদ চৌধুরী জানান, শহিদুল নিহতের ঘটনায় করা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা চান্দগাঁও থানার এসআই নুরুল হক এজাহারবহির্ভূত ১০ জনকে গ্রেপ্তার দেখানোর জন্য আদালতে আবেদন করেন। আদালত শুনানি শেষে শ্যোন অ্যারেস্টের আদেশ দিয়েছেন।
গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদনে চান্দগাঁও থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নুরুল হাকিম উল্লেখ করেছেন, ছাত্র–জনতার শান্তিপূর্ণ আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও সাবেক সরকারদলীয় বিভিন্ন সংগঠনের নেতা-কর্মীরা সরাসরি ও পরোক্ষভাবে জড়িত ছিলেন। গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করা আসামিরা মামলার অন্য আসামিদের সঙ্গে মিলে নাশকতা চালিয়েছেন—এমন সাক্ষ্যপ্রমাণ পাচ্ছেন তিনি। আসামিরা ঘটনার আগেও এবং ঘটনাকালে ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন এবং অর্থায়নের মাধ্যমে এতে জড়িত থাকার প্রমাণও পাওয়া গেছে।