সন্ত্রাস থেকে সাংবাদিক, কে এই রাজু?
শহিদুল ইসলাম রাজু (৫৩) ,পিতাঃ মৃত আব্দুল কাদের হাওলাদার, মাতাঃ আম্বিয়া খাতুন স্থায়ী ঠিকানাঃ সাং ঃ তারাবুনিয়া , উপজেলা ঃ রাজাপুর, জেলাঃ ঝালকাঠি। অস্থায়ী ঠিকানা ঃ আল-ফালাহ মসজিদ সংলগ্ন কাজলা নয়ানগর, থানা : যাত্রাবাড়ি , জেলা : ঢাকা। শহিদুল ইসলাম রাজু ১৯৯৬ সাল হতে শীর্ষ সন্ত্রাসী পিচ্চি হান্নান যখন বাংলাদেশের জন্য হুমকি ও ত্রাসে পরিনত হয় তখন থেকে পিচ্চি হান্নানের ক্যাশিয়ার, যে কাওরান বাজার এলাকায় চাঁদা উত্তোলন সহ সন্ত্রাস পিচ্চি হান্নানের শুট্যার রাজু হিসেবে পরিচয় পায়, বর্তমানের এই কথিত সাংবাদিক রাজু ওরফে শুট্যার রাজু ওরফে সোর্স রাজু। ২০০৪ সালে ২৬ জুন পিচ্চি হান্নান র্যাবের সাথে বন্দুক যুদ্ধে নিহত হবার পর কাওরান বাজার এলাকা থেকে বিপুল পরিমান মাদক, অস্ত্র ও কয়েকরাউন্ড গুলি সহ এই শুট্যার রাজু গ্রেফতার হয়। দীর্ঘ ৫-৭ বছর কারাজীবন শেষ করে বেরিয়ে এসে এই সন্ত্রাস রাজু অপরাধ জগতের আরেক কুখ্যাত নাম আগুরীর সাথে দাম্পত্য জীবন শুর করে। যে আগুরীর নাম প্রশাসন ও আদালত পাড়ায় সকলের জানা। কারাগারে থাকা অবস্থায় তার পুর্বের স্ত্রী ও দুই সন্তান মাহদী ও মনি এই সন্ত্রাস রাজুকে ছেড়ে চলে যায়। বর্তমানে তার প্রথম স্ত্রী মগবাজারে তার পরবর্তী স্বামীকে নিয়ে বসবাস করছে। তার ছেলে মাহাদী তার স্ত্রী সন্তান নিয়ে মিরপুর ২ এ বসবাস করে আসছে। গোপনে একাধিক বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হবার সুত্র ধরে মাদক ও দেহ ব্যবস্যার কুখ্যাত সম্রাজ্ঞি আগুরীর সাথেও তার সম্পর্কের অবনতী হয় এবং একাধিক বিবাহ বন্ধন সহ বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে এই রাজু। আগুরীর বিভিন্ন রকম হুমকি ও নিজের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডকে গোপন করতে আত্মপরিচয় পরিবর্তন করে যাত্রাবাড়ীতে গিয়ে ফুটপাতে প্লাস্টিক ব্যবস্যা ও পুলিশের সোর্স হিসেবে যাত্রা শুর করে রাজু। সোর্স থাকা অবস্থায় বিভিন্ন সময়ে পুলিশের উদ্ধার কৃত মাদকদ্রব্য বলে নিজেই গোপনে যাত্রাবাড়ী সহ আসে পাশের এলাকায় মাদক ব্যবস্যা করত। এখনো ঞৎঁব ঈধষষবৎ এ তার মোবাইল নাম্বার দিয়ে সার্স করলে সোর্স রাজু লেখা ভেসে উঠে। এভাবে আত্মগোপন করলেও চরিত্র শুধরানোর বিন্দু মাত্র চেষ্টা ছিলো না এই সন্ত্রাস রাজুর। ফলশুতিতে যাত্রাবড়ীতে চুরি, ছিনতাই, মারামারি ও চাঁদাবাজি সহ একাধিক অপকর্ম ঘটিয়ে বিভিন্ন সময় কয়েকটি মামলার আসামী হয় এই শহিদুল ইসলাম রাজু ওরফে শুট্যার রাজু ওরফে সোর্স রাজু। যাত্রাবাড়ি থানায় যাহার মামলা নাম্বার ১। এফ আই আর ৭২/১১৬৭, জি আর নং ১১৬৭/২০২১ ধারা; ১৪৩/৩৪১/৩২৩/৩৭৯/৫০৬ পেনাল কোড- ১৮৬০ তারিখঃ ১৭ অক্টোবর ২০২১ ও ২। এফ আই আর ২৭/১০১৯, জি আর নং ১০১৯/২০২২ তারিখ ০৪ আগস্ট ২০২২ ধারা ৩৮০ পেনাল কোড-১৮৬০। পরবর্তীতে অপরাধের ভিন্ন ধারা অর্জনের লক্ষ্যে ২০২২ সালে দৈনিক সবুজ বাংলাদেশ পত্রিকার রিপোর্টার এর কার্ড নিয়ে রাতারাতি বনে যায় সাংবাদিক। একজন সাক্ষরজ্ঞান সম্পন্ন ব্যাক্তি যার প্রাতিষ্ঠানিক কোনো শিক্ষাগত যোগ্যতা নেই সে কি করে স্টাফ রিপোর্টার পরিচয় দেয় সে বিষয়েই সকলের প্রশ্ন?
সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে শুর হয় রাজুর অভিনব কায়দায় পতিতালয় পরিচালনা, হানিট্র্যাপ, চাঁদাবাজি সহ মাদক ব্যবসায়ীকে মদদ দেওয়ার অধ্যায়।
এই সকল অপকর্মের জের ধরে ২০২৪ সালের ২০ মার্চ জাতীয় দৈনিক ‘সমকাল’ পত্রিকায় তারা সাংবাদিক নন সাংঘাতিক শিরোনামে এই শহিদুল ইসলাম রাজুর ছবি সহ নিউজ হয়। একই সাথে কাজলায় মাদক ব্যবসায়ী নাজমার থেকে মোটা অংকের চাঁদা আদায় সহ তাকে মারপিট করার অপরাধে ঢাকা বিজ্ঞ হাকিম আদালতে নাজমা বেগম বাদী হয়ে রাজুকে ১ নং আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেন যাহার মামলা নং /২৪ ধারা ৩২৩/৩৭৯/৩৮৫/৩৪ বর্তমানে মামলাটি পিবিআই এ তদন্তাধীন রয়েছে। এ ছাড়াও কাজলা নয়ানগর আল-ফালাহ মসজিদ রোডে মেগী বেকারী সংলগ্ন একটি বাসার ২য় তলার একটি ফ্ল্যাটে শিরীন ও পাভেল নামের জনৈক ব্যাক্তিদ্বয়কে দিয়ে পতিতালয় পরিচালনা করে এই কথিত সাংবাদিক রাজু। এখানে বিভিন্ন সময়ে আগত ব্যক্তিদের নগ্ন ভিডিও চিত্র ধারন করে, মারপিট ও ভয়ভীতি দেখিয়ে মুক্তিপন আদায় করা সহ রাজু এবং তার সহযোগী শিরীন ও পাভেলের যোগসাজোসে ছিনিয়ে নেওয়া হয় ভুক্তভুগীদের কাছে থাকা অর্থ মোবাইল সহ মূল্যবান জিনিসপত্র। রাজুর বিরূদ্ধে অভিযোগ রয়েছে কখনো কখনো এই মিনি পতিতালয়ে ভুক্তোভুগিকে জিম্মি করে বিকাশের মাধ্যমে পরিবার থেকেও আদায় করা হয় মোটা অংকের টাকা। উল্লেখ্য, বিগত ৫ই আগস্ট পরবর্তী সময়ে উক্ত বাসাতেই জনৈক এক ব্যাক্তিকে আটকে রেখে নগ্ন চিত্র ধারন করে ছাত্র সমন্বয়কদের হাতে তুলে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে মারপিট করে মোটা অংকের চাঁদা আদায় করে এই রাজু গং। এ ছাড়াও অনুসন্ধানের ভিত্তিতে জানা যায় রাজুর ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি যাহার মডেল নাম্বার ঙঢ়ঢ়ড় ৎবহড় ৮ঞ, যার রঙ কমলা। এই মোবাইলটিও উক্ত স্থান থেকে হানিট্র্যাপ এর মাধ্যমে ছিনিয়ে নেওয়া যার কোনো বৈধ কাগজ পত্র দেখানো চাঁদাবাজ রাজুর পক্ষে সম্ভব নয়।
এ ছাড়াও কথিত সাংবাদিক রাজু তথা পুর্বের সন্ত্রাস রাজুর বিরূদ্ধে রয়েছে একাধিক চাঁদাবাজি ও মিথ্যা মামলা দিয়ে সাধারন মানুষকে হয়রানীর অভিযোগ।
টাকার বিনিময়ে বিভিন্ন সময় একাধিক মামলার সাক্ষী ও বাদী হয়ে থাকে এই শহীদুল ইসলাম রাজু। মামলাবাজ এই রাজু ৫ই আগস্ট পরবর্তী সময়ে নিজের পুর্বের স্থল কাওরানবাজারে আধিপত্য বিস্তার ও হয়রানী সহ টাকা আদায়ের উদ্দেশ্যে তেজগাঁও ও যাত্রাবাড়ী এলাকায় একাধিক মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন ও মনগড়া গল্প সাজিয়ে একাধিক ব্যক্তিদের নামে মামলা দেওয়ার প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গিয়েছে।
সন্ত্রাস থেকে সাংবাদিক, কে এই রাজু? যাত্রাবাড়ী এলাকার স্থানীয় সচেতন মহল জানান, প্রতিনিয়ত রাজুর এই অপকর্মকে ঘিরে এলাকাবাসী এক অজানা আতংকে থাকেন। যে কোনো সময় অর্থের প্রয়োজনে নিরীহ জনগনকে ভয়ভীতি দেখানো ও বিভিন্ন ষড়যন্ত্রে ফাসানো যেন রাজুর নিত্য দিনের কাজ। অচিরেই তাকে আইনের আওতায় এনে যথাযথ শাস্তির ব্যবস্থা করা অত্যন্ত প্রয়োজন বলে মনে করেন এলাকাবাসী।