আইন, ও বিচাররাজনীতি

অভিনব উপায়ে নিয়োগ এমপিওতে মন্নান মাস্টারের প্রতারণা

নিজেকে ক্ষমতাধর হিসেবে জাহির করে নিয়োগ এমপিওতে করতেন প্রতারণা। ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচারের আমলে প্রভাব খাটিয়ে মানুষের সাথে অর্থনৈতিক প্রতারণা ছিল তার নেশা। সকল দপ্তর যেন তার হাতের মুঠোয় ছিল। কোন নিয়ম-নীতির পরোয়া না করে  অনিয়মের স্বর্গে বাস করতেন তিনি। এই প্রশ্ন এখন সবার মুখে মুখে। যার অনিয়ম-দুর্নীতির অনেক ফিরিস্তি জমা রয়েছে ভুক্তভোগীর সাথে কথোকপথন রেকর্ডিং এ। কৌশলি ভূমিকায় সম্পূর্ণ ধরাছোঁয়ার বাইরে করতেন এমন কাজ। প্রমাণ ছাড়া এসব কাজে তার বিরুদ্ধে কেউ ব্যবস্থা নেওয়ার সাহস পেত না। খুব সতর্কতার সহিত গোপণীয়ভাবে ঠান্ডা মাথায় করতেন এসব কাজ।কথায় আছে ঠান্ডা মাথার খুনি। এমনই একজন শিক্ষক আব্দুল মান্নান (৫৫) ওরফে মন্নান মাস্টার। চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলা বদরপুর আলিম মাদ্রাসায় ইবতেদায়ী জুনিয়র শিক্ষক পদে চাকুরী করেন তিনি।

ভূয়া নিয়োগ বাণিজ্যের স্বীকার ভুক্তভোগী স্থানীয় সৌরভ সংবাদকর্মীকে জানান , বদরপুর আলিম মাদ্রাসায় অফিস সহকারী পদে চাকুরী দিবে বলে গোপণীয়ভাবে আমার সাথে মৌখিক ৪ লক্ষ টাকা চুক্তি করে। পরে সে আমার কাছ থেকে অগ্রিম ৭০০০০/- সত্তর হাজার টাকা নিয়েছে। বাকি টাকা চাকুরী হলে নিবে। ৫ই আগস্টের পরে যখন কমিটি বাতিল ও নিয়োগ প্রক্রিয়ায় পরিবর্তন দেখতে পাই তখন টাকা আদায় করার চেষ্টা করি। কিন্তু উপযুক্ত প্রমাণ না থাকায় তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারছি না।

নিয়োগের কথা বলে টাকা লেনদেনের প্রত্যক্ষদর্শী নাসরুল্লাহ জানান, নিয়োগ দিবে বলে ৭০ হাজার টাকা মন্নান মাস্টারের সাথে লেনদেন হয়েছে এ বিষয়ে আমরা সম্পূর্ণ অবগত। সে অস্বীকার করার কোনো সুযোগ নেই। আমি সৌরভের পরিবারকে বলেছি মন্নান মাস্টারের বসে টাকা আদায় করার জন্য।

দূর থেকে নিয়োগ পাওয়া শিক্ষক হাসান রাজীব বলেন, বদরপুর আলিম মাদ্রাসায় আমার যোগদানের আগে আমার নাম্বার সংগ্রহ করে প্রায় সময় আমাকে কল দিয়ে বিরক্ত করতো মন্নান মাস্টার। এমপিও বিল ধরানের কথা বলে সে প্রতারণা করে আমার কাছ থেকে ১০০০০/- দশ হাজার টাকা নেয়। দূরের শিক্ষক বলে তার কাছ থেকে এই টাকা আদায় করার সাহস পাইনি, বিশেষ করে সে আওয়ালীগ করায়। ৫ই আগস্টের পরেতো সে ধাওয়া খাওয়ার কথা সে কি এখন ঐ প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আছে। সে আমার সাথে আরো অনেক কিছু করেছে আমি এগুলো বলতে চাই না। আমি এখন আমার জেলার একটি প্রতিষ্ঠানে আছি খুব শান্তিতে আছি।
এ বিষয়ে কয়েকজন শিক্ষকের সাথে কথা বললে তারা জানান, মন্নান মাস্টারের সাথে হাসান রাজীব স্যারের এমপিও বিষয়ে অর্থনৈতিক লেনদেন হয়েছে এটা আমরা জানি। এটা একটা সম্পূর্ন প্রতারণা। পূর্ব হতেই অত্র প্রতিষ্ঠানে প্রভাব খাটিয়ে তিনি এ কাজগুলো করে আসছেন।
এছাড়াও মন্নান মাস্টার নতুন শিক্ষক নিয়োগ হলে কৌশলে তার সাথে সম্পর্ক তৈরী করে ধারের নামে টাকা হাতিয়ে নিতেন। অফিসিয়াল কাজে সহযোগিতার নামেও অর্থনৈতিক সুবিধা নিতেন শিক্ষক-কর্মচারীদের কাছ থেকে। আর এসব কাজে মন্নান মাস্টার অধ্যক্ষ, রাজনৈতিক নেতা ও কমিটির কিছু লোককে ব্যবহার করতেন।

গোপন তথ্যের ভিত্তিতে এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়, নিয়োগ ও এমপিও বিষয়ে তার প্রতারণামূলক কর্মকান্ড পূর্ব হতেই হয়ে আসছে। মন্নান মাস্টার একজন টাউট চিটার টাইপের মাস্টার হিসেবেই এলাকাতে পরিচিত। সে রাজনৈতিক নেতাদের সাথে যোগসাজশ করে চলতো। বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে মানুষের কাছ থেকে টাকা আদায় করা তার নেশা। এই টাকা আর তার কাছ থেকে সহজে পাওয়া যেত না। এরকম একজন লোক কিভাবে শিক্ষক হয় আমাদের বুঝে আসে না। আমরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এই ধরনের শিক্ষক চাই না। পূর্ব হতে হয়ে আসা তার এই অভনব প্রতারণা ও কর্মকান্ডের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মন্নান মাস্টার বলেন, আমার বিরুদ্ধে সব অভিযোগ মিথ্যা।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button