চট্টগ্রাম বিভাগ

সাংবাদিক পত্নীর চিকিৎসায় অবহেলা

মুহাম্মদ জুবাইর: নোয়াখালীর আল রাজি প্রাইভেট হাসপাতালের বিরুদ্ধে সিভিল সার্জন কায্যালয় সহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ   নোয়াখালীর আল রাজি হাসপাতালের বিরুদ্ধে এক সাংবাদিক তার স্ত্রীর   চিকিৎসায় নানা অভিযোগ

তুলেছেন। এরি সাথে তিনি  তার স্ত্রীর ভুল চিকিৎসা ও হাসপাতালের নানা অনিয়মের সুনির্দিষ্ট চিত্র তুলে ধরে 

 সিভিল সার্জন সহ বিভিন্ন দপ্তরে বেশ কয়েকটি অভিযোগ করেন।

 শহিদুল্লা নামে এই সাংবাদিক তার সন্তান সম্ভাব্য পত্নী রোকেয়া বেগমকে অত্যন্ত মমুর্ষ অবস্থায় ২০ এপ্রিল রাত ২ টা ৩০ মিনিটে ভর্তি করান  নোয়াখালীর মাজদী সদরের আল রাজি হাসপাতাল।

হাপাতালের ভর্তির পর ভোর ৬ টার দিকে আল রাজি হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের চিকিৎসক ডা ইয়ামুন সানজিদার তত্ত্বাবধানে অপারেশন শুরু হয় রোকেয়া বেগমের। অপারেশনের ৪ ঘণ্টা পরেও রোকেয়া বেগমের অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হওয়ায় বিষয়টি সংশ্লিষ্ট সকলকে অবহিত করলে তার অবগাঢ় সুরে বলেন সন্ধ্যা নাগাদ সময় লাগবে। এরপর সব স্বাভাবিক হয়ে আসবে। এই অবস্থায় অতিক্রম করার পর সাংবাদিক পত্নীর অবস্থা ক্রমেই খারাপ হতে থাকে ও পুরো শরীর ফুলে উঠে।  আবারও সাংবাদিক শহিদুল বিষয়টি কর্তব্যরতদের অবহিত করলে তার রোগীর অবস্থা বেগতিক দেখে মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার হরিবশন  সরকারকে এনে রোকেয়া বেগমের চিকিৎসা ব্যবস্থা নেন। ডাক্তার হরিবশন  সরকার রোগীর অবস্থা ও কাগজপত্র দেখে অনেকটা ক্ষু্দ্ধ হয়ে সংশ্লিষ্ট সকলকে বকাবকি করেন। এরপর আরো ২দিন রোকেয়া বেগম

আল রাজি হাসপাতালে থাকলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রীতিমতো চিকিৎসার নামে চলান অনিয়ম। সাংবাদিক শহিদুলের ক্যামেরায় ধারণকৃত এক ভিডিও চিত্রে দেখা যায় রোকেয়া বেগমের ক্ষতস্থানে ভায়োডিন ছাড়া হেক্সিসল,  স্পিট দিয়ে ওয়াশ করছেন আল রাজি হাসপাতালের একজন ক্লিনার সাথে ছিলেন এতজন পুরুষ অ্যাসিস্ট্যান্ট । এরিসাথে রোকেয়া বেগম এজন মহিলা হওয়ার পরেও অত্যন্ত স্পর্শ কাতর জায়গায় ড্রেসিং করছেন একজন পুরুষ যা কোন ভাবে মানতে পারেনি সাংবাদিক শহিদুল্লা।

আবার রোকেয়া বেগম আল রাজি হাসপাতালে ভর্তির তৃতীয় দিনে হাসপাতাল থেকে সেবনের জন্য দেওয়া হয় ফুসিট প্লাস ৪০ নামক ট্যাবলেট। যা অর্ধেক করে দিনে  দুই বার সেবনের কথা থাকলেও অর্ধেক সেবনের পর রোকেয়া বেগম অবস্থা একেবারে মৃত্যুর দিকে ঝুঁকে পরে।

রোকেয়া বেগমের সংকটাবস্থা সম্পর্কে  সার্জারি বিভাগের চিকিৎসক ডা ইয়ামুন সানজিদারকে অবহিত করলে তিনি ফুসিট প্লাস ৪০ নামক ট্যাবলেট সেবনে বন্ধ রাখতে বলেন।  হাসপাতালের ৪র্থ দিনে রোকেয়া বেগমের রক্তক্ষরণ ও পানি বন্ধ না হলেও অত্যত্ন মুমূর্ষু   অবস্থায় রোকেয়া বেগমকে ছাড়পত্র দেন আল রাজি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।  এতে অত্যন্ত হতভম্ব হয়ে স্ত্রী রোকেয়া বেগমকে বাসায় নিয়ে যান শহিদুল্লা। বাসায় আনার পর থেকে আরো খারাপ হতে থাকে রোকেয়া বেগমের অবস্থা। বাসায় নেওয়ায় ৫ দিনের মাথায় আবারো রোকেয়া বেপমকে ভর্তি করা হয় নোয়াখালীর আল রাজি হাসপাতালে।

এবারো রোকেয়া বেগমকের চিকিৎসায় নানা অবহেলা ও অনিয়ম চলে আল রাজি হাসপাতালে। রোকেয়া বেগমের অবস্থা আরো একবার সংকটাপন্ন হলে হাসপাত কর্তৃপক্ষ ডেকে নেন মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার হরিবশন  সরকারকে। তিনি রোগীর ক্ষতস্থানের ৩ টি সেলাই কেটে জানান ভিতরে ইনফেকশন হয়েছে রোগীর। তিনি উমান এলভূমিন ২০০ নামে একটি ইনজেকশন পুশ করেন এবং কিছু মেডিসিন লিখে চলে যান। এরপর থেকে রোকেয়া বেগমকের অবস্থা ক্রমেই খারাপের দিকে যেতে থাকে। বিষয়টি নিয়ে শহিদুল্লা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে অবহিতন করলে তারা রোকেয়া বেগমকে বাসায় নিয়ে  যেতে বলেন।

এদিকে সাংবাদিক শহিদুল্লা তার পত্নীকে ভুল চিকিৎসা ও হাসপাতালের নানা অনিয়ম নিয়ে মাইজদি সুধারাম মডেল থানায় ডাক্তার ইয়ামুন সানজিদাসহ ছয় জনের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ করেন। সাথে সাথে তিন নোয়াখালী সিভিল সার্জন কায্যালয়সহ বেশ কয়েকটি দপ্তরে অভিযোগ করেন।

ড্রেসিং, ইনফেকশন ও চিকিৎসায় অনিয়ম বিষয়ে আল রাজি হাসপাতালের পরিচালক সাইফুল চৌধুরী বলেন,  চিকিৎসায় কোন সমস্যা হলে তার সমস্ত দায় ভার সার্জারি ডাক্তারের।  আয়াকে দিয়ে ড্রেসিং এর বিষয় নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি কোন সদুত্তর দেননি।

অপরদিকে আল রাজি হাসপাতালের পরিচালক আরেক পরিচালক মিঠু হাসপাতালে সায়বাদিক পত্নীর ভুল চিকিৎসার সমস্ত বিষয় মিথ্যা বলে সমস্ত দোস্ত সাংবাদিক শহিদুল্লার এর উপর দায়ভার দেন।

রোকেয়া বেগমের ক্ষতস্থানে ভায়োডিন ছাড়া হেক্সিসল,  স্পিট দিয়ে ওয়াশ করা নিয়ে আল রাজি হাসপাতালের অপর পরিচালক মহিউদ্দিন ও সুপারভাইজার হাসানক বিষয়টি স্বীকার করেন। সাথে সাথে ভুল হয়েছে বলে কীভাবে সমাধান করা যায় সেটা জানতে চান।

এদিকে সাংবাদিক পত্নীর ভুল চিকিৎসা ও ইনফেকশন নিয়ে আল রাজি হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের চিকিৎসক ডা ইয়ামুন সানজিদার মুঠো ফোনে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন তুলেন নি।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button