চট্টগ্রাম বিভাগ

পটিয়ায় পুলিশের  সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ পুলিশসহ আহত ২৩, ওসি  অপসারণ দাবিতে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক অবরোধ

মোহাম্মদ জুবাইর: চট্টগ্রামের পটিয়ায় থানার সামনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এতে পুলিশ  ও আন্দোলনকারী পক্ষের অন্তত ২৩ জন আহত হয়েছেন বলে উভয় পক্ষ দাবি করেছে। মঙ্গলবার (১ জুলাই) রাত সাড়ে ৯টা ও রাত সাড়ে ১২টার দিকে পটিয়া থানার সামনে এ ঘটনা ঘটে। 

জানা গেছে, মঙ্গলবার রাতে জুলাই দিবস উপলক্ষে মোমবাতি প্রজ্বলনের কর্মসূচি শেষে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মীরা রাঙামাটি জেলা ছাত্রলীগের নেতা দীপংকর দে-কে দেখতে পেয়ে তাকে আটক করে পটিয়া থানা চত্বরে নিয়ে আসে। তবে ওই নেতার নামে কোনো মামলা না থাকায় তাকে আটক করতে চায়নি পুলিশ। এ নিয়ে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের উত্তেজনা দেখা দেয় এবং এক পর্যায়ে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। 

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের দক্ষিণ চট্টগ্রাম অঞ্চলের সমন্বয়ক গোলাম মওলা মাশরাফ বলেন, ‘পুলিশ এখন বট, দুই নম্বর আর ফাও হয়ে গেছে। চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসীদের রক্ষা করছে আর নিরীহ ছাত্রদের পেটাচ্ছে। আমরা মৃত্যুকে ভয় পাই না। এই বিপ্লব মরার জন্যই করছি।’

তিনি আরও অভিযোগ করেন, ‘চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের ধরতে ব্যর্থ পুলিশ এখন আন্দোলনকারীদের হুমকি দিচ্ছে। তবে আমরা থেমে থাকবো না।’

পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. মো. নওশাদ জানান, দুই দফায় মোট ২১ জন ছাত্র এখানে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছে। দ্বিতীয় দফার আহতরা তুলনামূলক বেশি গুরুতর। এছাড়া পুলিশের দু’জন সদস্য হাতে সামান্য আঘাত পেয়ে তারাও প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছে।

এঘটনার পর রাতে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলন করেছে পটিয়ার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এতে সংগঠনের নেতা হাসান আল বান্না, রিদুয়ান সিদ্দিকী, মাহবুব উল্লাহ, গোলাম মাওলা মাশরাফ, রাকিবুল হক হেলালি, সাজ্জাত হোসেন, গাজী আবুল হাসনায় জুবায়ের, সাইফুল, আকরাম, সাইফুল ইসলাম রাব্বি, সাইদুল ইসলাম, শওকত ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য দেন।

তারা পটিয়া থানার ওসি ও সংশ্লিষ্ট এসআইদের অপসারণ, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ এবং ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত ও বিচার দাবি জানান।

এদিকে পুলিশের লাঠিচার্জের প্রতিবাদে পটিয়ায় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা। বুধবার (২ জুলাই) সকাল ১০টা থেকে পটিয়া থানার সামনে অবস্থান কর্মসূচির মাধ্যমে বিক্ষোভ শুরু হয়। এরপর বেলা সাড়ে ১২টার দিকে পটিয়া বাইপাস এলাকায় গিয়ে মহাসড়কে টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ করেন তারা।

আন্দোলনকারীরা জানান, পুলিশি লাঠিচার্জে তারা ক্ষুব্ধ ও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। তারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি আবু জাহেদ মো. নাজমুন নূর) এর অপসারণ দাবি করেন

মহাসড়ক অবরোধের কারণে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও বান্দরবানসহ ছয় উপজেলার সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়, সড়কে কয়েক কিলোমিটার দীর্ঘ যানজট তৈরি হয়, সাধারণ মানুষকে পায়ে হেঁটে গন্তব্যে যেতে দেখা গেছে। 

এ বিষয়ে জানতে পটিয়া থানার ওসি আবু জাহেদ মো. নাজমুন নূরকে একাধিকবার কল দিলেও সাড়া পাওয়া যায়নি।

চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার মো. সাইফুল ইসলাম সানতু জানান, তারা কিছু দাবির কথা জানিয়েছে। আমরা সেটি বিবেচনা করছি। আশা করি দ্রুত শান্তিপূর্ণ সমাধান হবে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button