উজিরপুর প্রতিনিধিঃ বরিশালের উজিরপুরে প্রভাবশালী সোহাগ গোমস্তা মাত্র ১শত ৫ টাকা চুরির অপবাদ দিয়ে মধ্যযুগিয় কায়দায় গাছের সাথে বেঁধে নির্যাতন করেছে ৭ম শ্রেণির ছাত্র সৈকত হাওলাদার(১১) কে। হতদরিদ্র পিতার সন্তান নির্যাতনের শিকার সৈকত বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে আজ নিজ বাড়ীতে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে মৃত্যুর প্রহর গুনছেন। উপজেলার হারতা ইউনিয়নের নাথারকান্দি গ্রামের হতদরিদ্র কৃষক নজরুল হাওলাদারের ছেলে নাথারকান্দি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণির ছাত্র। পড়াশুনার খরচ চালাতে শ্রমিকের কাজ করত। একমাস পুর্বে শাহজাহান গোমস্তার ছেলে সোহাগের ঘরে সৈকত মাটিকাটার কাজ করে। দুপুর গড়িয়ে গেলে কাঠ ব্যবসায়ী সোহাগ গোমস্তা ঘরে এসে তার পকেটে ১শত ৫টাকা না পেয়ে দায়ী করে সৈকতকে। এদিকে বিকেলে সৈকত বন্ধুদের সাথে মধ্য হারতা পাগলার ভিটার মাঠে খেলাধুলা করছিল। সোহাগ ও তার ভাই মহসিন, আসলাম, মিজান গোমস্তা সহ কয়েকজন অনেক খোজাখুুঁজি করে ঐ স্থানে পেয়ে সৈকতকে ধরে ফেলে। পাগলার ভিটায় একটি গাছের সাথে বেঁধে নির্যাতন করে। সৈকতের মাথা গাছের সাথে বার বার আছরে দেয়। ঘটনাটি প্রতক্ষদর্শী তার ভাই শিপন, পাশ্ববর্তী শাহাদাৎ বেপারী, সান্তু বেগম সহ অনেকেই দেখে প্রতিবাদ করলে ছেড়ে দেয়। বিষয়টি স্থানীয় ইউপি সদস্য ফারুক হোসেন, কালাম ফরাজী সহ অনেকের কাছে শালিশ দিলেও কেহ কর্নপাত করেনি। এদিকে সৈকত আস্তে আস্তে অসুস্থ হতে শুরু করে। প্রথমে স্বরুপকাঠী স্বাস্থ্য কেন্দ্র পরে বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল হাসপাতালের ডাঃ আনোয়ার হোসেন এর স্মরনাপন্ন হন। তিনি সিটিস্কান সহ বিভিন্ন পরীক্ষা নিরিক্ষা শেষে মাথায় আঁঘাত জনিত রক্ত ক্ষরন দেখে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় স্থানান্তর করেন। অবস্থার আরো অবনতি হলে ১২ মে ঢাকার হলি ফ্যামিলী হাসপাতালে ভর্তি করেন। ১৬ মে ডাঃ মশিউর রহমান টুটুল মাথায় অস্ত্র পাচার করে রক্তক্ষরণ অপসরন করে । ২৪ মে কিছুটা সুস্থ করে বাড়ীতে নিয়ে আসেন। কিন্তু দিন দিন অবস্থার আরো অবনতি হতে থাকে। মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে আস্তে আস্তে নিস্তেজ হয়ে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে প্রহর গুনছেন। গতকাল ১জুলাই সাংবাদিকদের কাছে সৈকতের পিতা নজরুল ইসলাম ও চাঁচা মিন্টু হাওলাদার জানান সৈকতকে নির্যাতনের বিষয়টি এলাকার মেম্বর সহ গন্যমান্যদের জানানো হলেও তালবাহানা করে। আজ আমরা সন্তানের জন্য সকল সহায় সম্পদ শেষ করে ঋণের মাধ্যমে চিকিৎসা করে যাচ্ছি। ওরা প্রভাবশালী বিধায় কেহ ওদের বিরুদ্ধে কথা বলতে সাহস পায়না। আমরা উর্দ্ধোতন কর্তৃপক্ষের কাছে সন্তানের নির্যাতনকারী সোহাগ গোমস্তা সহ তার সাথে জড়িতদের বিচার চাই। নির্যাতনকারী সোহাগ গোমস্তা জানান আমার কাছ থেকে এর আগেও সৈকত ৫শত টাকা চুরি করেছিল। মাসখানেক আগে পুনঃরায় ১শত ৫টাকা চুরি করেছে। তাই পাগলার ভিটায় গিয়ে ওকে দুটি চরথাপ্পর দিয়েছি। এতকিছু হয়েছে আমার জানা নেই। উজিরপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ গোলাম ছরোয়ার জানান অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
হোম বিভাগ বরিশাল বিভাগ উজিরপুরে চুরির অপবাদে শিশুকে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন, চিকিৎসা শেষে বাড়ীতে মৃত্যুর প্রহর...