জয়পুরহাট প্রতিনিধিঃ জয়পুরহাট জেলার আক্কেলপুর উপজেলার তিলকপুরে এক যুবককে সিংঙ্গাপুর পাঠানোর নামে প্রতারণা করার অভিযোগে যুবলীগ নেতা তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। গত ১৬ জুলাই রবিবার জয়পুরহাট আমলী আদালতে প্রতারিত যুবকের মা জাকিয়া বেগম বাদী হয়ে মামলাটি দ্বায়ের করেন। আসামীরা হলেন একই উপজেলার নওজোর গ্রামের পালিত পিতা আফজাল হোসেনের পুত্র ও তিলকপুর ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা ও প্রতারক আদম ব্যবসায়ী আজাহার আলী ও তার সহধর্মীনি ফেন্সি বেগম।
মামলা সূত্রে জানা যায়, উপজেলার রায়নগর গ্রামের আব্দুল জলিলের ছেলে জাহিদ হাসান কৃষি কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। এ অবস্থায় প্রতারক আদম ব্যবসায়ী ও তার স্ত্রী ফেন্সি বেগম ভালো বেতনে চাকরির লোভ দেখিয়ে ২০১৭ সালের ৫ এপ্রিল জাহিদ হাসানকে সিংঙ্গাপুরে পাঠান। সিংঙ্গাপুর পাঠানোর নাম করে পাসপোর্ট ও ভিসার জন্য পঞ্চাশ হাজার এবং পাঠানোর জন্য জাহিদ হাসানের নিকট থেকে ছয় লাখ পঞ্চাশ হাজার টাকা মোট সাত লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয় আদম ব্যবসায়ী আজাহার ও তার স্ত্রী। ভাগ্য বদলের আশায় বিদেশে যাওয়ার টাকা জোগাড় করতে জাহিদের বাবা-মা সাড়ে তিন বিঘা জমি কট রাখে এবং এনজি ও সংস্থা থেকে তিন লক্ষ ৫০ হাজার টাকা ঋণ নেয়। কিন্ত সিংঙ্গাপুরে গিয়ে জাহিদ এর ভাগ্যে জোটেনি ভালো চাকরি। আদম ব্যবসায়ীর প্রতারণার শিকার হয়ে দীর্ঘ ২ মাস জাহিদকে ওয়েল্ডিং এর কাজ করতে হয়। শুধু তাই নয় সেখানে অনাহারে অর্ধাহারে দিন কাটানো লাগছে জাহিদকে। কিন্তু তারপরও কাজ করতে রাজি ছিল জাহিদ। কিন্তু ভাগ্যের পরিহাস সিংঙ্গাপুর থাকা হলোনা জাহিদের। প্রতারকরা পূর্ব পারিকল্পনা অনুযায়ী জাহিদকে বাংলদেশে ২৭/০৬/১৭ইং তারিখে পাঠিয়ে দেয়। এরপর আদম ব্যবসায়ী আজাহার ও তার স্ত্রীর নিকট টাকা ফেরত চেয়ে ব্যর্থ হয়ে ১৬ জুলাই তাদের বিরুদ্ধে আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। এবিষয়ে জানতে চাইলে আদম ব্যবসায়ী আজাহার বলেন, আমি নিজে বিদেশি লোক পাঠানোর কাজ করি না। তবে, অন্য এক আদম ব্যবসায়ীকে বিদেশে পাঠানোর জন্য লোক সংগ্রহ করে দেই। জাহিদকে ওই আদম ব্যবসায়ীর মাধ্যমে সিংঙ্গাপুরে পাঠিয়েছিলাম। কিন্ত সেখানে কাজ না করে দেশে ফিরে এসে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে।
একটি সুত্র জানায়, আজাহার বাল্য জীবন থেকেই খুব কষ্ট করে মানুষ হয়েছে। তার বাবার কোন নিজস্ব জমিজমা না থাকায় সে বাল্য জীবনে অভাবের তাড়নায় নিজের জন্ম স্থান ছেড়ে তিলকপুরে এসে চোরাকারবারী কাজে লিপ্ত হয়ে পড়ে। আজাহার কয়েক বছর আগে ও অর্ধঅনাহারে জীবন যাপন করছে। অথচ সে এখন নামী-দামি বান্ডের শার্ট-প্যান্ট আর ইজি বাইক নিয়ে ঘুরাফেরা করে। প্রতারক আজাহার নিজে আইনের হাত থেকে বাঁচতে সরকার দলীয় লোক জনকে ব্যবহার করছে।