মাগুরার মুক্তিযোদ্ধা মরহুম মমিন হোসেন বেঁচে থাকতে স্বাধীনতার স্বীকৃতি পাইনি। মৃত্যুর পরেও স্বাধীনতা স্বীকৃতির আহাকার পরিবার পরিজনের

0
542

মোঃ আনোয়ার হোসেন দাউদ
পাকিস্তান  হানাদার  বাহিনীর  নির্মম অত্যাচার, জুলুম দুঃশাসন যখন সকল মাত্রা ছাড়িযে যায়, আমাদেরকে সকল ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করে ঠিক তখনই বাংলার অবিসংবাদিত নেতা মুক্তি যুদ্ধের মাহানায়ক জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ঘোষনার মাধ্যমে বাংলার অপ্রতিরোধ্য দামাল ছেলেরা মহান মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়ে এবং সকল অত্যাচারের জবাব দিতে থাকে। হ্যাঁ আমরা এমন এক মুক্তিযোদ্ধার কথা বলছি যিনি ছাত্র অবস্থায় পরাধিনতা থেকে মুক্তির নেশায় বিভোর ছিলেন তিনি মুক্তি যোদ্ধা মরহুম মমিন হোসেন, পিতা-মৃত-ফাজেল মোল্যা, মাতা-মৃত-ময়না বিবি, গ্রাম ঃ বিনোদপুর, ডাকঘর ঃ বিনোদপুর, উপজেলা ঃ মহম্মদপুর, জেলা ঃ মাগুরা। ১৯৭১সালে ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক স্বাধীনতা যুদ্ধ ঘোষনার সাথে সাথে প্রিয় সন্তান, স্ত্রী, বাবা-মা ও ভাই-বোনদের মায়া ছেড়ে ঝাঁপিয়ে পড়েন যুদ্ধে। রাতের অন্ধকারে সহযোদ্ধাদের সঙ্গে পাড়িজমান মিত্র দেশ ভারতের রানাঘাটে অবস্থিত মুক্তিযোদ্ধা ক্যাম্পে। কাজ বেছে নেন আগত মুক্তিযোদ্ধা ও প্রশিক্ষনরত মুক্তিযোদ্ধাদের সেবা করতে। নাম তালিকা মুক্তি থেকে শুরু করে রান্না বান্না ইত্যাদি কাজ। উদ্ভুদ্ধ করেন তাদের, কিন্তু দুঃখের বিষয় এই যোদ্ধা ১৯৫৮ সালে মেট্রিকুলেশান, ১৯৬২ সালে ইন্টারমিডিয়েট এবং ১৯৬৫ সালে ¯œাতক পাস করেও জীবনে সকল লোভালালশা ত্যাগ করে একজন সাধারন মানুষের মতো বাঁচতে চেয়েছিলেন। শুধু চেয়েছিলেন অন্তত রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি। ঘুরে ছিলেন দ্বারে দ্বারে কাজ হয়নি কোন। অতি কষ্টে অনাহারে অর্ধহারে জীবনের শেষদিন গুলিকে কাটিয়ে ২০০১ সালে এই অভিমানি মুক্তিযোদ্ধা চলে যান না ফেরার দেশে। কথা হয় মুক্তিযোদ্ধা মমিন হোসেনের বৃদ্ধা স্ত্রী মর্জিনা বেগম, বড় ছেলে আলী মোর্তজা সেলিম এর সাথে। তাদের দুঃখের করুন ইতিহাস সকল দুঃখকে হার মানায়। তারা নিয়ম অনুযায়ী আবেদন করেছেন মুক্তি হিসাবে অন্তর্ভূক্তির জন্য কিন্তু কেউ তাদের কথা রাখেনি। আজও তারা আশাবাদি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার মহানুভুতি কামনা করছেন। পরিবারের একটাই চাওয়া তিনি যেন মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতিটুকু পান। মাগুরা সদর উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ রুস্তম আলী, জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোল্লা নবুয়ত আলী তাদের দেওয়া প্রত্যয়ন পত্রে মোঃ মমিন হোসেনের তৎকালীন সহযোগী মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে প্রত্যয়ন করেছেন। এছাড়াও আরো তিনজন মুক্তিযোদ্ধা মমিন হোসেনকে তাদের সহযোদ্ধা হিসাবে স্বীকার করে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দাবি করেছেন। এই তিন মুক্তিযোদ্ধা হলেন মোঃ সাইফুর রহমান, লাল মুক্তি বার্তা নং-০৪০৮০৩০১৫, মোঃ হাবিবুর রহমান লাল মুক্তিবার্তা নং-০৪০৮০৩০১৬ ও রনজিৎ কুমার পাল লাল মুক্তিবার্তা নং-০৪০৮০৩০০০৪। বিনোদপুর তথা মাগুরা সকল মুক্তিযোদ্ধা ও বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের চাওয়া মুক্তিযোদ্ধা মমিন হোসেনের যথাযথ রাষ্ট্রীয় সম্মান। আর কত কাল পার হলে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পাবে মুক্তিযোদ্ধা মমিন হোসেন ?

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

twelve + 2 =