মুশফিকের ব্যাটে রূপের রোশনাই সানির স্পিনে রোদের ঝলক

0
1925

রূপগঞ্জে মুশফিকুরের ব্যাট যেন রূপের রোশনাই ছড়াচ্ছে। আগের ম্যাচে হার না-মানা ৭৫ রান ব্রাদার্সের বিপক্ষে জিতিয়েছিল লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জকে। সোমবারও সেই বিকেএসপিতেই রূপগঞ্জের ‘লিজেন্ড’ মুশফিক। এবার ঝলমলে সেঞ্চুরি। ১৩৪ বলে ১৩৪। রূপগঞ্জের আরেক সেঞ্চুরিয়ান নাঈম ইসলাম (১০৩)। দু’জনের দুটি শতকে এবং রেকর্ড গড়া ২২৫ রানের জুটিতে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ ৬৮ রানে হারিয়েছে শেখ জামাল ধানমণ্ডি ক্লাবকে। বিকেএসপিতে অপর ম্যাচে আবাহনীর নাজমুল হোসেন শান্তর শতক (১০১*) এবং অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহর ফিফটির (৭৭) সহায়তায় সাত উইকেটে জয়ী হয় পারটেক্স স্পোর্টিং ক্লাবের বিপক্ষে। লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে নাজমুলের এটি প্রথম সেঞ্চুরি।

বিকেএসপিতে ব্যাটসম্যানদের রাজত্বের দিনে ফতুল্লায় আরাফাত সানির ঘূর্ণি জাদুতে প্রাইম দোলেশ্বর চার উইকেটে হারিয়েছে ব্রাদার্স ইউনিয়নকে। বিফলে গেল ব্রাদার্সের দুই ওপেনার মিজানুর রহমান (৫৬) ও জুনায়েদ সিদ্দিকীর (৮৭) ফিফটি।
ঢাকা প্রিমিয়ার লীগের দ্বিতীয় রাউন্ডে কাল সেঞ্চুরি হয়েছে তিনটি। ফতুল্লায় এক রানের জন্য সেঞ্চুরি মিস করেছেন প্রাইম দোলেশ্বরের ইমতিয়াজ হোসেন। শেখ জামালের পেসার শাহাদাত হোসেন নিজের প্রথম দুই ওভারের শেষ বলে রূপগঞ্জের আবু সায়েম ও হাসানুজ্জামানকে আউট করেন। তিন ওভারে ১৩ রানে দুই উইকেট হারায় রূপগঞ্জ। তৃতীয় উইকেটে নাঈম ও মুশফিকুর ২২৫ রানের জুটি গড়েন। নাঈম ১১৮ বলে ১০৩ রান করে ইলিয়াস সানির শিকার হন। মুশফিক ১৩৪ বলে ১৩৪ রানে আবদুর রাজ্জাকের বলে আউট হন। ততক্ষণে রূপগঞ্জ শুরুর ধাক্কা সামলে বড় স্কোরের পথে। শেষদিকে মাশরাফির ১১ বলে ১৭ এবং সাক্সেনার ১৫ বলে ২৩ রানে তিনশ’ পার করে রূপগঞ্জ। শাহাদাত ও রাজ্জাক দুটি করে উইকেট নেন। জবাবে শেখ জামাল ২৩৭ রানে অলআউট হয়। রূপগঞ্জের মোহাম্মদ শরীফ, মোশাররফ হোসেন, আসিফ হোসেন ও নাঈম ইসলাম দুটি করে উইকেট নেন। মাশরাফি ৫০ রান দিয়ে নেন একটি উইকেট।
আগের ম্যাচে সেঞ্চুরি করেছিলেন আবাহনীর মোসাদ্দেক হোসেন। কাল অবশ্য তিনি বড় স্কোর করার সুযোগই পাননি। সুযোগ পেয়ে সেঞ্চুরি করেছেন ক্রিকেটার নাজমুল হোসেন শান্ত। ১০৯ বলে পাঁচটি চার ও চারটি ছয়ে ১০১ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। পারটেক্স প্রথমে ব্যাট করে সাত উইকেটে ২৩৪ রান করে। জবাবে তিন উইকেট হারিয়ে ৩৮.৩ ওভারে জয় নিশ্চিত করে আবাহনী।
দিনের অপর ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে দারুণ শুরু করেছিলেন ব্রাদার্সের মিজানুর রহমান ও জুনায়েদ সিদ্দিকী। ওপেনিংয়ে ১১৩ রান যোগ করেন। মিজানুর ৫৬ এবং জুনায়েদ ৮৭ করে আউট হন। পরে আর কেউ দায়িত্ব নিয়ে খেলতে না পারায় আড়াইশ’র আগে ব্রাদার্সের ইনিংস শেষ হয়। আগের ম্যাচে পাঁচ উইকেট নেন আরাফাত সানি। কাল নিলেন চার উইকেট। ২৪৭ তাড়া করতে নেমে ইমতিয়াজের ৯৯ রানে ৪৮.৩ ওভারে ছয় উইকেট হারিয়ে জয় নিশ্চিত করে প্রাইম দোলেশ্বর। এ নিয়ে টানা দুটি করে জয় পেয়ে গেল আবাহনী, রূপগঞ্জ ও দোলেশ্বর।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
রূপগঞ্জ ও শেখ জামাল
রূপগঞ্জ ৩০৫/৫, ৫০ ওভারে (নাঈম ইসলাম ১০৩, মুশফিকুর রহিম ১৩৪, মাশরাফি মুর্তজা ১৭, সাক্সেনা ২৩* ও মোহাম্মদ শরীফ ১৫*। শাহাদাত হোসেন ২/৫২, আবদুর
রাজ্জাক ২/৬৩)।
শেখ জামাল ২৩৭/১০, ৪৬.২ ওভারে (মাহবুবুল করিম ৩৬, ফজলে মাহমুদ ৩৩, জিয়াউর রহমান ৪২, নুরুল হাসান ১৯, সোহাগ গাজী ২৪। মোহাম্মদ শরীফ ২/৩১, মোশাররফ হোসেন রুবেল ২/৫৬, আসিফ হাসান ২/৪০, নাঈম ইসলাম ২/২১)।
ফল : লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ
৬৮ রানে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ : মুশফিকুর
রহিম (রূপগঞ্জ)।
আবাহনী ও পারটেক্স
পারটেক্স ২৩৪/৭, ৫০ ওভারে
(সাজ্জাদ হোসেন ৪৪, তারিক
আহমেদ ২৫, জুবায়ের আহমেদ
৫০*। মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন ২/৫৬ শুভাগত হোম ২/৪৫)।
আবাহনী ২৩৭/৩, ৩৮.৩ ওভারে (লিটন দাস ২০, নাজমুল হোসেন শান্ত ১০১*, মাহমুদউল্লাহ ৭৭, মোসাদ্দেক হোসেন ২৩*। মামুন হোসেন ১/২০, রাজিবুল হাসান ১/৩২)।
ফল : আবাহনী ৭ উইকেটে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ : নাজমুল
হোসেন শান্ত (আবাহনী)।
ব্রাদার্স ইউনিয়ন ও প্রাইম দোলেশ্বর
ব্রাদার্স ইউনিয়ন ২৪৬/৯, ৫০ ওভারে (মিজানুর রহমান ৫৬, জুনায়েদ সিদ্দিকী ৮৭, মাইশুকুর রহমান ৪৭। আরাফাত সানি ৪/৪৫, শরীফুল্লাহ ২/৪৭, এনামুল হক(২) ২/৪৫)।
প্রাইম দোলেশ্বর ২৪৭/৬, ৪৮.৩ ওভারে (ইমতিয়াজ হোসেন ৯৯, আবদুল মাজিদ ৪৫, মার্শাল আইয়ুব ৩৩। মোহাম্মদ সাদ্দাম ৩/৫৫, নিহাদুজ্জামান ২/৫০)।
ফল : প্রাইম দোলেশ্বর
৪ উইকেটে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ : ইমতিয়াজ
হোসেন (দোলেশ্বর)।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

9 + twelve =