রংপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে কে পাচ্ছেন ধানের শীষ

0
1221

স্টাফ রিপোর্টার॥ রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে রংপুরের বিএনপিতে চলছে বেশ প্রচারনা। হাফ ডজন নেতা প্রচার চাললেও কেন্দ্রিয় হাই কমান্ডের পর্যায়ে আলোচনায় ৩ স্থানীয় নেতা কেন্দ্রীয় সূত্রে জানা গেছে। তারা হলেন, বিএনপির মহানগর সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজাফ্ফর হোসেন, বিএনপির মহানগর সহ সভাপতি সমাজসেবক সুলতান আলম বুলবুল ও শিল্পপতি কাওসার জামান বাবলা।
আসছে ৫ তারিখ তফসিল ঘোষনার অপেক্ষায় তারা। নির্বাচনে দলীয় প্রতিক পেতে নেতারা চেষ্টার কোন ক্রটি রাখছে না।
তবে যেই পাক ধানের শীষ সবাই এক কাতারে কাজ করবেন বলে সাফ জানালেন মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম মিজু। তিনি আরো বলেন, দলের সিদ্ধান্তের বাহিরে কোন নেতা কর্মী কাজ করবে না।
দলের সাধারণ এবং তৃণমুল নেতা-কর্মীরা এতে নতুন করে উজ্জিবীত হলেও ভোটারদেও মধ্যে দেখা দিচ্ছে আলোচনা সমালোচনা। ইত্যেমধ্যে দলটির কর্মী সংগ্রহ চলছে।
সম্প্রতি রংপুর সফরে এসে নির্বাচন কমিশনের সচীব হেলাল উদ্দিন আহমেদ জানিয়েছেন, আগামী ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে নির্বাচন করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন তারা। সে অনুযায়ী নভেম্বরই তফশিল ঘোষনা হতে পারে। সে অনুযায়ী ভোটের বাকি এখনো দেড় মাসের বেশী।
সরেজমিনে দেখা গেছে, রংপুর সিটি কর্পোরেশনের ৩৩টি ওয়ার্ডের প্রতিটি গ্রাম-পাড়া-মহল্লায় বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী নেতারা দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন। যোগ দিচ্ছেন বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক, পেশাজীবি, পারিবারিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে । বিভিন্ন স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসা, মসজিদ, মন্দির পরিদর্শনসহ সাধারণ মানুষ জনের সঙ্গে কুশল বিনিময় করছেন।
নেতাদের এমন গণসংযোগে সকল শ্রেণী পেশার মানুষজনের সিটি নির্বাচন নিয়ে ব্যাপক আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে।
বিভিন্ন সুত্র নিশ্চিত করে জানিয়েছে, আসন্ন রংপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে লড়তে বিএনপির হাফ ডজন নেতা। ভোট প্রার্থনার পাশাপাশি লবিং করছেন কেন্দ্রে।
অন্যদিকে হাফ ডজন নেতার তালিকায় আছেন, রংপুর মহানগর বিএনপির সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মোজাফফর হোসেন, সাধারণ সম্পাদক সাবেক ছাত্রনেতা শহিদুল ইসলাম মিজু, মহানগর বিএনপির সহ-সভাপতি সমাজসেবক সুলতান আলম বুলবুল, মহানগর বিএনপির সহ-সভাপতি শিল্পপতি কাওছার জামান বাবলা, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম ও জেলা যুবদল সভাপতি নাজমুল আলম নাজু।
রংপুর জেলা যুবদল সভাপতি নাজমুল আলম নাজু জানান, আমি পরিচ্ছন্ন রাজনীতি পছন্দ করি। একারণেই সিটি নির্বাচন করতে চাই। দল মনোনয়ন দিলে রংপুরের মানুষের ভালো কিছু করতে পারো।
অন্যদিকে মহানগর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম জানান, মেয়র পদে লড়তে কেন্দ্রের সাথে যোগাযোগ রাখছি। আমি সমর্থন ও নির্বাচিত হলে রংপুরকে তিলোত্তমা নগরী এবং একটি আধুনিক সিটিতে পরিণত করবো।
মহানগর বিএনপির সহ-সভাপতি শিল্পপতি কাওসার জামান বাবলা বলেন, বিগত ২০১২ সালে প্রথম সিটি নির্বাচনে আমি আনারস প্রতীক নিয়ে অংশগ্রহন করেছিলাম। সেবার ২৫ হাজার ভোট পেয়েছিলাম। এবার আমার অবস্থান অনেক ভালো। প্রচারও আমি অনেক আগে থেকেই শুরু করে দিয়েছি।
এদিকে মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম মিজু জানান, আগের চেয়ে রংপুর মহানগর বিএনপি এখন অনেক শক্তিশালী ও সুসংগঠিত। ইতিমধ্যে রংপুর মহানগরীর ৩৩টি ওয়ার্ডে বিএনপির বিপুল সংখ্যক সদস্য সংগ্রহ করা হয়েছে। কারমাইকেল কলেজের সাবেক জিএস মিজু জানান, দীর্ঘদিন ধরে দলের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। দল চাইলে আমি মেয়র পদে নির্বাচন করতে প্রস্তুুত আছি।
মহানগর বিএনপির সহ-সভাপতি সুলতান আলম বুলবুল জানান, দীর্ঘদিন দলের সঙ্গে আছি। তৃণমুল পর্যায়ে কাজ করেছি। দল যদি চায় তাহলে মেয়র পদে নির্বাচনের জন্য প্রস্তুুত আছি। দল যাকে নমিনেশন দেবে তার পক্ষে ঐক্যবদ্ধভাবে ধানের শীষের প্রতীক বিজয় নিশ্চিত করব। আর যদি দল মনোনয়ন দেয় এবং তিনি নির্বাচিত হলে রংপুর মহানগরীকে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার আলোকে পরিচ্ছন্ন ও বাসযোগ্য নিরাপদ নগরী হিসেবে সাজাতে কাজ করবেন।
অপরদিকে মহানগর সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মোজাফফর হোসেন জানান, রংপুরে বিএনপিকে শক্ত অবস্থানে ফিরিয়ে আনতে সিটি নির্বাচনে ঐক্যবদ্ধভাবে সকলকে কাজ করার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, দলের ইচ্ছাই সব, তবে আমি মনোনয়ন প্রত্যাশা করছি। এসময় তিনি বলেন, বিএনপিতে বিরোধ নেই, তাই অন্যদের মতো প্রার্থীর ছড়াছড়িও নেই।
সিটি নির্বাচনকে ঘিরে টানা একযুগেরও বেশি ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপি সিটি নির্বাচনকে ঘিরে অনেকটা চাঙ্গা ।
চলছে চমকের প্রচেষ্টা। আসন্ন এই নির্বাচনে দলীয় কার্যালয় থেকে শুরু করে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মী, সমর্থক এবং নগরবাসীর মুখে মেয়র পদে প্রায় হাফ ডজন বিএনপির নেতার নাম বারবার উঠে আসছে।
তবে মনোনয়ন পেলে ধানের শীষ প্রতীককে বিজয় ছিনিয়ে আনতে দলের সকলকে সাথে নিয়ে কাজ করতে চান তারা। রংপুর মহানগরীকে তিলোত্তমা নগরী হিসেবে গড়ার স্বপ্ন বুনছেন সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থীরা।
উল্লেখ্য, রংপুর সিটি করপোরেশনে বর্তমানে ভোটার রয়েছে ৩ লাখ ৮৮ হাজার ৪২১ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১ লাখ ৯৬ হাজার ৬৫৯ এবং নারী ১ লাখ ৯১ হাজার ৭৬২ জন। সম্ভাব্য ভোটকেন্দ্র ১৯৬টি, ভোটকক্ষ ১ হাজার ১৭৭টি। ২০১২ সালে ভোটার ছিল ৩ লাখ ৫৭ হাজার ৭৪২ জন।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

8 − four =