রাবিতে পোষ্য কোটা বিতর্ক, বিপাকে প্রশাসন
পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে অনড় অবস্থানে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীরা। অবিলম্বে এ কোটা বাতিল না হলে বিশ্ববিদ্যালয় অচলের ঘোষণা দিয়েছেন তারা। তবে এ সুযোগ ছাড়তে নারাজ অধিকাংশ শিক্ষক-কর্মকর্তা ও কর্মচারী। উভয় পক্ষের বিপরীতমুখী অবস্থানে বিপাকে পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
এ ব্যাপারে উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব বলেন, পোষ্য কোটা নিয়ে শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মচারী ও কর্মকর্তা সবার সঙ্গে বসেছি। শিক্ষার্থীরা বাতিল চায়, অন্যরা রাখতে চায়। উভয় পক্ষের বিপরীতমুখি অবস্থানে জটিলতা বাড়ছে। তবে ছুটি শেষেই একটা সিদ্ধান্ত হবে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত পাঁচ বছরে বিশ্ববিদ্যালয়ে পোষ্য কোটায় ভর্তি হয়েছে ৪৪২ জন।
২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে ৯৬ জন, ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে ১০০ জন, ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে ১১৩ জন, ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে ৩৯ জন ও ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে ৯৪ জন।
২০২২ সালে আসন ফাঁকা থাকা সাপেক্ষে এ কোটায় ন্যূনতম পাশ নম্বর ৪০ থেকে কমিয়ে ৩০ করে ৭১ জন ভর্তির সুযোগ পায়। মোট কোটার ৫% থেকে গত প্রশাসন ৪% করেও এ কোটায় আসন ফাঁকা থাকে। জুলাই বিপ্লবের পর এ কোটা বাতিলের দাবি তুললে ৩% করার সিদ্ধান্ত নেয় বর্তমান প্রশাসন। এ ঘটনার পর পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে আন্দোলনে নামে শিক্ষার্থীরা।
গত নভেম্বরে এ কোটা বাতিলের দাবিতে আমরণ অনশনে বসেন কিছু শিক্ষার্থী। পরে উপাচার্যের আশ্বাসে অনশন ত্যাগ করেন। পরদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মাঈন উদ্দীনকে সভাপতি করে ২০ সদস্যের কোটা পর্যালোচনা কমিটি গঠিত হয়। এ কমিটি গত একমাস সংশ্লিষ্ট সকলের সঙ্গে আলোচনা করেও কার্যকরী কোনো সিদ্ধান্তের দিকে পৌঁছাতে সক্ষম হয়নি।
এদিকে, এ কোটা বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ, অবস্থান ও রক্তের ব্যানার তৈরি করে প্রতিবাদ জানিয়েছে। সাত দিনের আলটিমেটাম, প্রশাসন ভবনে তালা ঝুলানোর হুঁশিয়ারি দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক সালাউদ্দিন আম্মার।
আম্মার বলেন, কোটা আন্দোলনের মাধ্যমে এই প্রশাসন চেয়ারে বসেছে৷ কিন্তু সেই কোটা বাতিলে কার্যকরী কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না তারা। এমনকি শিক্ষার্থীদের দাবি নিয়ে গুরুত্বই নেই। এই কোটার বৈষম্য মেনে নেয়া হবে না। ২ জানুয়ারি সকাল ৯টার মধ্যে সিদ্ধান্ত না দিলে অনির্দিষ্টকালের জন্য প্রশাসন ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেয়া হবে।
এ বিষয়ে জানতে কোটা পর্যালোচনা কমিটির সভাপতি উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মাঈন উদ্দীন বলেন, পোষ্য কোটা নিয়ে জটিলতা আছে। তবে উভয়পক্ষকে নিয়ে একটি কার্যকরী সিদ্ধান্ত পৌঁছার চেষ্টা চলছে।