রাজউক প্ল্যান ছাড়াই ভবন নির্মাণ, অভিযোগের আঙ্গুল ইমারত পরিদর্শকের দিকে

স্টাফ রিপোর্টারঃ রাজধানীর মোহাম্মদপুরের নুরজাহান রোডে রাজধানী উন্নয়ন কতৃপক্ষ (রাজউক) এর প্ল্যান ছাড়াই নির্মাণ করা হয়েছে ৪ তলা ভবন। ভবনটি মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের হওয়ায় মুক্তিযোদ্ধার প্রভাব খাটিয়ে ও রাজউকের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের যোগসাজশে নির্মাণ হয়েছে বলে জানা গেছে। মোহাম্মদপুরের আর/২৫/এ, নূরজাহান রোডের ব্লক ডি’র প্লটটির মালিক কথিত মুক্তিযোদ্ধা রফিক উদ্দিন পাটোয়ারী। তিনি বেশ কয়েকবছর আগে মারা গেলেও নির্মাণাধীন বাড়ির সামনে ঝুলছে তার নামফলক। ভবনটি রাজউক জোন-৫/১ এর আওতাভুক্ত। মুক্তিযোদ্ধার মৃত্যুর পর অবৈধ এই বাড়ি নির্মাণের কাজ দেখাশোনা করছেন তার মেয়ে ফাতেমা ইসলাম ও জামাতা কামরুল ইসলাম। অনুমোদনহীন আবাসিক ভবন নির্মাণের পাশাপাশি গ্যারেজের জায়গায় কমার্শিয়াল স্পেস হিসেবে তিনটি দোকানও নির্মাণ করা হয়েছে।
নুরজাহান রোডের বাসিন্দা বখতিয়ার ইসলাম বলেন, কামরুল ইসলাম স্থানীয় হিসেবে প্রভাব খাটাচ্ছেন। তিনি মুক্তিযোদ্ধা ও আওয়ামী লীগের নাম ভাঙিয়ে আইনের তোয়াক্কা না করে ভবন নির্মাণ করেছেন।
ভবনটি নির্মাণকালীন সময়ে আব্দুর রাজ্জাক মালিথা নামে একজন ২০২৪ সালে রাজউকে লিখিত অভিযোগ দায়ের করলেও রাজউক কোন ধরনের ব্যাবস্থা গ্রহণ করেনি। ভবনটি আবাসিক এড়িয়ায় হলেও নিচ তলা সম্পূর্ন কমার্শিয়াল করা হয়েছে।
ভবন নির্মাণের বিষয়ে কামরুল ইসলামের সঙ্গে কথা হলে নির্মাণের অনুমোদন বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কাগজপত্র আছে। আইন মেনেই ভবন নির্মাণ করেছি। ভবন নির্মাণের অনুমোদনপত্র দেখানো যাবে কি না, জানতে চাইলে কামরুল ইসলাম বলেন, আমার কাগজপত্র আপনাকে দেখাব কেন?
ভবনটির বিষয়ে কথা হয় ভবনের উত্তরাধিকার ফাতেমা ইসলামের সঙ্গে, যিনি কথিত মুক্তিযোদ্ধা রফিক উদ্দিন পাটোয়ারীর একমাত্র মেয়ে। তিনি বলেন, রাজউকের কাগজপত্র কোথায় আছে খুঁজে দেখতে হবে। আবাসিক ভবনে কমার্শিয়াল স্পেস নির্মাণের বিষয়ে তিনি বলেন, জমির পরিমাণ কম। সবাই যেভাবে বাড়ি বানায় আমরাও সেভাবে বানাচ্ছি।
আমাদের দোকানের কোনো অনুমোদন নেই। দোকান ভাড়া দিলে কিছু টাকা-পয়সা আসবে তাই বানাচ্ছি। ইমারত বিধিমালা না মেনে ভবন নির্মাণ প্রসঙ্গে ফাতেমা ইসলাম বলেন, আমরা রাজউককে ম্যানেজ করেছি। এখন তো অসুবিধা হওয়ার কথা না।
অভিযোগ রয়েছে রাজউক জোন ৫/১ এর ইমারত পরিদর্শক উজ্জল দেবনাথ একাধিকবার ইমারতটি পরিদর্শন করেও কোনো ব্যাবস্থা গ্রহন করেননি। রাজউকে দেয়া লিখিত অভিযোগের তোয়াক্কা না করে মালিক পক্ষের থেকে মোটা অংকের অর্থ গ্রহন করে ভবনটির কার্জক্রম দ্রুত সম্পন্ন করার নির্দেশ দেন তিনি।
ইমারত পরিদর্শক উজ্জল দেবনাথ কে ফোন করে অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই ভবনে একাধিক নোটিশ দেয়া হয়েছে, মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার চেষ্টা করছি। আর্থিক লেনদেনের বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন ভবন মালিকরা নিজে বাঁচতে ও আমাদের উপর দোষ চাপাতে এগুলো বলে। তিনি আরও বলেন আমি উর্দ্ধত্বণ কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি আশাকরি দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
রাজউক জোন-৫ এর পরিচালক জনাব মোঃ হামিদুল ইসলাম বলেন আমাকে একটু পূর্ণাঙ্গ তথ্য দেন, আমি দেখে এই বিষয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছি।