শিক্ষাঙ্গনে ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে শুধুই ছাত্রলীগ

0
1105

চাঁদাবাজি, নিয়োগ ও টেন্ডারবাণিজ্য, মাদক ব্যবসা, ছিনতাই অপহরন, যৌন হয়রানি, ফাও খাওয়া ইত্যাদি বহুবিধ অপরাধে বহুবার শীরোনাম হয়েছে ছাত্রলীগ। সংবাদ মাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে এ পর্যন্ত অনেক উৎকন্ঠা ও উদ্বেগ প্রকাশিত হয়েছে। রাজনীতি বিশ্লেষক ও সুশীল সমাজ থেকে বলা হয়েছে ছাত্রলীগের লাগাম ধরতে না পারলে দেশ আরও নিয়ন্ত্রনের বাইরে চলে যাবে। সম্প্রতি শিক্ষাঙ্গনের ক্যাম্পাসগুলোতে ছাত্রলীগের একচ্ছত্র আধিপত্য কায়েম হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিন থেকে শুরু করে আবাসিক হল পর্যন্ত ছাত্রলীগের কঠোর নিয়ন্ত্রন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ফলে মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজি, ছিনতাই, অপহরন, যৌন হয়রানি, ফাও খাওয়াসহ নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়েছে সংগঠনটির এক শ্রেনীর নেতা-কর্মী। এসব অপরাধের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ শিকার হচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারন শিক্ষার্থীরা। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের একই অবস্থা। হলের সিট বাণিজ্য থেকে শুরু করে নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে ছাত্রলীগ। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে কয়েক বছর ধরে ছাত্রলীগের একক আধিপত্যের কারনে অন্য ছাত্র সংগঠনগুলো অস্তিত্বের সংকটে পড়েছে। ছাত্রদলের কোন নেতা ক্যাম্পাসে ঢুকলেই ছাত্রলীগের নেতারা নির্মমভাবে মরধর করছে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়ন্ত্রনহীন ছাত্রলীগ। লাগাম টানতে দলটি কার্যক্রম সাময়িকভাবে স্থগিত করেও থামনা যায় নি তাদের। স্থাগিতাদেশ প্রত্যাহারের পর আগের মতোই চলছে তাদের অভ্যন্তরীন সংঘর্ষ ও দলাদলি, নিয়োগ বাণিজ্য, ট্রেনের বগি দখল ও আবাসিক হল দখল। এদিকে পুরাতন ঢাকার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশপথে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা দোকান বসিয়েছে বলে সম্প্রতি গণমাধ্যমে প্রকাশ। ওদের ভয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রশাসন নাকি কিছুই করতে পারছে না। আট বছর ধরে সক্রিয় সাংগঠনিক কার্যক্রম নেই ছাত্রদলের। বিশ্ববিদ্যালয়ের টেন্ডারবাজি, ভর্তি বাণিজ্য থেকে নিয়োগ বাণিজ্য সহ সবকিছুতেই ছাত্রলীগের শতভাগ নিয়ন্ত্রন রয়েছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যলয়ে ছাত্রলীগের একক আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে অনেক আগেই। প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনগুলো শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন দাবিদাওয়া নিয়ে মাঝে-মধ্যে আন্দোলনে সরব হলেও ছাত্রলীগের হামলায় এখন তারাও কোণঠাসা ও অসহায়। শিক্ষাঙ্গনে ছাত্রলীগের তান্ডবে ব্যহত হচ্ছে শান্তি শৃঙ্খলা, শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ। সর্বত্র বিরাজ করছে অতংক। অবস্থা এমন অসহনীয় অবস্থায় উপনিত হয়েছে যে, সন্ত্রাসের শিকার ও ক্ষতিগ্রস্তরা নালিশ করার জায়গাটুকু পর্যন্ত পাচ্ছে না। কারন ক্ষতিগ্রস্তরা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কমনা করলে উল্টো তাদেরকে বিভিন্নভাবে হয়রানি করা হচ্ছে। এ অবস্থা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে মুক্তি দিতে না পারলে গোটা দেশের জন্য তা অশুভ ফল বয়ে নিয়ে আসবে।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

twenty + 16 =