স্কুল, কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদ্যার দেবী সরস্বতী পূজা উপলক্ষে কয়েক দিন আগে থেকে প্রস্তুতি শুরু করে দিতেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। পূজার আগের দিন সম্পন্ন হতো সব আয়োজন। করোনায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় সরস্বতী পূজায় অন্যান্য বছরের মতো এবার সেই আমেজ নেই।
তবে কেউ কেউ বলছেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পূজা কমে গেলেও এবার ঘরে ঘরে বা কয়েক পরিবার মিলে পূজার আয়োজন বেড়েছে।
আজ মঙ্গলবার সারাদেশে উদযাপিত হচ্ছে হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব সরস্বতী পূজা। রাজধানীর জুরাইনের দাসপাড়া ঘুরে দেখা যায়, শতাধিক বাড়িতে সরস্বতী পূজার আয়োজন হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল থেকেই শুরু হয় পূজার আয়োজন। সরস্বতী পূজায় বাধ্যতামূলকভাবে থাকা পলাশ ফুলসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিস কেউ কেউ আগের দিনই এনে রেখেছে। আবার কেউ কেউ পলাশসহ অন্য ফুলের খুঁজে বেরিয়েছে।
পলাশ ফুল, বেলপাতা, হরতকি, যজ্ঞের জন্য পাটকাঠি, মধু, ঘি, সাদা ফুল, টগর ফুল, গাঁদা ফুলসহ নানাজাতের ফুলে সেজেছে মণ্ডপগুলো। প্রতিটি মণ্ডপে এক থেকে দেড়-দুই ঘণ্টা পূজা শেষে শিক্ষার্থীরা অঞ্জলি নিয়েছে বা নিচ্ছে। পাশাপাশি নিয়েছেন বড়রাও। পূজা শেষে চন্দ্রমিত্ত, যজ্ঞের ফোঁটা এবং প্রসাদ হিসেবে ফলমূল ও খিচুড়ি বিতরণ করা হয়েছে। আবার কোথাও কোথাও এখনও পূজা চলছে।
জুড়াইনে সরাইল মসজিদ রোডের জজবাড়িতেও স্বরস্বতী পূজা হয়েছে। এ বাড়ির টিনা দাস জাগো নিউজকে বলেন, ‘সরস্বতী মা তো বিদ্যার দেবী। আমাদের এলাকার যত ছোট বাচ্চা আছে, এলাকার সবাই যারা আছি, সবাই মিলে আমাদের ঘরেই পূজাটা প্রতি বছর করা হয়, এবারও করলাম। এটা একটা বাৎসরিক পূজা হিসেবে নেয়া হয়ে গেছে। যেহেতু স্বরস্বতী বিদ্যার দেবী, সবার ঘরে ঘরে যেন বিদ্যা থাকে সেজন্যই করা।’
মঙ্গলবার ভোর থেকেই জুড়াইন, রাজধানীসহ সারাদেশে এভাবে ঘরে ঘরে মহল্লায় মহল্লায় চলছে সরস্বতী পূজার উৎসব। সরস্বতী পূজার সময় উলুধ্বনি, শংখসহ অন্যান্য বাদ্যযন্ত্রের শব্দে মুখরিত হয়ে উঠেছে মণ্ডপগুলো।
বাংলাদেশ হিন্দু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সাজন কুমার মিশ্র বলেন, ‘এ বছর সারাদেশে পূজা নির্বিঘ্নে হচ্ছে। ভালোই হচ্ছে। করোনার কারণে পূজার মণ্ডপ একটু কম। অন্যান্য বছর ঢাকা বিশ্বদ্যিালয়ে যত পূজা ও যত জাকজমপূর্ণভাবে হয়, এবার সেভাবে হচ্ছে না। এবার স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় সেসব জায়গা কম পূজা হচ্ছে বা কোথাও হচ্ছে না। তাই যারা সেসব জায়গায় করতে পারছে না, তাদের অনেকেই পারিবারিকভাবে করছে। পারিবারিকভাবেই এবার বেশি পূজা মনে হচ্ছে।’