তিন ভাই ও দুই বোনের মধ্যে দ্বিতীয় শারফুল ইসলাম ঢালী। সংসারে সচ্ছলতা আনতে বিদেশ যান এই যুবক। দীর্ঘদিন বিদেশ থেকে শ্রমলব্ধ যে টাকা আয় করেছিলেন তা পাঠিয়ে দিতেন বাবা ও মায়ের কাছে। বেশ কিছুদিন পূর্বে সে দেশে ফিরে আসে। সংসার সাজানোর পরিকল্পনা ছিল। এরই মাঝে নিজের কষ্টার্জিত টাকার হিসেব চান এই যুবক। আর এতেই তৈরী হয় বিপত্তি। গত বুধবার সকালে ময়মনসিংহ জেলার পাগলা থানার চাকুয়া গ্রামের নিজ বাড়ীতে এই যুবককে বাবা ও মা মিলে কুপিয়ে আহত করে। পরে বৃহস্পতিবার ভোরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনার পর অভিযুক্ত বাবা, মা ও ছোট ভাই পলাতক রয়েছেন। নিহত শারফুল ইসলাম ঢালী(৩০) উপজেলার নিগুয়ারী ইউনিয়নের চাকুয়া গ্রামের ইসহাক ঢালীর ছেলে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, শারফুল ইসলাম ঢালী দীর্ঘ ৯ বছর লেবাননে ভালো বেতনে চাকরি করেন। গত ছয় মাস আগে তিনি দেশে ফিরে আসেন। প্রবাসে কর্মরত অবস্থায় আয়-রোজগারের সব টাকা তিনি তার বাবার নামে দেশে পাঠিয়ে দেন। দেশে ফেরত আসার পর তার বাবা তাকে কোনো টাকা দেবে না বলে জানান। এমনকি হাত খরচের টাকাও শারফুল ঢালী তার বাবার কাছে চেয়ে পেতেন না। এ নিয়ে বাবা ছেলের মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া-বিবাদ হতো।
বুধবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে টাকা-পয়সা নিয়ে ঝগড়ার একপর্যায়ে বাবা ইসহাক ঢালী, মা হোসেনা আরা (৪৭), ছোট ভাই আশরাফুল ঢালী (২৮) লোহার রড ও শাবল দিয়ে শারফুল ঢালীর মাথা, পা ও বুকে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে গুরুতর জখম করে। এর পর বসতঘরের একটি রুমে তালাবদ্ধ করে আটকে রাখেন। এসময় তার চিৎকারে স্বজনরা উদ্ধার করতে গেলেে তাদের বাঁধা দেন তার বাবা ও মা। পরে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে সংবাদ দেয়া হয়।
নিগুয়ারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহাবুদ্দিন খান জানান, নিহত শারফুল সহজ-সরল ছিল। বিদেশে থাকাবস্থায় সব টাকা তার বাবা ও মা কাছে পাঠাত। বাবা ও মা খারাপ প্রকৃতির লোক ছিল। টাকার হিসাব চাওয়ার কারণে ছেলেকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। পাগলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রাশেদুজ্জামান বলেন, থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে রয়েছে। নিহতের লাশের ময়না তদন্ত ও এ ঘটনায় একটি হত্যা মামলার প্রস্ততি চলছে।(সংগৃহীত)