ইসলাম ও ধর্মের লেবাসে জঙ্গি সংগঠন

0
1024

বাংলাদেশে ইসলাম ও ধর্মের আবরনে ইসলাম বিরোধি কর্মকান্ড জেঁকে বসেছে। এদের কাজ হচ্ছে ইসলাম ও ধর্মের ছত্রছায়ায় দেশে সন্ত্রাস সৃষ্টি করে দেশের ভেতরে টালমাটাল অবস্থা সৃষ্টি করা। এসব জঙ্গিদের শিকড় অনেক গভীর। ওদেরকে আর্থিকভাবে বলিয়ান করার জন্য রয়েছে দেশি-বিদেশি অনেক দাতা। ওরা অনেক যুবকদেরকে বিভিন্নভাবে প্রলোভন দেখিয়ে নিজেদের দলে অন্তর্ভুক্ত করে। সম্প্রতি অনেক যুবক এদের ফাঁদে পা দিয়ে দেশ থেকে বাইরে চলে গেছে জঙ্গি প্রশিক্ষন নেওয়ার জন্য। গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে জানা গেছে অনেক পরিবারের যুবক সন্তানকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। র‌্যাব পুলিশের অভিযানে এ পর্যন্ত অনেক জঙ্গি সংগঠনের সন্ধান পাওয়া গেছে। ওদের কাছ থেকে ইসলামের অপব্যখ্যামূলক অনেক জিহাদি বই ও অত্যাধুনিক অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। জেএমবি, হিজবুতে তেহরি ইত্যাদি বাহারি জঙ্গি সংগঠনের পর বিইএম নামক আরেকটি সংগঠন আত্মপ্রকাশ করে কয়েক বছর আগে। এই সংগঠনকে নিয়ন্ত্রন করার জন্য শতাধিক মাদরাসা ও মসজিদের ওপর নজরদারি রাখে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী। অনেক মসজিদও জঙ্গি তৎপরতার গোপন আস্তানায় পরিণত হয়েছে বলে গণমাধ্যমে প্রকাশ। এসব কিসের আলামত? দেশের বিরুদ্ধে নাশকতা করার ইচ্ছা থাকলে ধর্মের ছত্রছায়ায় কেন? ইসলামের প্রকৃত শিক্ষা থেকে আমারা দূরে সরে গিয়েছি বলে আজ জঙ্গিরা শক্তিশালী হচ্ছে। আমাদের দেশ আজ ইসলাম ও ধর্মের জন্য বড় দুর্দিন। জঙ্গিদের পাশাপাশি বিভিন্ন মসজিদ মাদ্রাসায় বেদাতি ও অপরের রুচির বিপর্যয় ঘটানোর মত তৎপরতা ব্যাপক হারে বেড়ে চলেছে। ওয়াজ মাহফিলে নারীদের প্রতি জঘন্য কটুক্তি করে নারী বিদ্বেষী দীর্ঘ বক্তৃতা দিতে থাকে টাইটেল প্রাপ্ত মাওলানারা। পাশাপাশি অন্য ধর্মের প্রতিও বিদ্বেষমূলক বক্তব্য প্রদান করে।

এক শ্রেণীর মোল্লারা ওয়াজগুলাতে গভীর রাতে মাইকের তান্ডবে সুস্থ মানুষকে অসুস্থ করে ফেলে ও অলীক সব গল্প বলে ইসলাম ও ধর্মের প্রকৃত সূর থেকে মানুষকে দূরে সরিয়ে রাখে। দেশের বিভিন্ন স্থানে পীর সাহেবদের ওরসগুলাতে গরু-ছাগল জবাই করে ভোগ বিলাশের আয়োজন দেখা যায়।

কিছু পীর সাহেবরা ধনী ও আর্থিকভাবে স্বচ্ছল ব্যক্তিদেরকে মুরিদ বানাতে আগ্রহ বোধ করে। এসব পীরদের বাড়ি-গাড়ি ও ব্যাংক ব্যালেন্স পাহাড় পরিমান। ওরা এসি রুমে বসবাস করে ও এসি গাড়িতে চলাচল করে। সরকার ও প্রশাসন ওদের সম্পদের কোন হিসাব কোনদিন নিয়েছে বলে মনে হয় না। ইসলামের মূল শিক্ষায় এ ধরনের পার্থিব সুখ, আরাম আয়েশ ও ভোগবিলাস অনুমোদন করে না।

ইসলাম ও ধর্মের এসব অপব্যবহারের প্রতিবাদ করলে প্রতিবাদিকে নাস্তিক, কাফের ইত্যাদি বলে আখ্যায়িত করে এমনকি শারীরিক আক্রমন করতে আসে এসব পীর ও মোল্লারা। আমরা এসবের প্রতি কোন কটাক্ষ করছি না। তবে এক শ্রেণীর পীর ও মোল্লাদের এসব কর্মকান্ডে ইসলামের মূল আবেদন উপেক্ষিত একথা আমরা জোর দিয়ে বলতে পারি। দেশের প্রকৃত ইসলাম প্রিয় ব্যক্তিরা আগে থেকে সচেতন থাকলে আজকের এই ভায়বহ অবস্থার সৃষ্টি হতো না। এ অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

twenty − 2 =