হান্নানসহ তিন জঙ্গির ফাঁসি কার্যকর

0
1457
হরকাতুল জিহাদের (হুজির) শীর্ষ নেতা আবদুল হান্নানসহ তিন জঙ্গির ফাঁসি কার্যকর হয়েছে। অপর দুই জঙ্গি হচ্ছে তার সহযোগী শরীফ শাহেদুল আলম ওরফে বিপুল ও দেলোয়ার হোসেন ওরফে রিপন। ২০০৪ সালে সিলেটে তৎকালীন ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর গ্রেনেড হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় বুধবার রাতে তাদের ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। এদের মধ্যে গাজীপুরের কাশিমপুরের হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারে জঙ্গি হান্নান ও বিপুলের এবং সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে রিপনের ফাঁসি কার্যকর হয়। কাশিমপুর কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মিজানুর রহমান হান্নান ও বিপুলের ফাঁসি কার্যকরের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। সিলেটের সিভিল সার্জন ডা. হাবিবুর রহমান রিপনের ফাঁসি কার্যকরের বিষয় নিশ্চিত করেছেন।
রাত ১০টায় ফাঁসি কার্যকরের পর সব প্রক্রিয়া শেষে ১২টা চার মিনিটে লাশবাহী দুটি অ্যাম্বুলেন্সসহ ১০টি গাড়ির  বহর কাশিমপুর কারাগার থেকে বেরিয়ে যায়। একটিতে হান্নানের এবং অপরটিতে বিপুলের মরদেহ দাফনের জন্য তাদের গ্রামের বাড়ি নেয়া হচ্ছে। একইভাবে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগার থেকেও রিপনের লাশ নিয়ে তার বাড়ির উদ্দেশে একটি গাড়িবহর বেরিয়ে গেছে। হান্নানের গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার হিরনে। সেখানেই তাকে দাফন করা হবে। জঙ্গি বিপুলের গ্রামের বাড়ি চাঁদপুরের মাইশাদিতে। বিপুল ছিলেন সিলেট অঞ্চলের হুজির সংগঠক। তার লাশ দাফন করা হবে চাঁদপুরের মাইশাদিতে। রিপনের বাড়ি মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়ার ব্রাহ্মণবাজার ইউনিয়নের কোনাগাঁও গ্রামে। সেখানেই তাকে কবর দেয়া হবে।

তিন জঙ্গির মধ্যে হান্নান নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদ আল ইসলামী বাংলাদেশের (হুজি-বি) অন্যতম শীর্ষ নেতা। ১৯৯৯ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত ১৭টি হামলার মূল হোতা হিসেবে সে অভিযুক্ত। এসব হামলায় নিহত হয়েছেন ১০১ জন, আহত হয়েছেন ৬০৯ জন। এর মধ্যে একটি হামলা ও দুটি হামলা চেষ্টার ঘটনার মূল টার্গেট ছিলেন তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এছাড়া ২০০৫ সালে দেশব্যাপী সিরিজ বোমা হামলার ঘটনায়ও তার সম্পৃক্ততার অভিযোগ উঠে এসেছে। ২০০৫ সালের ১ অক্টোবর রাজধানীর বাড্ডা থেকে মুফতি হান্নানকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর থেকেই সে কারাগারে। ফাঁসি কার্যকর হওয়ায় হান্নানের বিরুদ্ধে চলমান একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলার মামলা, সিপিবির সমাবেশে বোমা হামলা, ৭৬ কেজি বোমা পুঁতে রেখে শেখ হাসিনাকে হত্যা চেষ্টাসহ এক ডজন মামলা থেকে সে রেহাই পেল। তার বিরুদ্ধে দায়ের করা প্রতিটি মামলাই জঙ্গি হামলা সংক্রান্ত।
হান্নান-বিপুলের ফাঁসি কার্যকর : আমাদের গাজীপুর প্রতিনিধি জানান, বুধবার রাত ১০টায় গাজীপুরের কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারে হুজির শীর্ষ নেতা মুফতি হান্নান ও তার সহযোগী জঙ্গি শরীফ শাহেদুল বিপুলের ফাঁসি সম্পন্ন হয়। ফাঁসি কার্যকরের ভূমিকায় ছিল জল্লাদ রাজু। তাকে সহায়তা করে জল্লাদ সাকু ও ইকবাল।
কারাসূত্র জানায়, রাত ১০টায় জঙ্গি নেতা আবদুল হান্নান ও বিপুলের ফাঁসি একসঙ্গেই কার্যকর করা হয়। ফাঁসি কার্যকরের সময় কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ ইফতেখার উদ্দিন, অতিরিক্ত কারা মহাপরিদর্শক কর্নেল মো. ইকবাল হাসান, গাজীপুরের জেলা প্রশাসক এসএম আলম, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হারুন-অর রশীদ, সিভিল সার্জন ডা. সৈয়দ মো. মঞ্জুরুল হক, সিনিয়র জেল সুপার মো. মিজানুর রহমান, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. রাহেনুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
যেভাবে ফাঁসি কার্যকর : কাশিমপুর কারাগারে বিকাল থেকেই তাদের ফাঁসি কার্যকরের শেষ প্রস্তুতি চলে। বিকাল সোয়া চারটার দিকে দুটি অ্যাম্বুলেন্স ঢোকানো হয় কারাগারের ভেতরে। ওই সময় ডিআইজি প্রিজন তৌহিদুল ইসলামও কারাগারে প্রবেশ করেন। এরপর একে একে কারাগারে শীর্ষ কর্মকর্তা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, ম্যাজিস্ট্রেট, ডাক্তারসহ সংশ্লিষ্টরা কারাগারে আসেন। কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ ইফতেখার উদ্দিন কারাগারে ঢোকেন সন্ধ্যা সাতটা ৫৭ মিনিটে। অতিরিক্ত কারা মহাপরিদর্শক কর্নেল মো. ইকবাল হাসান প্রবেশ করেন সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে। সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার পর হান্নান ও বিপুলকে গোসল করানো হয়। এরপর দু’জনকে তওবা পড়ান কারা কর্মচারী নোমানুর রশীদ। রাত সাড়ে আটটার দিকে কারা কর্তৃপক্ষ মোবাইল ফোনে হান্নানকে তার মা রাবেয়া বেগমের সঙ্গে কথা বলিয়ে দেন। সে তার মায়ের কাছে দোয়া চায়। এর আগেই রাতে তারা ডাল ও সবজি দিয়ে ভাত খান। রাত সাড়ে ৯টার দিকে গাজীপুরের জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, সিভিল সার্জন প্রবেশ করেন।
রাত পৌনে ১০টার পর তাদের ফাঁসির কাষ্ঠে নেয়া হয়। জল্লাদ রাজু ও সাকু দু’জনের মাথায় জমটুপি পরিয়ে দেন।  আসামিদের দুই হাত পেছনে নিয়ে বেঁধে দেয়া হয়। ঘড়ির কাঁটা ১০টার ঘরে পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গে জেল সুপারের হাতে থাকা রুমালটি ফেলে দিলে জল্লাদ রাজু লিভার টেনে ধরে। সঙ্গে সঙ্গে ফাঁসির রশিতে ঝুলে পড়ে দুই জঙ্গি। ফাঁসি কার্যকর করার কিছুক্ষণ পর কর্তব্যরত চিকিৎসক লাশের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তাদের হাত ও পায়ের রগ কেটে দিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করেন। ময়নাতদন্ত শেষে লাশ কফিনে ঢুকিয়ে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে অ্যাম্বুলেন্সযোগে তাদের গ্রামের বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়া হয়।
স্বজনদের সাক্ষাৎ : এর আগে বুধবার সকালে কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের ফাঁসির সেলে আবদুল হান্নানের সঙ্গে দেখা করেন তার পরিবারের চার সদস্য হান্নানের বড় ভাই আলী উজ্জামান মুন্সি, তার স্ত্রী জাকিয়া পারভিন রুমা, বড় মেয়ে নিশি খানম ও ছোট মেয়ে নাজরিন খানম। দুপুরে তার সঙ্গে দেখা করেন কারাবন্দি দুই ভাই। এরা হলেন- যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগারে থাকা বন্দি মো. মহিবুল ও গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারের বন্দি মো. আনিস।
মঙ্গলবার রাতে স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে খবর পেয়ে হান্নানের বড় ভাই, স্ত্রী ও দুই মেয়ে কাশিমপুর কারাগারের উদ্দেশে কোটালীপাড়া থেকে রওনা দেন। ভোরে গাজীপুর এসে পৌঁছান। পরে বুধবার সকালে তারা কারাগারে প্রবেশ করেন। হান্নানের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে তারা গ্রামের বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন।
সাক্ষাৎ শেষে হান্নানের বড় ভাই আলী উজ্জামান কারা ফটকের সামনে অপেক্ষমাণ সাংবাদিকদের জানান, হান্নান মায়ের সঙ্গে মোবাইলে কথা বলার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। আর সবার কাছে দোয়া চেয়েছে। তিনি তার মায়ের কাছেও দোয়া চেয়েছেন। হান্নান বলেছেন, আল্লাহর পক্ষ থেকে যেটা হয়েছে সেটাই আমাকে মেনে নিতে হবে।
কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা : হান্নান ও তার সহযোগী জঙ্গি শরীফ শাহেদুল বিপুলের ফাঁসির রায় কার্যকর করাকে কেন্দ্র করে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার ও আশপাশের এলাকায় কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়। ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক থেকে কারাগারের প্রধান ফটক পর্যন্ত কয়েকটি স্তরে পুলিশ তল্লাশি করেছে। কারাগারের আশপাশের শাখা রোড ও সড়কের উভয় পাশের দোকানপাট বন্ধ করে দেয়া হয়। দুপুরের পর থেকে কারাগারের সামনে পুলিশ, র‌্যাব, ডিবি পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা আসতে শুরু করেন। এছাড়া সাদা পোশাকের বিপুলসংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য কারাগারের আশপাশে অবস্থান নেন।
গাজীপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ জানান, কারাগার ও আশপাশের এলাকায় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। গোয়েন্দা তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে। কোনো সন্ত্রাসী গোষ্ঠী যেন কোনো ধরনের অপতৎপরতা চালাতে না পারে, সেজন্য জেলা পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সতর্ক ও তৎপর রয়েছে।
রিপনের ফাঁসি কার্যকর : সিলেট প্রতিনিধি জানান, সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে জঙ্গি দেলোয়ার হোসেন রিপনের ফাঁসি বুধবার রাত ১০টায় কার্যকর করা হয়। সিলেটের সিভিল সার্জন ডা. হাবিবুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ফাঁসি কার্যকরের সময় জেলা ও কারা প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ফাঁসি কার্যকর যেভাবে : ফাঁসি কার্যকরে শীর্ষ ভূমিকায় ছিল দুটি মামলায় ৮৫ বছরের সাজাপ্রাপ্ত জল্লাদ ফারুক। তার সঙ্গে ছিল জল্লাদ জলিল ও জাহাঙ্গীর। এছাড়া আরও সাত জল্লাদ ছিল ফাঁসি কার্যকরের সহযোগীর ভূমিকায়। রাত ১০টায় রিপনের ফাঁসি কার্যকরের সময় উপস্থিত ছিলেন সিলেটের পুলিশ সুপার মো. মনিরুজ্জামান, ডিআইজি (প্রিজন) একেএম ফয়জুল হক, জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবু সাফাত মো. সাহেদুল ইসলাম, পুলিশ কমিশনারের পক্ষে উপপুলিশ কমিশনার (উত্তর) ফয়সল মাহমুদ, সিনিয়র জেল সুপার মো. ছগির মিয়া, সিলেটের সিভিল সার্জন (ভারপ্রাপ্ত) ডা. কমল রতন সাহা ও কারা হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. মিজানুর রহমান। ফাঁসি কার্যকরের আগে জঙ্গি রিপনকে গোসল করিয়ে তওবা পড়ানো হয়। তওবা পড়ান শাহ আবু তুরাব জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা মুফতি মো. বেলাল উদ্দিন। বাদ এশা তাকে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।
পরিবারের শেষ সাক্ষাৎ : ফাঁসি কার্যকরের আগে সন্ধ্যা ৬টা ৫০ মিনিটে জঙ্গি রিপনের পরিবার তার সঙ্গে দেখা করে। সাক্ষাতের সময় রিপনের মা সমিরুন্নেছা মিলি, বাবা আবু ইউসুফ, ভাই শামসুল মোহাম্মদ শিপন ও ভাবি সামিয়া ঊর্মি উপস্থিত ছিলেন। তারা ২টি লাইটেস এবং একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে কারাগারে আসেন। রিপনের সঙ্গে শেষ সাক্ষাতে আসেন ২৫-২৬ জন স্বজন। রাত ৮টা ৫ মিনিটে স্বজনরা রিপনের সঙ্গে দেখা করে বেরিয়ে আসেন। এ সময় তাদের অনেকেই কান্নাকাটি করেন। সাক্ষাতের সময় পরিবারের সদস্যরা কান্নাকাটি করলেও রিপন ছিল স্বাভাবিক। জঙ্গি রিপনের সঙ্গে কারাগারের দায়িত্বশীলরাও কথা বলেন। তখনও তাকে স্বাভাবিক দেখেছেন।
মামলার ইতিহাস : ২০০৪ সালের ২১ মে সিলেটে হযরত শাহজালালের মাজার প্রাঙ্গণে তৎকালীন ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরী গ্রেনেড হামলার শিকার হন। ওই হামলায় ঘটনাস্থলেই পুলিশের এএসআই কামাল উদ্দিন নিহত হন। এছাড়া পুলিশ কনস্টেবল রুবেল আহমেদ ও হাবিল মিয়া নামে আরেক ব্যক্তি মারা যান হাসপাতালে। আনোয়ার চৌধুরী ও সিলেটের জেলা প্রশাসকসহ অন্তত ৪০ জন ওই ঘটনায় আহত হন। এ ঘটনায় ওইদিনই কোতোয়ালি থানায় অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করে পুলিশ।
তদন্ত শেষে ২০০৭ সালের ৭ জুন হরকাতুল জিহাদ নেতা আবদুল হান্নান, তার ভাই মহিবুল্লাহ ওরফে মফিজুর রহমান ওরফে মফিজ ওরফে অভি, শরীফ শাহেদুল আলম ওরফে বিপুল ও দেলোয়ার ওরফে রিপনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয়া হয়। যথাযথ ঠিকানা না থাকায় মঈন উদ্দিন ওরফে আবু জান্দাল ওরফে মাসুম বিল্লাহ ওরফে খাজার নাম প্রথমে বাদ দেয়া হলেও পরে তাকে যুক্ত করে সম্পূরক অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। একই বছরের নভেম্বরে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু করেন সিলেটের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল। ৫৬ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে ২০০৮ সালের ২৩ ডিসেম্বর বিচারক সামীম মো. আফজাল রায় ঘোষণা করেন। আসামিদের মধ্যে হান্নান, বিপুল ও রিপনকে মৃত্যুদণ্ড এবং মহিবুল্লাহ ও আবু জান্দালকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়। ওই রায়ের বিরুদ্ধে আসামিপক্ষের আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের আবেদন) শুনানি শেষে ২০১৫ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি আমির হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ নিন্ম আদালতের রায় বহাল রাখেন।
পরে আসামিপক্ষ আপিল বিভাগে আবেদন করে। ২০১৬ সালের ৭ ডিসেম্বর সর্বোচ্চ আদালত আপিল বিভাগের চূড়ান্ত রায়েও ওই তিন আসামির সর্বোচ্চ সাজার সিদ্ধান্তই বহাল থাকে। আপিল বিভাগের রায় হাইকোর্ট হয়ে নিন্ম আদালতে যাওয়ার পর বিচারিক আদালত মৃত্যু পরোয়ানা জারি করেন এবং তা ৩ ফেব্রুয়ারি গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে পৌঁছায়। সেখানেই আসামিদের মৃত্যু পরোয়ানা পড়ে শোনানো হয়। এরপর ২৩ ফেব্রুয়ারি রিভিউ আবেদন করে ৩ আসামি। শুনানি শেষে ১৯ মার্চ আপিল বিভাগ তা খারিজ করে দেন। এরপর ২২ মার্চ তাকে রিভিউ খারিজের রায় পড়ে শোনানো হয়। ২৭ মার্চ মুফতি হান্নানসহ তিন জঙ্গি রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন করে। গত সপ্তাহে রাষ্ট্রপতি তাদের প্রাণভিক্ষার আবেদন নাকচ করে দেন। এরপর জেল কোড অনুযায়ী তাদের ফাঁসি কার্যকরের উদ্যোগ নেয়া হয়।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

15 + nine =