আওয়ামী লীগের ২০তম সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দারিদ্র্যমুক্ত দেশ গড়ার অঙ্গীকার দেশে সন্ত্রাসবাদ প্রশ্রয় দেয়া হবে না * তালিকা করে দুস্থদের ঘর বানিয়ে দেয়া হবে * বাংলাদেশ হবে ক্ষুধামুক্ত * দলের প্রাণ তৃণমূলের নেতাকর্মীরাই * যা অর্জন তা সবই আওয়ামী লীগের সময়

0
2733

অপরাধ বিচিত্রাঃ
বাংলাদেশকে ২০৪১ সালের মধ্যে দারিদ্র্যমুক্ত করার অঙ্গীকার করলেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এই স্বপ্ন পূরণে দলের নেতাকর্মীদের সক্রিয় সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশে দারিদ্র্য বলে আর কিছুই থাকবে না। হতদরিদ্রদের তালিকা তৈরির জন্য দলের নেতাকর্মীদের নির্দেশ দেন। শেখ হাসিনা বলেন, ‘স্ব স্ব এলাকায় কতজন দরিদ্র, গৃহহারা মানুষ আছে, যাদের ঘর নাই, বাড়ি নাই, নিঃস্ব-রিক্ত, প্রতিবন্ধী ও বয়োবৃদ্ধ আছে, তাদের তালিকা করুন, আমরা তাদের বাড়ি করে দেব। একজন মানুষও এদেশে না খেয়ে থাকবে না। বাংলাদেশ হবে ক্ষুধামুক্ত একটি দেশ।’
সম্মেলনে সিকি শতকের মধ্যে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে সরকার কী পদক্ষেপ নিয়েছে, তা তুলে ধরেন শেখ হাসিনা। ক্ষমতাসীন দলটির এবারের সম্মেলনের সেøাগানই ছিল- ‘শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নয়নের মহাসড়কে এগিয়ে চলেছি দুর্বার, এখন সময় বাংলাদেশের মাথা উঁচু করে দাঁড়াবার।’ সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ৪০ মিনিটের বক্তৃতায় জনগণের দল হিসেবে আওয়ামী লীগকে তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘জনগণের দায়িত্ব আমাদের।’ ২০৪১ সালের মধ্যে দারিদ্র্যমুক্ত দেশ গড়তে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার যে কাজ করছে, তা এগিয়ে নিতে নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান।
সম্প্রতি রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগের দু’দিনব্যাপী ২০তম জাতীয় সম্মেলনের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এর আগে তিনি সম্মেলনস্থলে উপস্থিত হলে শীর্ষনেতারা তাকে স্বাগত জানান। মঞ্চে উঠে প্রধানমন্ত্রী নেতাকর্মীদের উদ্দেশে হাত নেড়ে শুভেচ্ছা জানান। শেখ হাসিনা জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন, দলীয় পতাকা উত্তোলন করেন সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। সকাল ১০টা ৫ মিনিটে কবুতর ও বেলুন উড়িয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন তিনি। সম্মেলনে সারা দেশ থেকে দলের কাউন্সিলর ও ডেলিগেটরা অংশ নেন। দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা ছাড়াও বিভিন্ন দেশের অর্ধশতাধিক আমন্ত্রিত নেতা এতে উপস্থিত ছিলেন। সভাপতির ভাষণের পর সম্মেলন মুলতবি করেন শেখ হাসিনা। দুপুরে খাবারের বিরতির পর দ্বিতীয় অধিবেশন শুরু হয়।
উদ্বোধনী বক্তৃতায়, সন্ত্রাস এবং জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে তার সরকারের কঠোর অবস্থানের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা সন্ত্রাসবাদের ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছি। বাংলাদেশ হবে দক্ষিণ এশিয়ার শান্তিপূর্ণ দেশ। আমরা কখনোই বাংলাদেশের মাটিতে টেরোরিজমকে প্রশ্রয় দেব না। এদেশের মাটি ব্যবহার করে কাউকে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালাতে দেব না।’ তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের মাটি ব্যবহার করে প্রতিবেশী কোনো দেশে জঙ্গি হামলা চালাতে দেব না। বাংলাদেশের মাটিতে সন্ত্রাসীদের কোনো স্থান নেই। দক্ষিণ এশিয়া হবে প্রাচ্য-পাশ্চাত্যের সেতুবন্ধ। আর বাংলাদেশ সেই সেতুবন্ধ হিসেবে কাজ করবে।’
সময়স্বল্পতার কারণে বিদেশী অতিথিদের উদ্বোধনী অধিবেশনে বক্তৃতা দেয়ার সুযোগ করে দেয়া হয়। দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতারা বক্তব্য রাখেন দ্বিতীয় অধিবেশনে। সম্মেলনের উদ্বোধন ঘোষণার পর পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াতসহ অন্যান্য ধর্মগ্রন্থ থেকে পাঠ করা হয়। এরপর গ্রহণ করা হয় শোক প্রস্তাব। শোক প্রস্তাব গ্রহণের পর নিহতদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। এরপর অভ্যর্থনা উপকমিটির প্রধান ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য মোহাম্মদ নাসিম স্বাগত বক্তব্য রাখেন। তার বক্তব্যের পর সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম সাধারণ সম্পাদকের রিপোর্ট উপস্থাপন করেন। এরও আগে আসাদুজ্জামান নূরের পরিচালনায় ২০ মিনিটের একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
উদ্বোধনী ভাষণে দীর্ঘ পথ চলায় নেতাকর্মীদের ত্যাগের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আওয়ামী লীগকে এগিয়ে নিয়েছেন তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। তারাই দলের প্রাণ। কত মানুষ আঘাত পেয়েছেন, পঙ্গু হয়েছেন, দল করতে গিয়ে ত্যাগ স্বীকার করেছেন। তাদের অবদান অনেক। তিনি আরও বলেন, ‘বারবার আঘাত এসেছে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর। শত আঘাত উপেক্ষা করে আমাদের নেতাকর্মীরা এ দল ধরে রেখেছেন।’ এ সময় নিজের স্বজন হারানোর কথাও তুলে ধরেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী। তিনি বলেন,‘পঁচাত্তরে পরিবারের ১৮ সদস্যকে হারিয়েছিলাম। স্বাধীনতার পর তিন বছর না পেরোতেই বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়। বঙ্গবন্ধুকে যারা বাঁচাতে এসেছিলেন তাদেরও হত্যা করা হয়। আজ আমার এ বেঁচে থাকা অনেক কষ্টের, অনেক দুঃখের।’
সম্মেলন ঘিরে গত কয়েকদিন ধরেই আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে ছিল উৎসবের আমেজ। বাদ্যযন্ত্রসহ নানা রঙের ব্যানার-ফেস্টুন-প্ল্যাকার্ড-দলীয় পতাকা-জাতীয় পতাকা নিয়ে দলটির নেতাকর্মীরা সমবেত হন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। কঠোর নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যেই নেতাকর্মীরা সকাল ১০টার আগেই সমবেত হন। এলাকাজুড়ে ছিল আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের পদচারণায় মুখর। রাজধানীর প্রধান প্রধান সড়কে তোরণ তৈরি করা হয়। আয়োজন করা হয় আলোকসজ্জার। পুরো সম্মেলনকে ঘিরে ছিল নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা বেষ্টনী। ছিল পুলিশ, র‌্যাব ও এসএসএফের সতর্ক পাহারা। ছিল পাঁচ স্তরের নিরাপত্তা। সাদা পোশাকে মাঠে ছিল গোয়েন্দা দল। আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি আওয়ামী লীগের নিজস্ব নিরাপত্তা বাহিনীও নিয়োজিত ছিল কাউন্সিলের শৃংখলা রক্ষায়। পুরো সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও আশপাশের এলাকা ছিল ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরার আওতায়। কাউন্সিলের আগে মঞ্চ ও আশপাশে তল্লাশি করা হয় ডগ স্কোয়াড দিয়ে। সুইপিং করে বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট।
শেখ হাসিনা তার বক্তৃতায় বলেন, ‘পৃথিবীর প্রাচীনতম সংগঠনগুলোর মধ্যে আওয়ামী লীগ অন্যতম। ’৫২-র ভাষা আন্দোলন, ’৬৬-র ৬ দফা এবং মহান স্বাধীনতা-সবই এসেছে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে। আজকে আমরা রাষ্ট্র পেয়েছি, আত্মপরিচয়ের সুযোগ পেয়েছি এবং মাতৃভাষা বাংলায় কথা বলতে পারছি। এসবই আওয়ামী লীগের দান। আওয়ামী লীগই বাংলাদেশের সবকিছু এনে দিয়েছে।’ নেতাকর্মীদের অবদান স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের কাছে আমি কৃতজ্ঞ। সে সময় যারা ক্ষমতায় ছিল, তারা আমাকে দেশে আসার অনুমতি দেয়নি। কিন্তু তারা শত চেষ্টা করেও দেশে আসা আটকাতে পারেনি। আওয়ামী লীগ আমাকে সভাপতি করে দেশে নিয়ে এসেছিল।’
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশে আর কোনো দরিদ্র মানুষ যেন না থাকে সে জন্য আওয়ামী লীগ সরকারের পক্ষ থেকে বয়স্ক, দুস্থ ও প্রতিবন্ধীদের ভাতা দেয়া হচ্ছে। ৫৫ লাখ ৫০ হাজার মানুষ ভাতা পাচ্ছে। এ ধরনের ১৪৫টি সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি চলছে। সমাজের অনগ্রসর বেদে, হিজড়া, হরিজন সম্প্রদায়কে মাসে ৬০০ টাকা করে ভাতা দেয়া হচ্ছে। চা শ্রমিকদের জন্য ১৫ কোটি টাকা ভাতা দেয়া হচ্ছে। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, ‘আমরা সারা দেশে খাদ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছি। কৃষকদের সাহায্য করার জন্য জামানত ছাড়া কৃষি ব্যাংকের মাধ্যমে কৃষি ঋণের ব্যবস্থা করেছি। ২ কোটি ৫ লাখ ৭৫ হাজার ৩৯৭টি ভর্তুকি কার্ড দিয়েছি। আমরা এখন খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। বছরে এখন ৩ কোটি ৯০ লাখ টনের ওপর খাদ্য উৎপাদন হচ্ছে।
নিরাপত্তার স্বার্থে কাউন্সিলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান চলাকালে শাহবাগ থেকে মৎস ভবন পর্যন্ত সড়কে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল। একই সময়ে এ সড়ক দিয়ে কাউকে হেঁটেও চলাচল করতে দেয়া হয়নি। দোয়েল চত্বর থেকে টিএসসি হয়ে শাহবাগ পর্যন্ত সড়কেও যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ৬টি গেটে আর্চওয়ে বসিয়ে সারিবদ্ধভাবে অতিথিদের প্রবেশ করানো হয়। কাউন্সিলে অতিথিদের জন্য খাবার বহনকারী প্রতিটি গাড়ি স্ক্যানের পর উদ্যানে প্রবেশের অনুমতি দেয়া হয়। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বাইরে বিভিন্ন স্থানে বড় পর্দায় সম্মেলনের অনুষ্ঠানমালা প্রচার করা হয়।
শাহবাগ, টিএসসি, দোয়েল চত্বর, প্রেস ক্লাব, মৎস ভবন ও আশপাশের এলাকায় র‌্যাব সদস্যদের সারিবদ্ধভাবে মোটরসাইকেল টহল দিতে দেখা যায়। এ ছাড়া বিভিন্ন পয়েন্টে র‌্যাবের টহল দলের উপস্থিতি দেখা গেছে। র‌্যাব-৩-এর কন্ট্রোল রুম থেকে জানানো হয়, বড় জমায়েত হওয়ায় যে কোনো সময় আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে-এমন আশংকা থেকে র‌্যাব সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে ছিল। কাউন্সিলের কারণে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে যানবাহন ছিল কম। ফলে কিছু এলাকায় যানবাহন শূন্যতা ও কিছু এলাকায় দেখা দেয় যানজট। এতে কিছুটা দুর্ভোগে পড়েন নগরবাসী। কাক্সিক্ষত বাহন না পেয়ে অনেকে হেঁটেই গন্তব্যে পৌঁছান। কাউন্সিলে আসা অতিথি ও কাউন্সিলররা বিভিন্ন আবাসিক হোটেলে অবস্থান করছেন। এ কারণে রাজধানীর আবাসিক হোটেলগুলোতে পুলিশের নজরদারি বাড়ানো হয়।
প্রধানমন্ত্রী নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, দুস্থদের শুধু ভাতা দিয়ে চলবে না। তাই আমরা একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প হাতে নিয়েছি।
তাদের জন্য মাইক্রো ক্রেডিটের পরিবর্তে মাইক্রো সেভিংস চালু করেছি। ভূমিহীন, গৃহহীনদের জন্য আমরা ঘরবাড়ি করে দিচ্ছি। ঘর দিয়ে ঋণ দিয়ে আবাসনের ব্যবস্থা করে দিচ্ছি। যা দারিদ্র্য মুক্তিতে সাহায্য করবে। শেখ হাসিনা বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ এখন আর স্বপ্ন নয়। সারা দেশে এখন ইন্টারনেট আছে। সবার হাতে মোবাইল তুলে দিয়েছি। মোবাইল ফোনের মাধ্যমে কৃষকরা তথ্য পাচ্ছেন। ডিজিটাল সেন্টার, ই-কমার্স সেন্টার করা হয়েছে। শিক্ষার উন্নয়নে শিক্ষার্থীদের জন্য ১৯৩ কোটি বই বিনা মূল্যে দিয়েছি। শিক্ষা ক্ষেত্রে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুমের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাদের বৃত্তির ব্যবস্থা করা হয়েছে।
স্বাস্থ্য খাতের উন্নতির কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, দেশের মানুষকে বিনা পয়সায় ৩০ ধরনের ওষুধ দেয়া হচ্ছে। এর ফলে মাতৃ ও শিশুমৃত্যুর হার কমে এসেছে। এ ছাড়া দেশের এক লাখ পরিবারকে স্বাস্থ্যকার্ড দেয়ার পরিকল্পনাও আছে। শেখ হাসিনা বলেন, দেশের অবকাঠামো উন্নয়নের কার্যক্রম হিসেবে সড়ক, রেল ও বিমান যোগাযোগের ব্যাপক উন্নয়ন করা হয়েছে। দেশে এসব উন্নয়নের মাধ্যমে বিদেশী বিনিয়োগ বাড়ানোর ব্যবস্থা করেছি। তিনি বলেন, ‘নারীদের এগিয়ে নেয়ার জন্য যুগোপযোগী নারী নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে। কর্মক্ষেত্রসহ সব জায়গায় নারীদের সমান অধিকার নিশ্চিত করতে কাজ করেছি। প্রতিটি নির্বাচনে নারীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হয়েছে। বাংলাদেশের পার্লামেন্ট একমাত্র পার্লামেন্ট যেখানে সংসদ নেতা, বিরোধীদলীয় নেতা, স্পিকার, উপনেতা নারী। পৃথিবীর আর কোথাও এমন নজির নেই।’

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

four × 4 =