মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আইন ও বিচার বিভাগীয়মন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, যুদ্ধাপরাধী ট্রাইবুনাল সহ দেশের আইনপ্রয়োগকারী নিকট আবেদন রাজাকার জল্লাদ মোখলেছ এর বিচার চাই

0
1374

চাঁদপুর জেলা ফরিদগঞ্জে ১৯৭১ সালের রাজাকার জল্লাদ মোখলেছুর রহমানের দাবীতে প্রধানমন্ত্রী সহ ১৬ দপ্তরে বিচারের আবেদন। ফরিদগঞ্জ থানার মানুষ এখনও ভয়ে আঁৎকে উঠে সে নির্মম অত্যাচারের কথা স্মরণ করে। এখনও যেন সবাই শুনতে পায় সে মরণ কান্নার করুন সুর। শুভ্র দাঁড়ি ভরা নূরের মত চেহারার সেই পবিত্র মানুষটির উপর যে অমানুষিক নির্যাতন এবং বীভৎস কান্ড চালিয়েছিল হানাদার জল্লাদ পশুরা তা আজো যেন বারেবারে সবার চোখের সামনে মূর্ত হয়ে উঠে।”
চাঁদপুরের বিশিষ্ট আওয়ামীলীগ ও কিসমত ট্রেডার্সের মালিক মিজানুর রহমান পাটওয়ারী। তার বড় ভাই শহীদ আব্দুল মজিদ পাটওয়ারীর হত্যা লীলার বর্ননা দিতে গিয়ে উপরোক্ত কথাগুলো বলেন, তিনি বলে চলে যান কেউ তখন পারেনি সেই অসহায় মৃত্যুপথের যাত্রীটিকে এতটুকু সাহায্য করতে, জল্লাদ ও তাদের অনুচর হায়েনাদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়তে। লেখা শেষ করে আবার প্রশ্ন করতে গিয়ে দেখি ততক্ষনে মিজান সহেব আপন ভাইয়ের দুঃসহ বেদনার চিত্র তুলে ধরতে বারেবারে ব্যর্থ হচ্ছেন। করণ সারা দুনিয়ার কান্না যেন এক সাথে চাপ সৃষ্টি করছিল। গন্ডবয়ে আজস্র ধারায় অশ্রু গড়িয়ে পড়তে লাগল। এ কান্না দেখে চারদিক থেকে মানুষও ভিড় করছিল। কয়েকজনকে আবার চোখের অবাধ্য অশ্রু মুছতে দেখলাম। লোকজনের মাঝে থেকে কয়েকজন বলল হাজার হাজার লোক দূর থেকে গাছে চড়ে। ঘরের চালে উঠে রাজাকার ও পাকবাহিনী এ বুড়ো মানুষটির ওপর যে নির্যতন চালিয়েছিল তা অবলোকন করছিল এবং তার বিকট চিৎকারে পশুপাখি, মানুষও কেঁদেছে। মরহুম আবদুল মজিদ পাটওয়ারী ছিলেন ফরিদগঞ্জ থানার কালির বাজার সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি। এই সভাপতির পদটাই তার জন্য কাল হয়ে দাঁড়িয়েছিল। ১৯৭১ সালের ৫ জুলাই রাত তিনটায় পাক হানাদার বাহিনী ফরিদগঞ্জের রাজাকার প্রধান মৌলভী আব্দুল মান্নান ও রাজাকার জল্লাদ মোখলেছুর রহমান গং রাজাকার ও আলবদর নিয়ে শহীদ আঃ মজিদ পাটওয়ারীর হণী দূর্গাপুর গ্রামের বাড়ী আক্রমণ করে। ভোর ৬টা বাড়ির চারদিক ঘেরাও করে রাখে। এরপর শুরু অগ্নিসংযোগের পালা। ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে ধ্বংষ করতে থাকে। রাজাকার মোখলেছুর রহমান আব্দুল মজিদ পাটওয়ারীকে পাকিস্তানী হানদার বাহীনিকে দেখিয়ে দেন। পাকহানাদাররা এই পঁয়ষট্টি বৎসরের বুড়ো লোকটিকে অমানষিক নির্যাতন করে। রাইফেলের বাট দিয়ে পিটিয়ে হাড়মাংস চূর্ন করে ফেলে। এত নির্যাতনের পরেও পাকহানাদের তৃপ্তি মিটেনি। তাকে ছাদের ওপর থেকে নিচে ফেলে দেয়। তারপর পা উপরে মাথা নিচ করে ঝুলিয়ে রাখে। হাজার হাজার মানুষ দূর থেকে এই নির্যাতনের দৃশ্য অবলোকন করে। বহু চেষ্টার পরও তার লাশটি সংগ্রহ করা সম্ভব হয়নি। পাষন্ডরা লাশ গোপন করেও নিজেদের জেদ উড়াতে চেয়েছে। পঞ্চাশ হাজার টাকার বিনিময়েও লাশ ফেরত দেয়নি। মরহুম আব্দল মজিদ পাটওয়ারী চাঁদপুর মুন লাইট সল্ট ফ্যাক্টরীর মালিক ছিলেন। মত্যুকালে ৫ ছেলে ২য় মেয়ে রেখে যান। চাঁদপুরের প্রখ্যাত আওয়ামীলীগ কর্মী মিজানুর রহমান পাটওয়ারী তার ছোট ভাই। তারা ৪ ভাই ছিলেন। তিনি কালিরবাজার হাইস্কুলের প্রতিষ্ঠাতা, ফরিদগঞ্জ কলেজ গভর্নিং বডির সদস্য ছিলেন। তাছাড়া তিনি বহু প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত ছিলেন। তার মেঝ ছেলে হারুন অর রশিদ একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। সব শেষে মিজানুর রহামন পাটওয়ারী তার ভাইয়ের ছবি আমাকে দিতে গিয়ে কানায় ভেঙ্গে পড়েন। তিনি বলেন, পাকবাহিনী শুধু মানুষই হত্যা করেনি ব্যবসা, বানিজ্য, বাড়িঘর সব জ্বালিয়ে, পুড়িয়ে চুরমার করে দিয়েছে। এরপর আর লিখতে পারলাম না। কথা যত বাড়ে ব্যথাও তত বাড়ে তার দি¦গুন। আজ দেশ স্বাধীন হয়েছে। আমরা সবাই মুক্তির আনন্দে উদ্বেলিত। কিন্তু তিনি আজ আমাদে মাঝে নেই। তিনি আর ফিরে আসবেন না কোন দিনও। স্বাধীনতার স্বাদ উপভোগ কারীরা তার স্মৃতিকে তুলে ধরতে কখনও ভুল করবে না। ফরিদগঞ্জের রাজার কার প্রধান মৌলভী মান্নান ও রাজাকার জল্লাদ মোকলেছুর রহমান অত্যাচারীত হয়ে ছিলেন তাদের নাম নিম্নে দেওয়া হলো। লেখক মুক্তিযুদ্ধে চাঁদপুর, বীর মুক্তিযোদ্ধা ডাঃ মোঃ দেলোয়ার হোসেন খান, পিতা মৃত আমিন উল্লা খান, সাং-খুরুমখালী, ফরিদগঞ্জ, চাঁদপুর। ১। আওয়ামীলীগের নেতা চাঁদপুর, হাজীগঞ্জ ও ফরিদগঞ্জ থানার এমপি জনধরদী মরহুম নওজোয়ান ওয়ালি উল্লা সরদারের বাড়ী জ্বালিয়ে দিয়েছে চররামপুর। ২। নাতি পরন্দ দাস বয়স (৬৫), পিতা কাসী দাস সাং কেরোয়া, থানা ফরিদগঞ্জ পৌরসভা ওয়ার্ড নং-২ চাঁদপুর তাকে হত্যা করে। ৩। বিপল দাস, পিতা কার্তিক চন্দ্র দাস ঠিকানা ঐ ৪। সৈয়দ আলী পাটওয়ারী, পিতা মৃত কোরবান আলী পাটওয়ারী কে ১৯৭১ সালে হত্যা করে। আবুল বাশার পাটওয়ারী (৬০) পিতা মৃত সৈয়দ আলী পাটওয়ারী ৫। হায়দার বক্স পাটওয়ারী পিতা মৃত তোরাব আলী পাটওয়ারীকে গুলি করে হত্যা করে। ৬। হরন্দ দাস পিতা মৃত কাসী চন্দ্র দাস কে গুলি করে হত্যা করে। ৭। ডা. খলিলুর রহমান পিতা মৃত আবিদুর রহমান সাং কাছিয়াড়া পাটওয়ারী বাড়ী ফরিদগঞ্জ পৌরসভা বাড়ীঘর জ্বালিয়ে দেয়। ৮। মোঃ মনছুর আলী, পিতা মৃত সানি, গরু নিয়ে খায়, বাড়ীঘর জ্বালিয়ে দেয়। সাক্ষী ছেলে নুর মিয়া ৯। মৃত আব্দুল গফুর তালুকদার, সাং নয়াগাঁও বাড়ী ঘর জ্বালিয়ে দেয় মালামাল লুট করে। ১০। লোকমান তালুকদার (৫৫) পিতমৃত আব্দুল গফুর তালুকদার, ঠিকানা ঐ ১১। মোঃ মজিবুর রহমান মাষ্টার, শাহাপুর ঘরবাড়ী জ্বালিয়ে দেয় ছেলেকে গুলি করে হত্যা করে। ছেলে আঃ রব শাহপুর। ১২। ফরিদগঞ্জ কলেজের নিকট বেদেদের বাড়ী ঘর জ্বালিয়ে দেয়। ১৩। আসলাম সরদার, বাবা রাজাকার কমান্ডর ছিলেন মুক্তিবাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধ করে মারা যায়। ১৪। মোকলেছুর রহমান সরদার, রাজাকারের জল্লাদ, পিতামৃত আছলাম সরদার, রাজাকারের কমান্ডর ছিলেন। ১৫। তাফাজ্জল হোসেন পিতা মৃত আসলাম সরদার, সাং-কেরোয়া ওয়ার্ড নং-০২ ফরিদগঞ্জ, জেলা-চাঁদপুর। বাবা রাজাকার কমান্ডার ছিলেন মুক্তিবাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধ করে মারা যায়। ১৬। মোঃ হারুন আর রশিদ পাটওয়ারী, হাজী মোঃ আবুল কালাম পাটওয়ারী মোঃ আলম পাটওয়ারী হাজী মোঃ আবুল হোসেন (বাবুল পাটাওয়ারী), পিতা মৃত শহীদ হাজী আব্দুল মজিদ ভোলা পাটওয়ারী। সর্ব সাং দূর্গাপুর, পোঃ কালীর বাজার থানা ফরিদগঞ্জ জেলা-চাঁদপুর। এলাকায় সরেজমিনে তদন্ত করিলে স্বাধীনতার সময় রাজাকার জল্লাদ মোকলেছুর রহমান সরদার অত্যাচার নির্যাতন কাহিনী জানিতে পারিবেন আজও বয়স্ক বহু মা আছেন এই জল্লাদ মুকলেছুর রহমান ১৯৭১ সালে বাড়ী থেকে মা-বোনদেরকে ধরে এনে পাকিস্তান হানাদার বাহীনির ক্যাম্পে আন্দ ফুর্তি করার জন্য দিয়েছেন। শহীদ আবদুল মজিদ পাটওয়ারী তিনি শহীদ তিনি অমর, এই দানবীর ব্যাক্তিকে আজও এলাকাবাসী স্মরন করে।
অনুলিপি সদয় অবগতি ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের
জন্য প্রেরণ করা হইলঃ
১। মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়, বাংলাদেশ সচিবালয়, ঢাকা। ২। মাননীয় আইন ও বিচার ভিাগীয় মন্ত্রী, গণপ্রজাতন্ত্রী সরকার, আইন ও বিচার বিভাগীয় মন্ত্রনালয়, বাংলাদেশ সচিবালয়, ঢাকা। ৩। আলহাজ্ব শাসছুল হক ভূইয়া, মাননীয় সংসদ সদস্য, চাঁদপুর-৪, ফরিদগঞ্জ । ৪। মাননীয় সাবেক পরাষ্ট্র মন্ত্রী এমপি দীপুমনি, চাঁদপু হাইমচর-৩। ৫। সম্মানিত মহা পুুলিশ পরিদর্শক, পুলিশ হেড কোয়ার্টর, ফুলবাড়ীয়া, ঢাকা। ৬। আন্তর্জাতিক যোদ্ধ অপরাধী বিচার কর্যালয়, ঢাকা। ৭। পরিচালক বাংলাদেশ সি, আই ডি কার্যালয় মালিবাগ, ঢাকা। ৮। পরিচালক, র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়া (র‌্যাব), প্রধান কর্যালয়, উত্তরা, ঢাকা। ৯। অধিনায়ক, র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয় (র‌্যাব)-১১, নারয়নগঞ্জ। ১০। ডি আই জি চট্টগ্রাম বিভাগীয় ডি আই জির কর্যালয়, চট্টগ্রাম। ১১। জেলা প্রশাসক, চাঁদপুর। ১২। পুলিশ সুপার, চাঁদপুর। ১৩। নির্বাহী কর্মকর্তা, ফরিদগঞ্জ উপজেলা, চাঁদপুর। ১৪। উপজেলা চেয়ারম্যান, ফরিদগঞ্জ উপজেলা, চাঁদপুর। ১৫। ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, চাঁদপুর জেলা ডিবি, চাঁদপুর। ১৬। ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, ফরিদগঞ্জ থানা, চাঁদপুর। ১৭। মেয়র মাহফুজুল হক, ফরিদগঞ্জ পৌরসভা, ফরিদগঞ্জ, চাঁদপুর। সরজমিনে  আনোয়ার হোসেন কালু পাটওয়ারী জানতে জান রাজাকার জল্লাদ মোখলেছের বিষয়। ফরিদগঞ্জ উপজেলার থানা কমান্ডার শহীদুল্লাহ তপাদার এর সাথে আলোচনা হয় এবং চাঁদপুর মুক্তিযুদ্ধো বাইয়ে ৩২৪/৩২৫ পাতায় ২৩৩/২৩৪ পাতায় শহীদ আবদুল মজিদ পাটওয়ারী তিনি শহীদ ও  অমর (বজ্র-বানী) জল্লাদ মোখলেছুর রহমান কিভাবে পেট্রোল দিয়ে জ্বালিয়েছে পাতা সহ ফরিদগঞ্জ উপজেলার মুক্তিযুদ্ধা সংসদ কমান্ডার শহীদ উল্লাহ তপাদার ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার জয়নাল আবদিন, উপজেলার চেয়ারম্যান আবু সাইদ সরকার, ফরিদগঞ্জ পৌর মেয়র মাহফুজুল হক তাহাদের হাতে বইয়ের কপি গুলো পৌছিয়ে দেন এবং এই রাজাকারকে আইনের আওতায় এনে বিচার হওয়া একান্ত আবশ্যক। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যুদ্ধ অপরাধীদেরকে আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল গঠন করে ফাঁসি দিয়েছেন। আমরা মহান আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি আল্লাহ যেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে র্দীঘ আয়ু দান করেন। বাংলাদেশের যুদ্ধ অপরাধী ও চাঁদপুর জেলা ফরিদগঞ্জের রাজাকার জল্লাদ মোখলেছুর রহমান সরদারকে গ্রেফতার করে আইনানুগ ব্যাবস্থা নেওয়ার জন্য আপনা মর্জি কামনা করি। মাহান আল্লাহ আপনার সহায় হউক।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

1 × three =