নোমান মাহমুদঃ
উত্তরা (পশ্চিম) থানা এলাকায় পুলিশের প্রকাশ্য চাঁদাবাজির দৃশ্য দেখা গেছে। উত্তরা (পশ্চিম) থানাধীন সুইসগেট মসজিদ সংলগ্ন রাস্তার দু’পাশে অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে প্রায় ৫০-৬০টি বিভিন্ন রকমের দোকান। যার মধ্যে রয়েছে চায়ের দোকান, মুদি-মাল, সবজি, মুরগী, গরুর মাংসের দোকান সহ ইত্যাদি। আর এই দোকানগুলোকে কেন্দ্র করে এ সকল গরীব ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের নিকট থেকে প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট অংকের টাকা আদায় করছে উত্তরা (পশ্চিম) থানা পুলিশ। গতকাল এমন দৃশ্যই ধরা পড়ে অপরাধ বিচিত্রার ক্যামেরায় । প্রতিটি দোকান থেকে ১০০-১৫০ টাকা হারে প্রায় ৬-৭ হাজার টাকা আদায় করা হয় প্রতিদিন। সন্ধার পর উত্তরা (পশ্চিম) থানা পুলিশের টহল গাড়ী এ টাকা আদায় করে। এ ব্যাপারে ঐ স্থানের এক চা বিক্রেতার সাথে কথা বললে তিনি বলেন, “আমরা গরীব মানুষ, এই দোকান দিয়ে সংসার চলে। পুলিশকে টাকা না দিলে পুলিশ এসে দোকান ভেঙে দিয়ে যাবে, আর তখন পরিবার নিয়ে না খেয়ে মরতে হবে। টাকা দিলে পুলিশ আর কিছু বলেনা, শান্তিতে ব্যবসা করতে পারি। এছাড়াও উত্তরা (পশ্চিম) থানাধীন খালপাড়, ১১নং সেক্টর চৌরাস্তা থেকে সুইসগেট, ৫নং সেক্টর, ১৪ নং সেক্টর, সহ বিভিন্ন সেক্টর ও সেক্টরের বাহিরে ঘুরে দেখা গেছে ঐসব স্থানে রাস্তার পাশে রয়েছে অসংখ্য ভ্রাম্যমান ও ফুটপাত ব্যবসায়ী। যাদের সকলকেই প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট অংকের টাকা উত্তরা (পশ্চিম) থানা পুলিশকে প্রদান করতে হয় এবং এসকল টাকা আদায় করা হয় ঐসব স্থানের দায়িত্বে থাকা টহল পুলিশের মাধ্যমে। ৫ নং সেক্টর কল্যান সমিতির সামনের এক পেয়ারা বিক্রেতার কাছে জানা যায় প্রতিদিন ঐ ব্যবসায়িদের নিকট থেকে ২ দফায় কখনো বা ৩ দফায় উত্তরা (পশ্চিম) থানা পুলিশ এ টাকা আদায় করে। কোন ব্যবসায়ি পুলিশকে টাকা দিতে না চাইলে ভেঙে দেওয়া হয় তার দোকান। যার দরুন এক প্রকার বাধ্য হয়েই তাদের পুলিশকে চাঁদা প্রদান করতে হয়। যদিও রাজউকের আওতাধীন এই এলাকায় সকল প্রকার অবৈধ স্থাপনা নির্মান, ফুটপাত দখল করে কোন প্রকার ব্যাবসা, রাস্তার পাশে ভ্রাম্যমান ব্যাবসায়ীদের অবস্থান সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ তবুও জীবন ও সংসারের তাগিদে ছুটে আসা এসকল ক্ষুদ্র ব্যাবসায়ীদের নিকট থেকে উত্তরা (পশ্চিম) থানা পুলিশের এমন প্রকাশ্য চাঁদাবাজি অত্যন্ত ঘৃণ্য মানষিকতার পরিচয় দেয়। তাছাড়া পুরো উত্তরা (পশ্চিম) থানা এলাকা ঘুরে দেখা যায়, প্রতিদিন প্রায় লক্ষাধিক টাকা চাঁদা শুধু এসকল ক্ষুদ্র ব্যাবসায়ীদের কাছ খেকেই পুলিশ আদায় করে আর পুলিশের এহেন প্রকাশ্য চাঁদাবাজিতে উদ্বিগ্ন উত্তরা (পশ্চিম) থানা এলাকাবাসী। এব্যাপারে উত্তরা ৫ ও ১১ নং সেক্টরের কয়েকজন বাসিন্দার সাথে কথা বললে তারা বলেন, “পুলিশ জনগনের বন্ধু। যেখানে পুলিশ সকল প্রকার অন্যায়, অত্যাচার চাঁদাবাজি প্রতিহত করবে সেখানে খোদ পুলিশই যদি চাঁদাবাজে রুপান্তর হয় তবে এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ছাড়া কোন প্রকার উন্নতি আশা করা যায়না।” এ ব্যাপারে তারা পুলিশের উর্ধত্বন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। অনতিবিলম্বে পুলিশের এ সকল দুর্নীতি বন্ধ করা না গেলে এবং উত্তরা (পশ্চিম) থানায় কর্মরত এসকল অসাধু ও দুর্নীতিবাজ পুলিশ কর্মকতাদের বিরুদ্ধে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহন ও তাদের অপসারন করা না হলে এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির মারাতœক বিপর্যয় ঘটবে। অপরাধের আখরায় পরিনত হয়ে ঝুকিপূর্ণ হয়ে পড়বে পুরো উত্তরা (পশ্চিম) থানা এলাকা। যার দায়ভার নিতে হবে গোটা পুলিশ বাহিনীকে।
হোম অন্যান্য পাঁচমিশালি উত্তরা পশ্চিম থানা এলাকায় পুলিশের প্রকাশ্য চাাঁদাবাজি ! বাদ পড়ছে না সাধারন...