তুরাগে দুই মেয়েকে দিয়ে মা তানিয়া বেগমের অনৈতিক ব্যবসা

0
1783

নিজস্ব প্রতিবেদক ঃ
রাজধানীর তুরাগ থানা এলাকার শেখদিরটেক গ্রামে তানিয়া বেগম নামক মহিলার বিরুদ্ধে ২ মেয়ে দিয়ে দেহ ব্যবসা ব্ল্যাকমেলিং ও মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করে টাকা আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযোগে প্রকাশ বরিশাল এলাকা থেকে অনেক অপকর্ম করে পালিয়ে এসে শাহজাহান মিয়া ওরফে সাজু নামক ব্যক্তি মেখদিরটেক নামক স্থানে এক খন্ড জমি কিনে বাড়ি তৈরি করে স্বপরিবারে বসবাস শুরু করে। শাহজাহান মিয়ার সংসারে ৪ কন্যা ও স্ত্রী নিয়ে মোট ৬ জনের বসবাস। প্রথম প্রথম ভালোই চলছিল ওদের সংসার। এক পর্যায়ে তুরাগের শুক্রাভাঙ্গা গ্রামের প্রভাবশালী ব্যক্তি হাজী আবদুর রাজ্জাকের পুত্র ফরিদ হাসানের সঙ্গে বিয়ে হয় তানিয়ার বড় মেয়ে সানজিদার। বিয়ের পর থেকে হাজী রাজ্জাকের সহায় সম্পত্তির উপর লোভ জন্মায় তানিয়া বেগমের। মেয়ে সানজিদাকে ব্যবহার করে নানান ছতানাতায় তানিয়া বেগম অনেক টাকা পয়সা হাতিয়ে নেয়। ছেলে ফরিদকে ব্যবসা করার জন্য হাজী রাজ্জাক ৫ লাখ টাকা দিলে তাও জমির ব্যবসা করার কথা বলে হাতিয়ে নেয় তানিয়া বেগম। পরবর্তীতে জমির দালাল টাকা নিয়ে পালিয়ে গেছে বলে জানিয়ে টাকা আত্মসাত করে ফেলে তানিয়া বেগম। এনিয়ে তর্ক বির্তক শুরু হলে তানিয়া বেগম তুরাগ থানায় মিথ্যা নারী নির্যাতন মামলা দিয়ে হয়রানী শুরু করে রাজ্জাক পরিবারকে। শেষ পর্যন্ত ৫ লাখ টাকার কথা ভুলে গিয়ে আরো ২ লাখ টাকা তানিয়া বেগমকে দিয়ে মামলাটি আপোষ করেন হাজী আবদুর রাজ্জাক। সবচেয়ে বড় সমস্যা দেখা দেয় পুত্রবধূ সানজিদাকে নিয়ে। চরিত্রহীনা সানজিদা সবসময় পর পুরুষের সাথে অনৈতিক যোগাযোগ রক্ষা করার বিষয়টি নিয়ে এদের মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া ফ্যাসাদ লেগে থাকে। ৫ থেকে ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে সানজিদা পরপুরুষের সাথে মেলামেশা করতে যাবার বিষয়টি জানতে পেরে স্বামী ফরিদ দুই বার আত্ম হত্যা করার চেষ্টা করেছে। এদিকে ২ মেয়ে তানজিলা ও সামিরাও বড় হয়ে ওঠে। এলাকাবাসী জানায় তানিয়া বেগম নিজে টাকার বিনিময়ে বিভিন্ন ব্যক্তির বিছানায় যেতো নিয়মিত। তার বাড়ির নিকটে আর কোন বাড়ি না থাকায় খদ্দরকে বাড়িতেই ডেকে আনতো তানিয়া বেগম। দুই কন্যা তানজিলা ও সামিরা বড় হবার পর তাদেরকে দিয়েও দেহ ব্যবসা শুরু করে তানিয়া বেগম। কারণ এছাড়া সংসার চালানোর আর কোন উপায় ছিল না তানিয়া বেগমের। তবে তানিয়া বেগমের পরিচিত খদ্দররা সানজিদাকেই বেশি পছন্দ করতো। ফলে প্রায়ই মা তানিয়া বেগম খদ্দর রেডি করে সানজিদাকে বাসায় নিয়ে গিয়ে খদ্দরের মনোরঞ্জন করতো। গত কোরবানীর ঈদের ২ দিন আগে ঘটে যায় একটি অন্যরকম ঘটনা। ঈদের ২ দিন আগে মা ডেকেছে বলে মায়ের বাসায় যায় সানজিদা। এদিকে তুরাগে নিজের একটি বাড়ি দেখাশোনা করে পাশেই অবস্থিত বেয়াইনের বাড়িতে যান হাজী রাজ্জাক। বাড়ির কাছে পৌঁছতেই দেখেন তার বেয়াইন তানিয়া বেগম পুকুরের গোসল করছেন। বেয়াইকে দেখে তিনি দ্রুত পুকুর থেকে ওঠে বাড়ির দিকে দৌড় দেন। এতে হাজী রাজ্জাকের সন্দেহ হলে তিনিও বেয়াইনের পিছু নেন। ঘরের ভিতরে ঢুকেই হাজী সাহেব দেখে তার পুত্রবধূ সানজিদা ব্লা পড়ছে আর দুইজন অপরিচিত লোক কাপড় চোপড় ঠিক করছে। ঘটনাটি বুঝতে পেরে হাজী সাহেব তার পুত্র ফরিদকে ফোন করে ঘটনাটি জানান। ঘটনা শোনে ফরিদ দ্রুত শ্বশুর বাড়িতে গিয়ে স্ত্রী সানজিদার কাছে ঐ ২ ব্যক্তির পরিচয় জানতে চাইলে সানজিদা বলেন, ওরা আমার খালাতো ভাই। ফরিদ তখন বলেন যে, তোমার তো কোন খালাতো ভাই নাই। একজন ছিলেন সে মারা গেছে। যাক এখন বাসায় চলো। বাসায় যাবার পর ২ জনের মধ্যে  কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে ফরিদ সানজিদাকে একটি থাপ্পর মারে। এতে উত্তেজিত হয়ে সানজিদা তুরাগ থানায় অভিযোগ দাখিল করে। কিন্তু পুলিশ দিয়ে ফরিদকে গ্রেফতার করাতে না পারায় বাপের বাড়িতে চলে যায়। এরপর মা ও মেয়ে যুক্তি করে হাজী রাজ্জাককে টেলিফোন করে বাড়িতে এনে একটি কক্ষে আটকে রেখে চিৎকার করতে থাকে যে, হাজী রাজ্জাক তার মেয়ে তানজিলাকে ধর্ষণ করেছে। এরপর তার কাছে ২০ লাখ টাকা দাবি করে। খবর পেয়ে এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তিরা গিয়ে রাজ্জাককে ছাড়িয়ে আনে এবং স্থানীয়ভাবে শালিশের মাধ্যমে ঘটনাটি মীমাংসা করে সানজিদাকে স্বামীর বাড়ি পাঠিয়ে দেয়। কিছুদিন ভালই চালছিলো ওদের সম্পর্ক। গত ৮/১১/২০১৬ তারিখে হঠাৎ তানজিলা একটি নালিশী মামলা দায়ের করে যে হাজী রাজ্জাক গত ১৬/৯/২০১৬ তারিখে টঙ্গীর একটি আবাসিক হোটেলে নিয়ে তাকে ধর্ষণ করেছে। আদালত তার ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য গাজীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। ডাক্তার যে মেডিকেল সার্টিফিকেট দিয়েছে তাতে মন্তব্যের ঘরে লেখা হয়েছে যে, ধর্ষণের কোন আলামত পাওয়া যায়নি। আরো মজার ব্যাপার হচ্ছে তানজিলা যে বিবাহিত এব চার মাসের অন্তরসত্তা একথাটি মামলায় উল্লেখ করা হয়নি। ফলে মামলাটি নিয়ে এলাকায় বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। এখন তানিয়া বেগম বলছেন তাদের নামে তিন কাটা জমি লিখে দিলে তারা মামলাটি আপোস করবেন।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

two × four =