তিতাসের দুর্নীতিবাজ পিয়ন জহিরের খুটির জোড় কোথায়? তিতাসের দূর্নীতিবাজ পিয়ন জহির এখনো ধরা ছোয়ার বাইরে

0
1207

স্টাফ রিপোর্টঃ প্রিয় পাঠক পহেলা জানুয়ারী ২০১৭ থেকে তিতাস গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি কার্যকর হতে যাচ্ছে। জনগণের উপর বারতি বিলের বোজা চাপিয়ে দিয়ে সরকার জণসাধারনকে ভোগান্তিতে ফালাচ্ছেন। সরকার জদি তিতাসের দুর্নীতি বন্ধ কওে তিতাস গ্যাস ট্রান্সেশমিশন কোম্পানিতে অসাধু কর্মকর্তা ও কর্মচারী রয়েছেন তাদের অবৈধ উপায় অর্জিত ইনকাম বন্ধ করলে তাহলে জনগণের উপর বাড়তি বিলের বোঝা চাপাতে হত না।

IMG_20161018_145229
দুর্নীতিবাজ মোঃ জহিরুল ইসলামের চলাফেরা দেখলে মনে হবে তিনি একজন উর্দ্বতন কর্মকর্ত, ভি আইপি, অথবা শিল্পপতি। জহির চলাফেরা করেন প্যারাডো গাড়ীতে। তৃতীয় স্ত্রী নিয়ে থাকেন তিতাসের আবাসিক কোয়াটারে ডেমরায়। তৈরি করেছেন ডেমরা সারুলিয়া আমতলা এলাকায় দুই ইউনিটের বিলাস বহুল বাড়ী। বিয়ে করেছেন ৩টি। তিন ফ্যামিলিতে রয়েছে ছেলেমেয়ে ৬টি । স্ত্রী, সন্তান ও ভাগিনা সহ নামে বে-নামে রয়েছে কোটি কোটি টাকার মূল্যের সম্পদ। এখানে তিনি তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন কোম্পানীর চতুর্থ শ্রেণীর (পিয়ন) কর্মচারী জহিরুল ইসলাম। কুমিল্লার বুড়িরচং  উপজেলার আনন্দপুর গ্রামের আব্দুল গফুর সরদার এর ছেলে মোঃ জহিরুল ইসলাম। তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন কোম্পানীতে কারওয়ান বাজার প্রধান কার্যালয় বান্ডার বিভাগের চতুর্থ শ্রেনীর কর্মচারী জহিরুল ইসলাম, যার কোড নং-০৯০৮৩। কর্মরত একজন পিয়ন হিসেবে পূর্বে বেতন ৫৫০০/-টাকা। সর্ব সাকুল্যে পেতেন ৮০০০/ টাকা। বর্তমানে ১১,০০০/- (এগার হাজার) টাকা পে-স্কেলে সর্ব সাকুল্যে বেতন পান ১৬,০০০/- (ষোল হাজার) টাকা। শুনলে অবাক হবেন, তার গাড়ীর ড্রাইভারের বেতন বৈধ আয়ের চেয়েও দ্বিগুন। অবৈধ উপায়ে অর্থ উপার্জন করে অঢেল সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলছেন দুর্নীতিবাজ জহির। অল্প সময়ের মধ্যে অঢেল সম্পদের মালিক হওয়ায় এলাকাাবাসীর কাছে অবিশ্বাস্য মনে হচ্ছে। তারা বলেন, কিভাবে জহির আলাদিনের চেরাগের মত গাড়ী, বাড়ী, নারী পেয়ে গেলেন। দুর্নীতির মাধ্যমে অঢেল সম্পদের মালিক জহিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে প্রধানমন্ত্রী, দুর্নীতি দমন কমিশন, বিদ্যুৎ, জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী, সচিব, বাপেক্স চেয়ারম্যান, তিতাস গ্যাস ট্রান্স মিশন কোম্পানীর এমডি বরাবর অভিযোগ প্রদান করেছে জহিরের সম্পদের বিবরণী তুলে সচেতন এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে। তার কোন প্রতিকার না পেয়ে এলাকা বাসী ক্ষুদ্ধ। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, জহিরুল ইসলামের চাকুরি শুরু করে তিতাসে মাস্টার রোল থেকে। মাস্টার রোলে থাকা অবস্থায় অপকর্ম করায় তার শাস্তি হয়। ২০০৮ সালে ডিসেম্বর মাসে ৩৩৬ পিছ চার ইঞ্চি পাইপ চুরির দায়ে অভিযুক্ত হয়ে তদন্তে দোষীসাব্যস্ত হলে তার সুযোগ সুবিধা বন্ধ থাকে। ডেইলিবেসিস থাকা অবস্থায় ফাইল চুরির দায়ে নারায়ণগঞ্জ থেকে বহিস্কৃত হন। প্রধান কার্যালয় তিতাস গ্যাস ভান্ডার বিভাগের পিয়ন জহির সরকারী দলের সিবিএ নেতা, উর্দ্বতন কর্মকর্তা এমনকি রাজনৈতিক নেতাদের অবৈধ সুযোগ সুবিধা দিয়ে নিজে অল্প সময়ে অঢেল সম্পাদের মালিক হয়েছেন। তার এই অবৈধ অর্থের জোরের কারণে মানুষকে মানুষ বলেই গন্য করেনা। তার এই অবৈধ আয়ের পিছনে ৩টি বাহিনী কাজ করছে। তিতাসের ভিতর বিভিন্ন ইন্ডাস্ট্রিতে বাইপাস লাইন, মিটার টেম্পারীং, অবৈধ সংযোগ এবং বিশাল ক্যাডার বাহিনী নিয়ে সাবেক গ্যাস স¤্রাট এমরানের সহযোগী হিসেবে কাজ করে জহিরের তৃতীয় স্ত্রীর উকিল বাবা। কর্মচারীদের ট্রান্সফার, চাকুরীতে ঢুকানো, চাকুরীচ্যুত কাজগুলো করে থাকেন জহির নিজেই। তার রয়েছে ৩টি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। আইনানুযায়ী তিতাসে চাকুরীরত কেউ ঠিকাদারী করতে পারে না। এই ৩টি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের দুটি ২ স্ত্রী এবং একটি ভাগিনার নামে করছেন বিথী এন্টার প্রাইজ। পরিচালনা করছেন নিজেই। জানা যায় জহিরের বড় স্ত্রী ও ছোট স্ত্রী এরা কেউ লেখাপড়া জানে না। এরা কিভাবে ব্যাংক ব্যালেন্স ও প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করে। নাম তাদের থাকলেও সব কিছুতে সই স্বাক্ষর ও ক্ষমতার অবব্যহার করে জহিরুল নিজেই পরিচালনা করে থাকেন। চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী হিসেবে তার থাকার কথা অফিসের কাজে তিনি অফিসের কাজ করেছেন কিনা তা কতৃপক্ষ ই ভাল জানেন । সারাক্ষন প্যারাডো গাড়ী নিয়ে অবৈধ সংযোগ দিয়ে যাচ্ছেন মিটার ট্যাম্পারিং  ও অবৈদ সংযোগের মাষিক মাসুয়ারা তুলে বেড়াচ্ছেন। আর এ কাজে তাকে সহযোগিতা করে থাকেন সায়েম। সায়েম জহিরের সকল অবৈদ কাজের প্রধান সহযোগি। সূত্রে জানা যায় জহিরের অবৈদ লাইন বসানোর জন্য তাহার ব্যক্তি গত লোক আছে যাহার নাম জুনু মিয়া ও শরিফ মিয়া। জুনু মিয়া মতিঝিলে ও শরিফ বর্তমানে নারায়ণগঞ্জে  তিতাস অফিসে কর্মরত আছেন। শরিফ ও জুনু মিয়া মেইন লাইনে অফিসের মেশিন দিয়ে পাইপ লাইন ডিলিং করার পারদর্শী। অবৈধ লাইন বসানোর সমস্ত মেশিনারীইজ তার নিজস্ব আছে। প্রতি মাসে জহিরের অবৈদ আয়  প্রায় ৩০-৩৫ লক্ষ টাকা। জহিরের অবৈধ আয়ের কারণে তিতাস গ্যাস কোম্পানী বছরে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে।IMG_20161020_104830
জহিরের সম্পদের ফিরিস্তি ঃ
প্যারাডো গাড়ী যার নং-ঢাকা মেট্রো ঘ ১৩০৩৯৫। এই গাড়ীটি আওয়ামী লীগ দলীয় এক সংসদ সদস্যের কাছ থেকে ৪৫ লাখ টাকা দিয়ে কিনেছেন। চালাকি করে গাড়ীটির নাম ট্যানেসফার করেনি। এমপি সাহেবের নামে রয়েগেছে। জানা যায় প্যারাডো গাড়িটি কিনেছেন কাজী কার সেন্টার এর মাধ্যমে। অভিযোগের কথা জানতে পেরে গাড়ীটি আবার কাজী কার সেন্টার এর নিকট বিক্রি করে দেন জহির। বর্তমানে একটি নওয়া গাড়ী মাষিক ভাড়া করে চলাফেরা করছেন বলে যানা যায়। ডেমরার সারুলিয়া আমতলায় ২ ইউনিটের একটি বিলাস বহুল ৬ তলা বাড়ী। আমুলিয়া মডেল টাউনে ১০ কাঠার প্লট, মাতুয়াইল মুসলিম নগরে ৩ কাঠার প্লট, বনশ্রীতে ২টি বিলাস বহুল ফ্ল্যাট আছে। গ্রামের বাড়ীতে রয়েছে ৫০ বিঘা জমি। প্রায় ৫ কোটি টাকা বাজেটে গ্রামের বাড়ীতে একটি বিলাস বহুল বাড়ী করেছেন। ইতিমধ্যে বাড়ীটি ৩ তলা পর্যন্ত নির্মান হয়েছে। এছাড়া রয়েছে ডেইরী ফার্ম ও মৎস খামার। ডেমরা আমতলার বাড়িটি ছোট স্ত্রী আছমা বেগমের নামে। এই বাড়িটি বিক্রির জন্য জহির প্রায় ছোট স্ত্রীকে নির্যাতন করে  আসছে। বাড়ীটি ও অন্যান্য সম্পদ বিক্রি করে বিদেশে সেকেন্ড হোম বানানোর চেষ্টায় চালাচ্ছে। নিজেও দেশ ত্যাগ ও আত্মগোপন করতে পারেন বলে জানা যায়। বিভিন্ন ব্যাংকে নামে বে-নামে রয়েছে কোটি কোটি টাকা।
অভিযোগ সূত্রে আরো জানা যায়, ২০১৬ সালে আগষ্ট মাসে তিতাস গ্যাস রানী মহল ডেমরা আবাসিক কল্যান সমিতির ক্লাবের জুয়ার আসর থেকে গ্রেফতার হয় জহির। সাভারে সুইচ কোয়ালিটির অবৈধ ফাইলের কাজ বাবদ কিছুদিন আগে প্রায় ১ কোটি টাকা গ্রহন করেন। ২০১৫ সালে টঙ্গীতে একটি গার্মেন্টস এ অবৈধ লাইন দিতে গিয়ে আগুন লাগে। কাজটি ছিল জহিরের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের। এ ঘটনায় অনেক লোক আহত হয়। এ সংবাদ বিভিন্ন চ্যানেল ও পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। সচেতন এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে গত ১৫-১২-২০১৬ তারিখে বিক্রয়কৃত প্যারাডো গাড়ীটি যার নং-ঢাকা মেট্রো ঘ ১৩০৩৯৫ উদ্ধারের জন্য ও অন্যান্য সম্পদ আটক করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দূদক চেয়ারম্যান বরাবর একটি অভিযোগ প্রদান করেন এলাকাবাসির পক্ষ থেকে। সূত্রে জানা যায় এলাকার সচেতন জনগণ পূর্বের অভিযোগের কোন প্রতিকার না পেয়ে হতাসাগ্রস্ত। এলাকাবাসি ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়ায়  জানান দুর্নীতিবাজদের সঠিক তথ্য দুদকের কাছে প্রদান করার পরেও দুর্নীতিবাজরা ধরা ছোঁয়ার বাইরে থেকে যায় অথবা পার পেয়ে যায় তাহলে দুর্নীতির সঠিক তথ্য দিয়ে কি লাভ ? দুদকের কাছ থেকে জনগণ কি আশা করতে পারে। আর জহির যাকে সন্দেহ করছে তাকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি দিয়ে বেড়াচ্ছে বলে এলকাবাসি  জানান। এই ব্যাপারে জহিরের কাছে মুঠো ফোনে জানতে চাইলে জহির বলেন আমার বিরুদ্ধে একটি মহল ষড়যন্ত্র করছে। এবং অন্য প্রশ্নে জবাবে সে বলেন যে সকল সম্পদের তথ্য পেয়েছেন সকলই আমার কিন্তু ভাই নিউজটি করবেন না আমি আপনাদের সাথে দেখা করবো। বলেন তো? কয় টাকা বেতন পাই তাতে কি হয় যদি কিছু এদিক সেদিক না করি তাহলে কি করে চলব।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দুর্নীতির বিরুদ্ধে সব সময় আপসহীন থেকেছেন। সরকার দলীয় লোকজনদেরও ছাড় দেননি তিনি। তাই তারা আশা করছেন, সঠিক তদন্তের মাধ্যমে দুর্নীতিবাজ জহিরের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য দুদক সহ সংশ্লিষ্ট সকলে দৃষ্টি দিবেন বলে এলাকার সচেতন জনগণ আশাবাদি। দূর্নীতিবাজ তিতাসের পিয়ন মোঃ জহিরুল ইসলামের ছবি
দূর্নীতিবাজ তিতাসের পিয়ন মোঃ জহিরুল ইসলামের ডেমরা, সারুলিয়া আমতলা  এলাকায় বিলাসবহুল ২ ইউনিটের ৬ তলা বাড়িটি
দূর্নীতিবাজ তিতাসের পিয়ন মোঃ জহিরুল ইসলামের বিক্রয়কৃত প্যারাডো গাড়ীর  ঢাকা মেট্রো ঘ ১৩০৩৯৫ ছবি

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

4 − one =