চলতি বছরের শুরুতে আগাম বৃষ্টি এবং সৃষ্ট লঘুচাপের কারণে টানা ৩দিনের বৃষ্টিতে ভোলার রবি শস্য ও ফসলি জমিতে ব্যাপক ক্ষত-ক্ষতির হয়েছে । এতে করে ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় ৫০ হাজার ৮শ’ ৪৭ জন কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বলেও জানা যায়।
সরেজমিনে ঘুরে ঘুরে দেখা যায়, টানা ৩দিনের বৃষ্টির কারনে কৃষকের মাঠে নেই। অপর দিকে কৃষি জমিতে বৃষ্টির পানিতে ভরপুর। জমিতে চাষ করা কৃষি তা বৃষ্টির পানির নিচে পড়ে আছে। এতে দেখা যায় কৃষকের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে । এর আগেও আগাম বৃষ্টির কারনে ভোলার কৃষকের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছেও বলে জানান কৃষকেরা।
যার ফলে এ বছর ভোলায় ৮৬ হাজার ৩শ’ ৩০ হেক্টর জমির মধ্যে ১৯ হাজার ১৬ হেক্টর জমি দূর্যোগ কবলিত হয়েছে বলে জানা যায়। যার মধ্যে ৬ হাজার ৮শ’ হেক্টর জমি সম্পূর্ণ এবং ১৬ হাজার ৪শ’ ১৬ হেক্টর জমির কৃষিতে আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। উপৎপাদনের যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিলো তাতেও প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়েছে। ফলে ১ লাখ ৮০ হাজার ১৭ মেট্রিক টন ফসলের ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। টানা বৃষ্টির কারনে জমিতে চাষ করা কৃষি রবি শস্যর ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন ভোলার চাষীরা। এতে প্রায় ২’শ কোটি টাকার ক্ষতির সম্মুখিন। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানিয়েছেন, চলতি বছরের ৭মার্চ থেকেই আগাম বৃষ্টি এবং লঘুচাপের কারণ টানা বৃষ্টির কারনে এ বছর ভোলার কৃষকের দূর্যোগ কবলিত হয়ে আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কৃষকের বেশি ক্ষতি হয়েছে তরমুজ, গোলালু। তিল,খেসারী ডাল, মুগ,মরিচ, শাক-সবজিত,সয়াবিন। আগাম ও টানা বৃষ্টি ও সৃষ্ট লঘুচাপের রবি শস্য হারিয়ে কৃষকরা এখন দিশেহারা। ইলিশা ইউনিয়নের আলু চাষি নুরে আলম জানান, এ বছর তিনি ১০ একর জমিতে আলু চাষ করেছেন। এর মধ্যে ভাইরাসে ৫ একর জমির আলু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ৩ একর জমির আলু বিক্রি করলেও বাকী ২ একরের আলু উত্তেলন করা সম্ভব হয়নি। তিন দিনের টানা বৃষ্টিতে ১ একর আলু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যা টাকার অংকে প্রায় ২ লাখ টাকা। চর আনন্দ গ্রামের চাষি সিরাজ ও রহিম বলেন, এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে আলু আবাদ করেছি, কিছু জমির আলু বাজারে বিক্রি করলেও বৃষ্টিতে খেতের অনেক আলু ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যায়।
‘‘ক্ষতিগ্রস্ত তরমুজ চাষীরা বলেছেন, গত বছর তরমুজের বাম্পার ফলন হওয়ায় এ বছর আরো বেশি জমিতে তরমুজের আবাদ করা হয়েছে। কিন্তু ফলন তোলার আগেই শীলাবৃষ্টিতে তরমুজ খেতে বিপর্যয় নেমে এসেছে। ‘‘অনেকেই এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে চরম সংকটের মধ্যে পড়েছেন’’। কেউ কেউ খেত পরিচর্যা করে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন, তবে টানা ৩দিনের বৃষ্টিতে বেশিরভাগ চাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এ ব্যাপারে ভোলা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক প্রশান্ত কুমার সাহা তিনি জানান, ভোলায় এ বছর টানা বৃষ্টিতে রবি শস্যের যে পরিমান ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে তার একটি তালিকার প্রস্তুতি চলছে । এবং ইতিমরধ্য এই তালিকা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট পাঠিয়ে ক্ষতিপূরণ চাওয়া হয়েছে। সেখান থেকে ক্ষতিপূরণ পেলে তা ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের মাঝে বিতরণ করা হবে। এছাড়া যে সমস্ত কৃষকদের রবি শস্য আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাদেরকে সৃষ্ট সমস্যা থেকে পরিত্রানের জন্য পরামর্ দেয়া হচ্ছে।