আবার উত্তপ্ত হচ্ছে রামপাল ইস্যু ৬ হাজার লোকের মৃত্যুর কারন হবে

0
1542

রামপালে প্রস্তাবিত ১৩২০ মেগাওয়াট মৈত্রি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে ফের উত্তপ্ত হচ্ছে দেশ। সম্প্রতি খুলনায় কয়েক হাজার লোকের সমাবেশ ও মিছিল হয়ে গেল বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবন ধ্বংসকারী এই বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মানের বিরুদ্ধে। অন্দোলনকারীদের বক্তব্য হচ্ছে তারা জান দেবে তবে সুন্দরবন ধ্বংস হতে দিবে না। কয়লাভিত্তিক এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে সুন্দরবন এলাকার প্রায় দেড় লাখ লোকের জীবন ও জীবিকা নষ্ট হবে বলে বিশিষ্টদের অভিমত। তাছাড়া সুন্দরবনের প্রাণী বাঘ থেকে শুরু করে নিকটস্ত নদীগুলোর মাছ ও জলজ প্রাণীর অবাসস্থলের মারাত্মক ক্ষতি হবে বলে পরিবেশবিদগন মত প্রকাশ করেন। এদিকে আন্তর্জাতিক পরিবেশবাদী সংগঠন গ্রিন পিসের কয়লা ও বায়ুদূষন বিশেষজ্ঞ মিঃ লরি মাইলিভিরতা বলেছেন, রামপালে কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বাংলাদেশের বায়ুদূষনকারী উৎসের মধ্যে বৃহত্তর একক উৎস হবে। তিনি বলেন, এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের নির্গমন স্ট্রোক, ফুসফুসের ক্যান্সার, বয়ষ্কদের হৃদযন্ত্রের ও শ্বাসতন্ত্রের রোগ এবং শিশুদের শ্বাস-প্রশ্বাসের উপসর্গের ঝুঁকি অনেক গুণ বাড়িয়ে দেবে। এমনকি বাংলাদেশের বর্তমান বায়ুদূষন মাত্রা যদি শুন্য হয়, কেন্দ্রটি একাই ছয় হাজার লোকের অকাল মৃত্যুর এবং চব্বিশ হাজার শিশুর নিন্ম জন্ম ওজনের কারন হবে। লরি মাইলিভিরতা আরও জানান বিদ্যুৎকেন্দ্রের উদগিরন সুন্দরবন ইকোসিস্টেমসহ সমগ্র দক্ষিন-পশ্চিম বাংলাদেশের এবং খুলনা, আশোকনগড়, কল্যানগড়, সাতক্ষিরা, বেগমগঞ্জ, বশিরহাট, নরসিংদি, নোয়াখালী, বাসীপুর ও কুমিল্ল অঞ্চলের ওপরের বাতাসে বিষাক্ত ধুলিকণার মাত্রা বা পরিমান অধিকতর খারাপ করে দেবে। রামপাল প্লান্ট থেকে অবক্ষেপিত পারদ বিদ্যুৎকেন্দ্রের চারপাশে প্রায় ৭০ বর্গকিলোমিটার এলাকার মাছকে খাওয়ার অযোগ্য করার জন্য যথেষ্ট হবে। বৈজ্ঞানিক তথ্য দিয়ে দেখা গেছে রামপাল প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে এর বিষাক্ততা সাগর-নদী ও মাটির সাথে মিশে গিয়ে বাংলাদেশের বিশাল অঞ্চলে এর প্রভাব পড়বে। এতে মাছ, শাকসবজিসহ কৃষি জমিতেও বিষাক্ত রাসায়নিক ছড়িয়ে পড়বে। এর কুফলে প্রতিবন্ধী শিশু জন্মানোর আশংকা রয়েছে। সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটির আহবায়ক অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল বলেন, কয়লাভিত্তি এ প্রকল্পের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে বারবার বিজ্ঞানভিত্তিক তথ্য দিয়ে এলেও সরকার অসত্য তথ্য দিয়ে এ রকম একটি সম্ভাব্য ক্ষতিকর প্রকল্প বাস্তবায়নে এগিয়ে যাচ্ছে। তাই ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে রক্ষার স্বার্থে ও জনগনের স্বার্থ ও মতামতকে বিবেচনায় নিয়ে সুন্দরবন বিনাশী রামপাল প্রকল্প বাতিল করার জোর দাবির বিষয়টিকে সরকারের বিবেচনায় নিতে হবে।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

11 − two =