দুর্নীতির মামলা ক্যান্সারের মতো, এর শেষ নেই’

0
622

নিজস্ব প্রতিবেদক : দুর্নীতির মামলাকে ক্যান্সারের সঙ্গে তুলনা করে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেছেন, ‘দুর্নীতির মামলা হচ্ছে ক্যান্সারের মতো। এর শেষ নেই। দুর্নীতির মামলার কারণে নিজের জীবন, সম্পত্তি, একটি পরিবার, একটি বংশ ধ্বংস হয়ে যায়, পথে বসিয়ে দেয়।’

বরিশাল জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে ‘দুর্নীতিমুক্ত সরকারি সেবা, দুর্নীতির অভিযোগের প্রকৃতি’ বিষয়ক মাঠ পর্যায়ের বিভাগীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনাসভায় তিনি এ সব কথা বলেছেন।

দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেছেন, ‘দুদক চায় সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা আইন-কানুন, বিধি-বিধান, নিজেদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করুক। তাহলে অভিযোগ উঠবে না, মামলা হবে না।’

বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার মো. শহীদুজ্জামানের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন পুলিশ কমিশনার এস এম রুহুল আমীন, পুলিশের ডিআইজি শেখ মারুফ হাসান, দুদকের বিভাগীয় পরিচালক মো. আক্তারুজ্জামান, সড়ক ও জনপথ বিভাগ বরিশাল জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. আশরাফুল আলম, পানি উন্নয়ন বোর্ড বরিশাল সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. রমজান আলী এবং জেলা প্রশাসক ড. গাজী মো. সাইফুজ্জামান। বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের বিভাগীয় এবং জেলা পর্যায়ের কর্মকর্তারা সভায় উপস্থিত ছিলেন।

দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘দুদকের বিরুদ্ধেও অভিযোগ পাই। দুদকের লোকজন ঘুষ খেয়ে অন্যায়ভাবে মামলায় ফাঁসিয়ে দেন, ভয় দেখান, দুর্ব্যবহার করেন, ডেকে নিয়ে অহেতুক ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসিয়ে রাখেন। আমরা কোনো কিছুই লুকাই না। এখন আর কোনো কিছু লুকানোর সময় নেই। এখন জেগে ওঠার সময়।’

তিনি বলেন, দুদক মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে কাজ করতে চায়। দুর্নীতির উৎসগুলো বন্ধ করতে চায়। দুদক দুনীতি দমনের চেয়ে প্রতিরোধে বেশি মনযোগী হতে চায়। যাতে যারা দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েছেন, তারা যেন সরকারি আইনকানুন ও নিয়ম নীতির মধ্যে ফিরে আসেন।

দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ইতিমধ্যে দুদক পাঁচ শতাধিক লোককে আটক করেছে। রাঘব বোয়ালদের ধরা এত সহজ নয়। বড় মাছ ধরতে জালও বড় করে পেতে রাখতে হয়। ছোট গাছ যত সহজে তুলতে পারবেন, তত সহজে বড় গাছ তুলতে পারবেন না।

তিনি বলেন, ‘আমরা শুধু ‘হ্যাঁ’ বলতে শিখেছি। এ জন্যই জনগণ আমলাদের পছন্দ করেন না। আমরা সরকারি কর্মকর্তারা কখনো কি জনগণকে স্যার বলেছি? কিন্তু বিদেশে দেখবেন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা বাস চালককে স্যার বলে সম্বোধন করেন। তাদের ভেতর জনগণকে সম্মান করার বোধ থাকার ফলে তাদের দেশ এত উন্নত।’

‘জনগণকে সম্মান দিলে তারা আপনাদের প্রটেকশন দেবে। নতুবা বিপদে পড়লে কেউ আপনাদের দেখবে না। ২২ জন পুলিশ দিয়ে আপনার প্রটেকশন পাওয়া যাবে না।’

তিনি আরো বলেন, ‘বাংলাদেশ দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হবে, আর আগামী প্রজন্ম আমাদের ধিক্কার দেবে এটা হতে দেওয়া যায় না। তাই আমরা একটি ডিজিটাল সিস্টেমের মধ্য দিয়ে দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছি।’

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

2 × one =