চট্টগ্রামের লোহাগাড়া থানার ওসিসহ চারজনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগে মামলা করেন মোহাম্মদ হারুন। এখন সেই মামলা তার ও পরিবারের জন্য কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। ওই মামলা প্রত্যাহারে চাপের পাশাপাশি দেওয়া হচ্ছে ক্রসফায়ারের হুমকি। ফলে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে হারুনের গোটা পরিবার। গতকাল শনিবার দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ক্র্যাব) কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন হারুনের ভাই আনোয়ার হোসেন। এ সময় বাদী মোহাম্মদ হারুনসহ পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
লিখিত বক্তব্যে আনোয়ার হোসেন বলেন, গত ১২ মে আধুনগরের সর্দারনীপাড়ায় আমাদের বাড়ি গিয়ে পুলিশ হারুনের সন্ধান চায়। পরে আমি ও হারুন বাড়ি ফিরলে আমাদের থানায় নিয়ে মারধর করা হয়। আমাদের ছাড়াতে ভাবী থানায় গেলে তাকেও অপমান করা হয়। ওদিন রাতে এসআই সোলায়মানসহ ১০/১২জন পুলিশ বাড়িতে গিয়ে ভাবীকে মারধরসহ ধর্ষণ করার চেষ্টা করে। গত ২৫ মে চট্টগ্রাম নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২-এ তার বড় ভাইয়ের স্ত্রী বাদী হয়ে লোহাগাড়া থানার ওসি মো. শাহজাহানসহ চারজনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ চেষ্টার মামলা করেন। মামলার অন্য আসামিরা হলেন, ওই থানার এসআই সোলায়মান, এএসআই ফখরুল ইসলাম এবং পুলিশের সোর্স জসীম উদ্দিন। পরে ভিকটিমের স্বামী মো. হারুন ও দেবর আনোয়ার হোসেনসহ পরিবারের সদস্যদের ক্রসফায়ারের হুমকিসহ নানা ভয় দেখানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
আনোয়ার হোসেন বলেন, ২০১৪ সালে ১৪ এপ্রিল চাঁদার দাবিতে এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী তার বোনের আধুনগরের সর্দারনীপাড়ার বাড়িতে গিয়ে মারধর করে। এ ঘটনায় ভাই হারুন লোহাগাড়া থানার ওসি মো. শাহজাহানকে সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানান। কিন্তু ওসি সন্ত্রাসীদের পক্ষ নিয়ে হারুনকে থানা থেকে বেরিয়ে যেতে বলেন। ওসির এ নির্দেশের প্রতিবাদ করলে ওই বছরের ৩০ মে এসআই সোলায়মান থানার ভেতরেই হারুনকে মারধর করেন। একই বছরের ৩ জুন হারুনকে পুনরায় হুমকি দেন ওসি শাহজাহান ও এসআই সোলায়মান। পরে নিরুপায় হয়ে ওই দিনই চট্টগ্রাম পুলিশ সুপার বরাবার অভিযোগ করেন মো. হারুন। পরে ২০ ও ২১ জুন ওসি এবং এসআই সোলায়মানের বিরুদ্ধে ডিআইজি ও পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন। পরিবারটির সদস্যরা ন্যায়বিচারের আশায় প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। তারা এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।