কিশোরগঞ্জ থানার ওসি বজলুুর রশিদের বিরুদ্ধে আটক বানিজ্যসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ

0
1514

ঢাকা থেকে ফিরে মোজাহারুল ইসলাম ও জাকির হোসেন সুজন নীলফামারী হতে॥
মাদক সেবন  ও জুয়া  খেলার নাম করে সাধারন মানুষকে থানায় ধরে এনে অর্থ আদায়ের ব্যাপক অভিযোগ উঠেছে নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্র্মকর্র্তা বজলুর রশিদের বিরুদ্ধে। এছাড়াও কিশোরগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আবু নছর মোহাম্মদ রহুল ইসলাম ও কিশোরগঞ্জ সদর ইউপি চেয়ারম্যান আনিছুল ইসলাম আনিছের  সাথে থানায় অসৌজন্যমুলক ব্যাবহার করার অভিযোগে নীলফামারী ৪ আসনের সংসদ সদস্য  রংপুর বিভাগীয় কমিশনার ,নীলফামারী জেলা প্রশাসক, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান  ও পুলিশ সুপার বরাবর কিশোরগঞ্জ থানার ওসি বজলুর রশিদকে অপসারনের দাবীতে  লিখিত অভিযোগ করেছেন উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান সহ ইউপি চেয়ারম্যনরা।
পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ ও অনুসন্ধানে জানা গেছে, তৎকালীন দুর্র্নীতিবাজ ওসি মোস্তাফিজুর রহমান জলঢাকা থানায় বদলী হলে ওসি বজলুর রশিদ কিশোরগঞ্জ থানায় যোগদান করেন। থানায় যোদাদানের পর থেকে থেকে তিনি মাদক সেবন ও জুয়া খেলার নাম করে  এলাকার সাধারন মানুষকে ধরে থানায় এনে  তার নিযুক্ত দালারদের মাধ্যমে গ্রেফতার বানিজ্যসহ সাধারন মানুষকে বিভিন্নভাবে হয়রানী করে আসছেন।
গত ২৬ জুন পবিত্র ইদুল ফিতরের দিন  কিশোরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বজলুর রশীদ ঈদের ছুটিতে কর্মস্থলে থেকে তার নেতৃত্বে নিতাই ইউনিয়নের কাচারীর হাট আলিম মাদ্রাসার মাঠ হতে জুয়া খেলার সময় নয়া মিয়া (২৭) রফিকুল (৩০) সানারুল (৩২) গাউছুল (২০) সহ মোট ৫ জনকে ও এ এস আই মশিউর রহমানের নেতৃত্বে কিশোরগঞ্জ সদর ইউনিয়নের মুশা গরের পাড় থেকে এস.আই খাদেমুল করিমের নেতৃত্বে (৪০) সাহেদ (৩২) আলামিয়া (২০) কবিরুল ইসরাম (২০) ও ডাবলু (২০)সহ মোট ১০ জনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। অভিযোগ মতে, ওসি বজলুর রশিদ আটককৃতদের  (প্রত্যেকের)কাছ থেকে ৩০ হাজার করে টাকা দাবী করে। তাদের মধ্যে আটজন ওসি বজলুর রশিদের দাবীকৃত টাকা দিতে পারায় ওসি বজলুর রশিদ ঐ আটজনকে বাদ দিয়ে টাকা দিতে না পারা  আশরাফুল ও গাউছুল আজমকে জেল হাজতে প্রেরনের পায়তারা করে। এ খবর শুনতে পেয়ে উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আবু নছর মোহাম্মদ রুহুল ইসলাম ও কিশোরগঞ্জ সদর ইউপি চেয়ারম্যান আনিছুল ইসলাম আনিছ থানায় গিয়ে ওসি বজলুর রশিদের রুমে বসে তার অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রতিবাদ করলে ওসি বজলুর রশিদ জনপ্রতিনিধিদের সামনে ( পোশাক পরিহিত অবস্থায়) একটি বেনসন সিগারেট জ্বালিয়ে তাদের সাথে অসৌজন্যমুলক আচরন করে তার রুম থেকে জনপ্রতিনিধিদের বের হয়ে যেতে বলেন। পরে আটককৃতদের নামে কিশোরগঞ্জ থানায় জিডি করে  ১৫১ ধারায় নীলফামারী জেল হাজতে প্রেরন করা হয়। জিডি নম্বর (১২০৭ ও ১২০৮) জিডিতে উল্লেখ করা হয় আটককৃতরা যে কোন সময় অপরাধ সংগঠিত করতে পারে। এবং তাদের কারনে এলাকায় মটর সাইকেল চুরি ও গরু চুরি বৃদ্ধি পেয়েছে।
সম্প্রতি কিশোরগঞ্জ হিসাব রক্ষন অফিসের অডিটর লাভলু মিয়াকে তার নিজ বাসা থেকে আটক করে থানায় নিয়ে আসেন ওসি বজলুর রশিদ। লাভলু মিয়া কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, আমি অফিস থেকে বাসায় গিয়ে রাতের খাবার খাওয়ার জন্য রেডি হয়েছি। ওসি বজলুর রশিদ হুট করে আমার বাসায় ঢুকে আমাকে বলে যে তোমার কাছে ইয়াবা আছে। কোন কিছু বুজে উঠার আগেই সে আমাকে থানায় নিয়ে আসে। থানায় এনে আমাকে সারারাত থানায় আটকে রেখে আমার কাছে ৮৪ হাজার টাকা নিয়ে ফজরের সময় ছেড়ে দেয়।
কিশোরগঞ্জ থানার ওসি বজলুর রশিদের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ দেয়া হয়েছে তা মিথ্যা বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। তিনি আরো বলেন আমি স্পটে কাউকে আটক করে ছেড়ে দিয়েছি এরকম অভিযোগ থাকলে বলেন।
উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আবু নছর মোহাম্মদ রুহুল ইসলাম ও কিশোরগঞ্জ সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আনিছুল ইসলাম আনিছ বলেন, ওসি বজলুর রশিদ পবিত্র ঈদের দিন সাধারন মানুষের ঈদের আনন্দ মাটি করে  বিভিন্ন এলাকা থেকে যাদের আটক করেছিল। তাদের মধ্যে অসহায় গরীব নিরপরাধ সাধারন মানুষ ও মেধাবী ছাত্র ছিল। তাদের মধ্যে আট জনকে টাকা নিয়ে ছেড়ে দিয়ে আশরাফুল ও গাউছুল নামে  দুইজনকে জেল হাজতে প্রেরনের পায়তারা করে শুনতে পেয়ে ওসি বজলুর রশিদের রুমে গিয়ে তার অন্যায় কর্মকান্ডের প্রতিবাদ করলে সে আমাদের সামনে বেনসন সিগারেট জ্বালিয়ে আমাদের সাথে অসৌন্যমুলক আচরন করে।  বিষয়টি আমরা তাৎক্ষনিক নীলফামারী ৪ আসনের সংসদ সদস্যকে অবহিত করে পরবর্তীতে পুলিশ সুপার সহ সংশ্লিষ্ঠ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিতভাবে জানিয়েছি।
রংপুর বিভাগের ডিআইজিপি জাকির হোসেন খাঁন বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যাবস্থা নেয়া হবে।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

two × three =