মাজহারুল ইসলাম,রৌমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধিঃ
কুড়িগ্রামের রৌমারীর দাতভাঙ্গা স্কুল এন্ড কলেজ এর অধ্যক্ষর কান্ড। স্কুল শাখার সহকারি শিক্ষক কে খুনের চেষ্টা করার অভিযোগ উঠেছে অধ্যক্ষকের বিরুদ্ধে। রোববার (২০ আগষ্ট) উপজেলার দাঁতভাঙ্গা স্কুল এন্ড কলেজ লাইব্রেরিতে এই ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে। অধ্যক্ষ বদিউজ্জামান তার কার্যালয়ে স্কুল শাখার শিক্ষক আব্দুল খালেক কে বেতন কে কেন্দ্র করে খুন করা চেষ্টা করে।
স্থানীয় ও স্কুল ও কলেজ সূত্রে জানাগেছে, চলতি মাসের বকেয়া বেতন উত্তোলোনর জন্য বেতন শিট তৈরি করা জন্য স্কুল শাখার অফিস সহকারি মনিনুল ইসলাম ও কলেজ শাখার অফিস সহকারি মামুন অর রশিদ কে দায়িত্ব প্রদান করেন। পরে স্কুল ও কলেজ শাখার বেতন শিট সম্পন্ন করে অধ্যক্ষ নিকট প্রেরণ করে। কিন্তু কলেজ শাখার বেতন শিটে ভুল থাকায় ঢাকা শিক্ষামন্ত্রনালয় পাঠিয়ে দেয়।
এমতবস্থায় স্কুল শাখার বেতন উত্তোলন করার জন্য বারবার চাপ প্রযোগ করে ঐ প্রতিষ্ঠানের স্কুল শাখার শিক্ষকরা। গত বুধবার (৯ আগষ্ট) বেতন উত্তোলন করার কথা থাকলেও কেন বেতন শিট আজও সম্পন্ন হয়নি। তা জানতে গতকাল রোববার (২০আগষ্ট) স্কুল শাখার সহকারি শিক্ষক আব্দুল খালেক অফিস কক্ষে গিয়ে অফিস সহকারি মামুন কে এই কথা জিজ্ঞাসা করলে অফিস সহকারি মামুন বলে আমাকে বলে কোন লাভ নেই। পরে অফিস সহকারি মামুন প্রশ্নের উত্তর দিয়ে বলে অধ্যক্ষ তার কক্ষে আলমারিতে তালা দিয়ে রাখছে।
অপর দিকে প্রিন্সিপাল (অধ্যক্ষ) স্কুল ও কলেজে এসে তার কার্যালয়ে বসে তার ব্যাক্তিগত কাজ করার ফাকে কলেজ শাখার মামুন অধ্যক্ষ কে বলেন স্যার আপনি বেতন শিটটি আপনার কাছে আছে। অথচ আমার সঙ্গে স্যাররা বিভিন্ন কথা বলছেন। তখন প্রশ্নের জবাবে যে শিক্ষক তোমাকে অন্যধন্য কথা বলেছে তা নাম বল। তখন অফিস সহকারি মামুন বলেন স্কুল শাখার আব্দুল খালেক স্যার বেতন শিট সম্পর্কে বিভিন্ন কথা বলেছে। তাৎক্ষনিক ভাবে সকল শিক্ষক অধ্যক্ষের কার্যালয়ে আসার জন্য বলে ঐ প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ।
“পরে শিক্ষকদের মধ্যে আলোচনার একপর্যায়ে কথাকাটি হয় এরই মধ্যে অধ্যক্ষকের পাশে থাকা ধারালো অস্ত্র (খনতা) দিয়ে স্কুল শাখার সহকারি শিক্ষক আব্দুল খালেক কে আঘাত করার চেষ্টা করে। কিন্তু পাশে অত্র প্রতিষ্ঠানের থাকা শিক্ষকরা এগিয়ে গেলে তাদেরও অপমান করে অধ্যক্ষ বদিউজ্জামান।”
এ ব্যাপারে স্কুল শাখার সহকারি শিক্ষক আব্দুল খালেকের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি অভিযোগ করে জানান, আমি স্কুলে গেলে বেতন উত্তোলন’র বিষয় অফিস সহকারি মামুনের কাছে জানতে চাইলে মামুন বলে আমার কাছে বেতন শিট নেই।
আর এই ব্যাপারে আমাকে বলে কোন লাভ নেই বলে জানান অফিস সহকারি মামুন। পরে অধ্যক্ষ প্রতিষ্ঠানে ঢুকে আমাকে তার কার্যালয়ে ডেকে আমাকে বিভিন্নœ প্রশ্ন করতে থাকে এমন একপর্যায়ে আমাকে ধারালো অস্ত্র খনতা দিয়ে খুন করার চেষ্টা করে।
অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে স্কুল শাখার সহকারি শিক্ষক সহিদুর রহমান (বিএসসি) জানান, ঘটনাটির সত্যতা স্বীকার করেন।
এ প্রসঙ্গে দাঁতভাঙ্গা স্কুল ও কলেজের অধ্যক্ষ বদিউজ্জামান বলেন, “আমি যখন বিলে স্বাক্ষর করবো তখন তারা বেতন উত্তোলন করবে। কিন্তু আমি না স্বাক্ষর করলে তারা কিভাবে বেতন তুলবে। সব ইচ্ছা আমার হাতে। পরে এমন এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,আমার উপর খিপ্ত হওয়ায় তাকে খনতা দিয়ে মারার চেষ্টা করি। তিনি আরো জানা, আমার জান বাচাঁনোর জন্য আমি খনতা, দা, কুড়াল এবং ধারালো অস্ত্র (চাকু) এনে রেখেছি। তাতে কারো অভিযোগ থাকতে পারেন না। যদি কোন শিক্ষক আমার উপর রেগে কথা বলে তাহলে তাকে আমি ছাড়বো না।”
বিষয় উপর জানতে চাইলে দাঁতভাঙ্গা স্কুল ও কলেজ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ছামিউল ইসলাম জীবন বলেন, বিষয়টি নিয়ে বসা হবে।
এ প্রসঙ্গে রৌমারী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শাহালম পারভেস জানান, বিষয়টি উপর এখন পর্যন্ত কোন অভিযোগ পায়নি। লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ ব্যাপারে রৌমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাউজুল কবীর বলেন, বিষয়টি আপনার কাছে জানতে পারলাম। তবে খুনের অভিযোগ হোক আর না হোক তদন্ত করার জন্য মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বলা হবে।
এ বিষয় জানতে চাইলে রৌমারী থানা ইনর্চাজ (ওসি) জাহাঙ্গীর আলম জানান, এধরনের কোন অভিযোগ পায়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
হোম বিভাগ রংপুর বিভাগ দাঁতভাঙ্গা স্কুল এন্ড কলেজের প্রধানের কান্ড অধ্যক্ষ কতৃক সহকারি শিক্ষক কে খুন...