দুই শিশুকে সংবর্ধনা দেয়া হলো ট্রেন রক্ষা করায়

9
689

রাজশাহীর বাঘা উপজেলার আড়ানি স্টেশনে ভাঙা রেললাইনে দুর্ঘটনার হাত থেকে ট্রেনকে রক্ষাকারী দুই শিশুকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে। পাবনার ঈশ্বরদীর পাকশীতে আজ বুধবার পাকশী রেলওয়ে বিভাগীয় ব্যবস্থাপক (ডিআরএম) এ সংবর্ধনার আয়োজন করে।  শিশু দুটি হলো ঝিনা গ্রামের সুমন আলীর ছেলে শিহাবুর রহমান (৬) ও শহিদুল ইসলামের ছেলে লিটন

আলী (৭)। (ক্রেস্টে ভুলবশত টিটোন লেখা হয়েছে।) গত সোমবার সকালে রাজশাহীর বাঘা উপজেলার আড়ানি স্টেশনের অদূরে ঝিনা রেলগেট এলাকায় রেললাইন দিয়ে একটি ট্রেন চলে যাওয়ার পর বিকট শব্দ হয়। এ শব্দ শুনে লাইনের কাছে এগিয়ে যায় দুই শিশু। দেখতে পায় ট্রেন চলে যাওয়ার পরই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে লাইন। এমন সময় লাইন দিয়ে আরেকটি ট্রেন আসতে দেখে তারা গলায় থাকা মাফলার তুলে ধরে ওড়াতে থাকে। তাদের সংকেত পেয়ে ব্রেক চাপেন ট্রেনের চালক। এতে দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পায় ট্রেনটি। আজ দুপুর ১২টার দিকে আড়ানি থেকে ট্রেনে চেপে ঈশ্বরদী জংশন স্টেশনে এসে নামে এই দুই শিশু। সঙ্গে আড়ানি সহকারী স্টেশন মাস্টার মোস্তাফিজুর রহমান ও তাদের মা-বাবাও ছিলেন। এই দুই শিশুকে দেখতে এ সময় স্টেশনে প্রচুর মানুষ ভিড় করে। সেখান থেকে তাদের পাকশী বিভাগীয় কার্যালয়ের সামনে আনা হয়। এখানেও প্রচুর মানুষ তাদের দেখার জন্য ভিড় করে। পাকশী ডিআরএম কার্যালয়ের সামনে আয়োজন করা হয় সংবর্ধনার। সংবর্ধনার শুরুতে ডিআরএম অসীম কুমার তালুকদার দুই শিশুকে ফুলের মালা ও ফুলের তোড়া উপহার দেন। এরপর পাকশী রেলওয়ে বিভাগীয় কর্মকর্তারাও ফুল দিয়ে শিশু ও তাদের পরিবারকে অভ্যর্থনা জানান। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সাবেক পাকশী ইউপি চেয়ারম্যান হবিবুল ইসলাম ও ঠিকাদার আনোয়ারুল ইসলাম দুই শিশুকে দুই হাজার করে চার হাজার টাকা, মীর আখতার হোসেন লিমিটেড নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দুই শিশুকে নগদ ৫ হাজার টাকা এবং পাকশী রেলের পক্ষ থেকে দুই শিশুর প্রত্যেককে ১৩ হাজার করে মোট ২৬ হাজার টাকা দেওয়া হয়। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন অসীম কুমার তালুকদার, আড়ানি সহকারী স্টেশন মাস্টার মোস্তাফিজুর রহমান (নয়ন), প্রেসক্লাব সাধারণ সম্পাদক আব্দুল বাতেন, পাকশী সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান হবিবুল ইসলাম, পাকশী রেলওয়ে শ্রমিক লীগ সভাপতি ইকবাল হায়দার, শিশু শিহাবের মা রিতা খাতুন, লিটনের নানি শুকুর জাহান প্রমুখ। শিহাবের মা রিতা খাতুন বক্তব্যে জানান, ‘আমি ভাবতে পারিনি আমার ছেলি দ্যাশের জন্যি এতো সাহসের কাজ করবি। আপনেরা ত্যার জন্যে যে সুম্মান দেখালেন তা দ্যাখি আমি খুব খুশি হইছি।’

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

12 + four =