আলোচিত সাইবার হামলা ২০১৭ সালের

0
771

চলতি বছর সাইবার অপরাধীদের হাত থেকে কোনো কিছুই নিরাপদ ছিল না। বিভিন্ন ব্যবসা ও আর্থিক খাতের প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি সরকারি-বেসরকারি অফিস, ইন্টারনেট কানেক্টেড গাড়ি, পাওয়ার স্টেশন, হাসপাতাল, কুরিয়ার ও পোস্টাল সার্ভিসের কম্পিউটার নেটওয়ার্ক রক্ষা

পায়নি সাইবার হামলা থেকে। বেশকিছু ক্ষেত্রে আগাম ব্যবস্থা নিয়েও সাইবার অপরাধীদের প্রতিহত করা যায়নি। অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে এ বছর তথ্য হাতিয়ে নেয়ার ঘটনা বেড়েছে। চলতি বছরের আলোচিত কয়েকটি সাইবার হামলা নিয়ে আয়োজনের আজ প্রথম পর্ব—

ইকুইফ্যাক্স ডাটা ব্রিচ

চলতি বছরের ২৯ জুলাই সাইবার হামলার শিকার হয় ক্রেডিট রিপোর্টিং এজেন্সি ইকুইফ্যাক্স। এ ঘটনায় প্রতিষ্ঠানটির ৮০ কোটি ভোক্তা এবং ৮ কোটি ৮০ লাখ গ্রাহক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের তথ্য হাতিয়ে নেয় সাইবার অপরাধীরা। জানা যায়, প্রতিষ্ঠানটির অ্যাপ্লিকেশন ফ্রেমওয়ার্কের নিরাপত্তা ত্রুটি কাজে লাগিয়ে সাইবার হামলা চালানো হয়েছিল। এ ঘটনার ফরেনসিক তদন্তভার দেয়া হয়েছিল ম্যান্ডিঅ্যান্ট নামের একটি প্রতিষ্ঠানকে। ইকুইফ্যাক্সের ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের মোট জনসংখ্যার ৪৫ শতাংশ আক্রান্ত হয়েছিল।

উবার ডাটা ব্রিচ

২০১৬ সালের অক্টোবরে উবারের নেটওয়ার্ক হ্যাক করে ৫ কোটি ৭০ লাখ গ্রাহকের তথ্য হাতিয়ে নেয় সাইবার অপরাধীরা। এ ঘটনা প্রকাশ পায় গত নভেম্বরে। বেহাত হওয়া এসব তথ্যের মধ্যে রয়েছে গ্রাহকের নাম, ই-মেইল অ্যাড্রেস, ফোন নম্বর এবং ছয় লাখ উবার চালকের লাইসেন্সের তথ্য। শুধু তাই নয়, হ্যাকড হওয়ার ঘটনা ধামাচাপা দেয়া এবং হাতিয়ে নেয়া গ্রাহক তথ্য মুছে ফেলতে হ্যাকারদের ১ লাখ ডলার পরিশোধ করেছে উবার।

ওয়ানাক্রাই র‌্যানসমওয়্যার

চলতি বছরের মে মাসে বিশ্বব্যাপী একযোগে ওয়ানাক্রাই র‌্যানসমওয়্যার ছড়িয়ে নজিরবিহীন সাইবার হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় বিশ্বের প্রায় ১৫০টি দেশের তিন লাখের বেশি কম্পিউটার সিস্টেম আক্রান্ত হয়। বিভিন্ন দেশের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, সরকারি কার্যালয়, জরুরি স্বাস্থ্যসেবা ও কুরিয়ার কোম্পানিও এ হামলা থেকে রেহাই পায়নি। বিশেষ করে যুক্তরাজ্যের একাধিক হাসপাতাল এ ম্যালওয়্যারে আক্রান্ত হওয়ায় বিপর্যয়ের মুখে পড়ে দেশটির স্বাস্থ্যসেবা খাত।

এনএসএর সাইবার অস্ত্র চুরি

চলতি বছরের মে মাসে একযোগে বিশ্বব্যাপী সাইবার হামলা চালাতে যে হ্যাকিং টুল বা সাইবার অস্ত্র ব্যবহার করা হয়, তা যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল সিকিউরিটি এজেন্সির (এনএসএ) কাছ থেকে হাতিয়ে নেয়া হয়েছিল। অর্থাত্ সাইবার হামলা চালাতে যেকোনো দেশের সরকারি সাইবার নিরাপত্তা টিমের চেয়ে এখন শক্তিশালী হয়ে উঠেছে সাইবার অপরাধীরা। বিশ্লেষকদের দাবি, নজরদারির কার্যক্রম পরিচালনা করতে একমাত্র এনএসএকেই ওয়ানাক্রাইয়ের মতো অত্যাধুনিক সাইবার টুল ব্যবহার করতে দেখা যায়।

ইয়াহু হ্যাকড

২০১৩ ও ১৪ সালে বড় দুটি সাইবার হামলার শিকার হয়েছে ইন্টারনেট কোম্পানি ইয়াহু, যা এ বছর প্রকাশ পায়। চলতি বছরের জুনে ইয়াহু অধিগ্রহণ করে ভেরাইজন। এর পরই প্রায় পাঁচ বছর আগে ইয়াহু হ্যাকড হয়েছিল বলে তথ্য প্রকাশ করা হয়। ইয়াহুর পক্ষ থেকে শুরুতে শতকোটি গ্রাহকের তথ্য বেহাত হওয়ার কথা বলা হলেও পরবর্তীতে নিশ্চিত করা হয় পরপর দুই সাইবার হামলার ঘটনায় প্রতিষ্ঠানটির সব গ্রাহকেরই বা ৩০০ কোটি অ্যাকাউন্টের তথ্য হাতিয়ে নিয়েছিল সাইবার অপরাধীরা।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

twelve + nine =