যৌতুক একটি জগন্য অপরাধঃ লেখক ঃ এস ইবাদুল ইসলাম

0
599

আমাদের সমাজে যৌতুক একটি মারাতœক সামাজিক ব্যধিতে পরিনত হয়েছে। সমাজে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বিনাসী এ প্রথা পরিবার বিধ্বংসী বোমা সদৃশ্য। ঘোষিত বা অঘোষিত শর্ত হিসাবে মেয়ে পক্ষের নিকট ছেলে পক্ষ যৌতুক আদায়ের এক নির্লজ্জ প্রতিযোগিতা চলছে। ছেলেরা টাকার বিনিময়ে আতœ সম্মান বির্সজন দিয়ে বিয়ের বাজারে কুরবানীর পশুর দামে বিক্রি হচ্ছে। আর এই কারনেই জামাই রুপি লোভী নরপশুদের আবদার পুরন করতে ব্যর্থ হওয়ার অনেক বিবাহযোগ্য মেয়ের বিয়ে হচ্ছেনা।যৌতুক লোভী স্বামীর নির্যাতন মুখ বুজে সহ্য করতে হচ্ছে কত নারীকে তার কোন ইয়ত্তা নেই। অনেক গৃহবধুকে বির্সজন দিতে হচ্ছে প্রান। যদিও বর্তমানে শহর গুলোতে চলছে বিয়েতে কে কত অনুষ্ঠান করতে পারে তার প্রতিযোগিতায় নেমেছে।

 

যেমন ঃ কনে দেখা, বর দেখা, দোয়া মাহফিল, মেহেদী সন্ধ্যা, হলুদ সন্ধ্যা, ব্রাইডল সওয়ার, আকদ, ওলিমা, লাস্ট ভার্জিনিটি ডে, কনে বিদায়, বধুবরন,রিসিপশন, কনে নাইওর ইত্যাদি অনুষ্ঠানে সমৃদ্ধ থাকে একটি বিয়ে।
এক্ষেত্রে যাদের অঢেল টাকা পয়সা আছে, যাদের টাকা খরচের জায়গা নাই , তাই এসকল জায়গায় টাকা খরচ করে। তা না হয় তারা করতেই পারে! কিন্তু সমস্যাটা হলো মধ্যবিত্তদের ক্ষেত্রে এরকম বিয়ের সম্মুক্ষিন যদি কোন মধ্যবিত্ত পরিবারকে হতে হয় সেক্ষেত্রে সেই পরিবারটিতে আনন্দ বলে কিছু থাকেনা। মেয়ের মুখের দিকে তাকিয়ে বা কোন না কোন ভাবে একটি অনুষ্ঠান ধার দেনা করে করতে হয়। যার পরিবর্তি অবস্থা আমরা কেউকি জেনে দেখি, দেখি না। ঐ পরিবারটিতে সুখ শান্তি বলে কিছুই থাকেনা। ঋনগ্রস্থ পরিবারটি ধুকে ধুকে দিন অতিবাহিত করে। একটি মেয়েকে লেখা পড়া শিখিয়ে এভাবে বিদায় করে নিঃস্ব হয়ে যায়, অনেক মধ্যবিত্ত পরিবার। এখানেই ক্ষান্ত নয় যে মেয়েটি, স্বামীর ঘরে যেয়ে পরবর্র্তিতে বিভিন্ন মানসিক শারিরীক ভাবে নির্যাতিত হতে হয়। অঘোষিত যৌতুকের আবদার পুরন করতে না পেরে।
যদিও ইসলামের যৌতুক, পন, ডিমান্ড ইত্যাদি মুসলিম বিয়েতে হারাম ও অবৈধ। প্রতিদিন খবরে চোখ রাখলে দেখা যায় যৌতুকের কারনে গৃহবধুকে পুড়িয়ে দিয়েছে। মেয়ের গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলিয়ে রেখেছে অথবা চারিত্রিক অপবাদ দিয়ে বিবাহ বিচ্ছেদ করে। কেউবা অন্য মেয়ের টাকার লোভে অনৈতিক কাজে জরিয়ে যায়। আর বিয়ে করা মেয়েটি বিছানায় শুয়ে কেঁদে বালিশ ভিজিয়ে রাত কাটায়। এ যদি হয় বিয়ে নামের সুখ, সে সুখ নাইবা হলো। বিয়ে হয়না এমন অপবাদ নিয়ে থাকা অনেক ভালো।
তাই মেয়েদের অভিবাবক ও মেয়েদের বলছি, বিয়ে নয় মেয়েকে স্বাবলম্বী করুন যৌতুক দাবীর বিয়েকে না বলুন। আর সচেতনতা বাড়াতে যৌতুক বিরোধী প্রচারনা জোরদার করতে হবে। মসজিদে ও অন্যান্য স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে সচেতনতা বাড়াতে যৌতুক এর কুফল আলোচনা ও কাউন্সিলিং এর ব্যবস্থা করা দরকার। ছেলেদেরা যৌতুক কে না বলুন। নিজেকে সমাজের দায়িত্বশীল ব্যক্তিতে পরিনত করুন আর সরকারী ভাবে সমাজ থেকে বেকারত্ব দুর করার পদক্ষেপ নিতে হবে। আরো বেশী করে কর্ম সংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে। পরিবার গুলোকে ও এ ধরনের মনোভাব দুর করতে হবে। পরের সম্মদের উপর নির্ভরশীল না হয়ে আত্ম নির্ভরশীল হন। যৌতুকে পরিহার করুন। পরিশেষে, কোরান হাদিসের আলোকে জীবন যাপনে উদ্ভুদ্ধ হতে হবে। ছেলে মেয়েকেও ধর্মীয় অনুভুতির প্রতি গুরুত্ব দেওয়ার বিষয় অবহিত করতে হবে। প্রচলিত আইন অনুযায়ী দোষী ব্যক্তিকে আইনের আওতায় এনে বিচার করতে হবে। দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে যাতে করে অন্যরা সতর্ক হয়ে এহেন ঘৃন্য অপরাধ থেকে বিরত থাকে। যৌতুক কে না বলে।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

5 × 5 =