শিক্ষক লাঞ্চিতের জের ধরেসেনবাগে আওয়ামীলীগ নেতা শিহাব অবাঞ্চিত

0
427

এম.এ আউয়াল, সেনবাগ (নোয়াখালী) প্রতিনিধিঃ নোয়াখালীর সেনবাগের বিজবাগ এন.কে উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সহকারি শিক্ষকদেরকে লাঞ্চিতের প্রতিবাদে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও আওয়ামীলীগ নেতা শিহাব উদ্দিনকে অবাঞ্চিত ঘোষণা করেছে (২টি ইউনিয়ন) বিজবাগ ও

 

নবীপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দ। গত রবিবার দুপুরে বিজবাগ এন.কে উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বার্ষিক ফলাফল ঘোষনা ও সুধি সমাবেশে তাকে অবাঞ্চিত ঘোষনা করেন বিজবাগ ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ ইয়াকুব মামুন। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ হানিফের সভাপতিত্বে ও শিক্ষক শাহ আলমের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট সমাজ সেবক ও শিক্ষানুরাগী দিনমোহাম্মদ এম.এ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রসুলপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান বিজয় এম.এ। এতে বক্তব্য রাখেন উপজেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফয়েজুল ইসলাম সবুজ, নবীপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহাজাহান সাজু, ম্যানেজিং কমিটির সদস্য নিজাম উদ্দিন সাজু, ম্যানেজিং কমিটির সদস্য মনসুর আহাম্মদ প্রমুখ। সমাবেশে সেনবাগের দক্ষিণ জনপদের ঐতিহ্যবাহী বিজবাগ এন.কে উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি হিসেবে ২০১০ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ক্ষমতার অপব্যবহার করে পদটি আকড়ে রাখেন শিহাব। ম্যানেজিং কমিটির অভিভাবক সদস্য নিজাম উদ্দিন সাজু স্বাক্ষরিত ৩ পাতার একটি দুর্নিতির অভিযোগ উপস্থিত অভিভাবক ও গণমাধ্যম কর্মীদের সরবরাহ করেন। এতে তিনি উল্লেখ করেন ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রধান শিক্ষক মোঃ হানিফকে ৫ম দফায় সাসপেন্ড ও শোকজ, ২০ লাখ টাকা ঘুষ নিয়ে ৪জন শিক্ষক নিয়োগ, ঢাকায় বসে নিজেই ক্লাশ রুটিন প্রস্তুত করন, সরকারি বিধি বিধান উপেক্ষা করে বিদ্যালয়ে পাঠ্য বই না রেখে বাহিরের পুস্তক বিক্রেতাদের থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা ঘুষ গ্রহণ, শিক্ষক নিখিল চন্দ্র মজুমদারকে মারধর, বিদ্যালয়ের এস.এস.সি পরিক্ষায় ফেল করা ছাত্রদের অর্থের বিনিময়ে পুনরায় পরিক্ষার ফরম পুরণ করতে বাধ্য করা ও পরিক্ষায় নকল সরবরাহ, সন্ত্রাসী লালনপালন, ১৩ নম্বর শিক্ষক এস.এ.এম সাহাদাত হোসেনের কাছ থেকে ৬ লক্ষ টাকা ঘুষ নিয়ে সহকারি প্রধান শিক্ষক নিয়োগ, আড়াই হাজার ছাত্র-ছাত্রী ভবনে বাসার জায়গা নেই, অথচ কর্তৃপক্ষ ১টি রুমের কাজ শুরু করলে সভাপতি হিসেবে সে কেন্দ্রিয় আওয়ামীলীগ নেতা দাবি করে প্রায় ৩০ লক্ষ টাকা চাঁদাবাজির করেছেন মর্মে অভিযোগ ওঠে। সভাপতি শিহাব উদ্দিন ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিদ্যালয়ের পুরাতন আসবাবপত্র নামে মাত্র মুল্যে বিক্রয় করে অর্থ হাতিয়ে নেন। নির্বাচনী পরীক্ষায় ৩৮৬জন ছাত্র/ছাত্রী অংশ নিলেও তিনি ৪২৬জনের কাছ থেকে বিভিন্ন অংকের অর্থ গ্রহণ করেছেন। তার আমলে ৪২৬জন ছাত্রের মধ্যে মাত্র ৯০জন ছাত্র/ছাত্রী পাশ করেছেন। যার পাশের হার ২১% মাত্র। এছাড়া শিহাব উদ্দিন তার সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে বালিয়াকান্দি ডিগ্রী কলেজের সভাপতি না হতে পেরে শিক্ষক, অভিবাবক, ছাত্র/ছাত্রীদেরকে নানা সময়ে লাঞ্চিত সহ মারধর করার অভিযোগটি রবিবারের সমাবেশে ফুটে ওঠে। অনুষ্ঠানে প্রায় ২ হাজার ছাত্র/ছাত্রীর অভিভাবক তার বিরুদ্ধে নানা শ্লোগান দিতে থাকে। ইতিমধ্যে তার বিরুদ্ধে স্থানীয় সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মোরশেদ আলমসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে ক্ষমতার অপব্যবহার, অসদাচরন ও দূর্নীতির বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ও আওয়ামীলীগ নেতা নিজাম উদ্দিন সাজু। এ ঘটনায় পুরো দক্ষিণাঞ্চলে আওয়ামীলীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন সংগঠন শিহাব উদ্দিনের দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে অবস্থান নিয়েছে। এর আগে তার প্রতক্ষ মদদে সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে গোটা দক্ষিন অঞ্চলে ইয়াবা, গাজা, অস্ত্র, অপহরন, চাঁদাবাজীসহ নানা অপরাধ কার্যক্রম চালাতো। ২০১৫ সালের ১লা সেপ্টেম্বর তার সেকেন্ড ইন কমান্ড আবদুল করিম সোহেলকে দিয়ে নবীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সাবেক উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মোঃ বেলায়েত হোসেন সোহেলকে গুলিকরে হত্যার চেষ্টা চালায়। পরে জনতা একটি বিদেশী পিস্তল ও গুলিসহ তাকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ্দ করে।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

three + 2 =