বেগমগঞ্জের মূর্তিমান আতঙ্ক ভূমিদস্যু জাহাঙ্গীর বাহিনী

1
949

রাশেদ চৌধুরী, বেগমগঞ্জ থেকে ফিরে: বৃহত্তর নোয়াখালীর প্রধান বানিজ্যিক কেন্দ্র চৌমুহনীসহ বেগমগঞ্জ উপজেলায় বর্তমানে মূর্তিমান আতঙ্কের নাম জাহাঙ্গীর বাহিনী। এই বাহিনীর কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে চৌমুহনী শহরের মানুষ। এমতাবস্থায় চৌমুহনী শহরের শান্তিপ্রিয় ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসী দ্রুত জাহাঙ্গীর ও তার বাহিনীর সদস্যদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী করেছে।

 

সরেজমিন গিয়ে জানা যায়, চৌমুহনী পৌর করিমপুর গ্রামের তনু মিয়ার বাড়ির তনু মিয়ার পুত্র জাহাঙ্গীর আলম এলাকার কিছু বখাটে যুবককে সাথে নিয়ে একটি বাহিনী গঠন করে দীর্ঘদিন থেকে চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, চাঁদবাজি, দাঙ্গা-হাঙ্গামা, সরকারী সম্পত্তি দখলসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ড করে আসছে। তিনি নিজেকে বেগমগঞ্জ উপজেলা যুবলীগের একাংশের আহবায়ক দাবী করলেও এই কমিটি কি ভাবে হয়েছে তা কেউ বলতে পারছেননা। মূলক অপরাধমূলক কর্মকান্ড করে প্রশাসনের হাত থেকে বাঁচতেই তিনি দলের এই পদ ব্যবহার করে থাকেন বলে অভিযোগ করেছেন দলের সিনিয়র একাধিক নেতা।
এদিকে সম্প্রতি এই নেতা একাধিক বিতর্কিত কর্মকান্ডে ক্ষিব্দ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে জনমনে। তিনি দলের নাম বিক্রি করে নিজের আখের গোচাতে ব্যস্ত বলেও অভিযোগ উঠেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চৌমুহনীসহ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে সরকারী সম্পত্তি দখল করাই যুবলীগের কথিত এই নেতার বর্তমানে প্রধান নেশা ও পেশা হয়ে দাঁড়িয়েছে। গত শুক্রবার সেতুমন্ত্রী ও ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদকের উপস্থিতিতে চৌমুহনী শহরে রেলওয়ের সম্পত্তি দখলকে কেন্দ্র করে এলাকাবাসীর সাথে জাহাঙ্গীর বাহিনীর হামলা, ভাংচুর ও গোলগুলির ঘটনায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। এমন ঘটনায় বেগমগঞ্জে চরম ভাবে দলের ইমেজ সংকট দেখা দিয়েছে।
স্থানীয়রা জানায়, জাহাঙ্গীর বাহিনী রেলওয়ের ওই সম্পত্তি দখল করতে গিয়ে পাশে থাকা মসজিদের টয়লেট ও প্র¯্রাবখানা ভেঙ্গে ফেলার চেষ্টা করে। মুসল্লি ও ব্যবসায়ীরা বাঁধা দিলে সন্ত্রাসীরা তাদের উপর হামলা চালায়। এ সময় পুলিশ বাঁধা দিতে গেলে সন্ত্রাসীরা পুলিশের উপরও হামলা চালায়। এতে এলাকাবাসী ও পুলিশসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়। হামলাকারীরা ক্ষমতাসীন দলের ক্যাডার হওয়ায় মার খেয়েও পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে সাহস পাচ্ছেনা। শ
শুধু তাই নয়, কথিত যুবলীগ নেতা জাহাঙ্গীর ও তার ক্যাডার বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে বেগমগঞ্জের বড় পোলের পাশে টিএন্ডটির জায়গা দখল, চৌমুহনী পৌরসভার সামনে ম্মশান গেইটে সরকারী পুকুর দখল, জিলানী মসজিদের জায়গা দখল করে ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান স্থাপন ও ভাড়া দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। জাহাঙ্গীর ও তার বাহিনীর সদস্যরা উপজেলার বিভিন্ন গ্রামাঞ্চলেও মানুষের সম্পত্তি সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে ঝামেলা মিমাংশা করার কথা বলে মোটা অংকের টাকা বিনিময়ে একজনের সম্পত্তি অন্যজনকে দখল করে দেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে। তার এই সব অপকর্ম প্রকাশ্যে ও গোপনে তদন্ত করলে বেরিয়ে আসবে। এমতাবস্থায় বেগমগঞ্জ উপজেলাসহ চৌমুহনী শহরের মানুষ প্রশাসনের কাছে দ্রুত জাহাঙ্গীর ও বাহিনীর সদস্যদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার দাবী জানিয়েছে।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত জাহাঙ্গীর আলমের সাথে আলাপ করতে তাকে একাধিকবার কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

7 + 3 =