চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক জোরদার হওয়া নিয়ে ভারতকে উদ্বিগ্ন না হতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি জোর দিয়ে বলেছেন, বাংলাদেশের উন্নয়নের জন্যই বেইজিংয়ের সঙ্গে ঢাকার সম্পর্ক। এ ছাড়া অন্য কিছু নয়।
ভারতের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়া–পিটিআই এক প্রতিবেদনে এ কথা বলেছে। পত্রিকাটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনা বলেন যে তার সরকারের একমাত্র ভাবনা উন্নয়ন নিয়ে এবং বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধিতে সাহায্য করবে এমন যেকোন দেশের সঙ্গে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।
বাংলাদেশ সফররত ভারতীয় সাংবাদিকদের একটি প্রতিনিধি দল ২০ ফেব্রুয়ারি শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবনে সাক্ষাত করতে গেলে তিনি বলেন, যেকোন দেশ আমাদেরকে বিনিয়োগ ও সহযোগিতা দিতে চাইবে তাদের কাছ থেকেই আমরা তা নেব। আমরা দেশের উন্নয়ন চাই। আমাদেরকে জনগণকে নিয়ে ভাবতে হবে। তারাই হবে উন্নয়নের সুফলভোগী।’ তিনি বলেন, ভারত, চীন, জাপান, এমনকি মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোও বাংলাদেশের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘এ নিয়ে ভারতের উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই।’ তিনি বলেন, ‘বরং আমি বলবো যে বাংলাদেশসহ প্রতিবেশিদের সঙ্গে ভারতের সুসম্পর্ক বজায় থাকবে যেন এই অঞ্চলটি আরো উন্নত হতে পারে এবং আমরা যেন বিশ্বকে দেখাতে পারি যে আমরা সবাই এক সঙ্গে কাজ করছি।’
শেখ হাসিনা (৭০) বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ‘চমৎকার’ সম্পর্ক রয়েছে এবং দুই দেশ সীমান্ত ও সামুদ্রিক বিরোধ নিস্পত্তির ক্ষেত্রে উদাহরণ সৃষ্টি করেছে।
তিনি বলেন, ‘কোন সমস্যা থাকলে আমরা তা আলোচনার মাধ্যমে নিস্পত্তি করতে পারি, যেমনটা আমরা অতীতে করেছি। আমরা একটি শান্তিপূর্ণ দক্ষিণ এশিয়া গড়ে তুলতে চাই।’
তিনি বলেন যে তার ১৯৯৬–২০০১ মেয়াদের সরকারের আমলে গঙ্গা চুক্তি সই হয়েছে। দ্বিতীয় মেয়াদে সমুদ্র ও স্থল সীমান্ত বিরোধ নিস্পত্তি হয়েছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করে চলেছে চীন। প্রশিক্ষণ কার্যক্রম এবং সরঞ্জাম প্রযুক্তিতে সহযোগিতা আরো বিস্তৃত করছে।
এর আগে বাংলাদেশে ছয়টি রেল প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য স্বল্প–সুদে নয় বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ প্রদানের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে চীন। এর একটি লাইন হবে ভারতের সীমান্ত ঘেষে।
বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া মিয়ানমারের এক মিলিয়নের বেশি রোহিঙ্গাকে ফেরত পাঠাতে ভারতের সাহায্য কামনা করেন শেখ হাসিনা। তাদের দীর্ঘ উপস্থিতি বাংলাদেশের জন্য নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি করবে বলে আশংকা করা হচ্ছে। হাসিনা বলেন, ‘আমরা চাই মিয়ানমাকে তাদের বাস্তচ্যুত নাগরিকদের দ্রুত ফেরত নিতে ভারত চাপ দেবে।